শিল্পীদের পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি ১০ প্রস্তাবনা
Published: 19th, April 2025 GMT
সংস্কৃতি খাতে বাজেট বৃদ্ধি এবং এর কার্যকর ব্যবহারের জন্য নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনার মধ্য দিয়ে ১৮ এপ্রিল বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে ‘সংস্কৃতি খাতে বাজেট পর্যালোচনা ও প্রস্তাবনা’ শিরোনামে একটি সেমিনার হয়। ‘থিয়েটার আর্টিস্টস এসোসিয়েশন অব ঢাকা’ আয়োজিত এই সেমিনারে দেশের সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা অংশগ্রহণ করেন। এখানে ধারণাপত্র পাঠ করেন তৌফিকুল ইসলাম ইমন।
এতে বলা হয়, ‘বাজেট কেবল আর্থিক বিষয় নয়, বরং এটি রাষ্ট্রের দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন। সংস্কৃতিকে প্রগতিশীল জাতি গঠনের প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচনা করলে সংস্কৃতিখাতে জাতীয় বাজেটের ১ শতাংশ বরাদ্দ সময়োপযোগী ও যৌক্তিক দাবি। এ জন্য যেমন রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা প্রয়োজন, তেমনি সংস্কৃতি কর্মীদেরও সক্ষমতা অর্জন করতে হবে এবং দায়িত্ব নিতে হবে।’
এখানে দশটি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। যেমন, ডিজিটাল আর্কাইভ ও ভার্চুয়াল প্রদর্শনীর অবকাঠামো নির্মাণ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর আর্থিক সহায়তা, লোকসংস্কৃতি ও নৃ-গোষ্ঠী সংস্কৃতির গবেষণাগার ও প্রতিষ্ঠান গঠন, বাংলা একাডেমি, শিশু একাডেমি ও শিল্পকলা একাডেমির আধুনিকায়ন, দক্ষ জনবল নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন, সংস্কৃতিসেবীদের জন্য পেনশন সুবিধা চালু, বিদেশে সংস্কৃতি কেন্দ্র স্থাপন ও সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রম বাড়ানো, শিল্পী ও সংগঠনের অনুদান বাড়িয়ে কার্যকর বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ, সংস্কৃতিখাতকে রেভিনিউ বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এবং সরঞ্জাম রক্ষণাবেক্ষণ ও অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ।
সেমিনারের প্রথন অতিথির দায়িত্ব পালন করা বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও গবেষক আনু মোহাম্মদ তার বক্তব্যে বলেন, ‘যদি একজন শিল্পী স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের সুযোগ না পান, তাহলে সৃজনশীলতার জন্ম হয় না। শিল্প কেবল আনুগত্যের হাতিয়ার হয়ে পড়ে, যার কোনো গভীরতা থাকে না।’
দেশে প্রাক-বাজেট আলোচনায় কৃষক, শ্রমিক, সংস্কৃতিকর্মীদের অংশগ্রণ থাকা উচিত বলে মনে করে তিনি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ তিন শ্রেণিই সমাজের ভিত্তি। তাদের অভাব, তাদের বঞ্চনা এবং তাদের দাবিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু নীতিনির্ধারক পরিসরে তাদের কোনো জায়গা নেই।’
এরপর তিনি বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়ে সৃজনশীল সমাজ গঠনে লাইব্রেরি, খেলার মাঠ, নাটকের মঞ্চ এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য অবকাঠামো থাকা জরুরি। তিনি উল্লেখ করেন যে, শিল্পী ও শিক্ষকদের সম্মান না থাকার কারণে সৃজনশীলতা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
সুজিত মোস্তফা সংগীতশিল্পীদের মর্যাদা, সম্মানী এবং তাদের জন্য একটি জাতীয় গ্রেডিং সিস্টেম প্রণয়নের উপর জোর দেন। তিনি বিশেষভাবে বেতার ও টেলিভিশন শিল্পীদের সম্মানী বৃদ্ধির পাশাপাশি, প্রাতিষ্ঠানিক প্রণোদনা, প্রশিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি এবং জাতীয় বাজেটে সংস্কৃতি খাতে ন্যূনতম ৪% বরাদ্দ রাখার দাবি জানান। তার মতে, বাজেট বরাদ্দ সাংস্কৃতিক বিনিয়োগ হিসেবে জাতির সৃজনশীলতা ও আত্মপরিচয়ের ভিত্তি নির্মাণে সহায়ক হবে।
তারিক আনাম খান তার বক্তব্যে বলেন, ‘থিয়েটার খাতে বাজেট বৃদ্ধির প্রস্তাব শুধু অর্থের বিষয় নয়, এটি সাংস্কৃতিক পরিচয় এবং সমাজ গঠনে শিল্পের গুরুত্বকে প্রতিফলিত করে।’
অন্যদিকে মামুনুর রশিদ মঞ্চ নাটকের বাজেট ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কাঠামোগত সমস্যা নিয়ে সমালোচনা করেন। তিনি বাজেট ও নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং অংশগ্রহণমূলক ব্যবস্থা প্রস্তাব করেন, বিশেষভাবে নাট্যদল ও শিল্পীদের জন্য স্যালারি গ্রান্ট চালু করার কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘মঞ্চ নাটক শুধুমাত্র বিনোদন নয়, একটি শিক্ষামূলক মাধ্যম হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ এবং এর বিকাশের জন্য আরও কার্যকরী নীতির প্রয়োজন।’
সভাপতি আজাদ আবুল কালাম তার সমাপনী বক্তব্যে সেমিনারের লক্ষ্য হিসেবে সংস্কৃতির গুরুত্ব রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রায়ই বিভিন্ন দাবি তুলে ধরি, কিন্তু সেই দাবি সুনির্দিষ্টভাবে কোথায় পৌঁছাবে, কাকে লক্ষ্য করে বলছি, তা নির্ধারণ করি না। এই সেমিনার সুনির্দিষ্ট দাবি তৈরি করতে সহায়তা করেছে, যাতে বাজেটের বরাদ্দ সঠিকভাবে ব্যবহৃত হয়।’
বাজেট বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাবিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়েও সেমিনারে আলোচনা করা হয়। যেমন, সংস্কৃতি খাতে বাজেট বৃদ্ধি, সংস্কৃতির প্রতি দীর্ঘমেয়াদী সরকারের নীতি, নতুন শিল্পী ও শিক্ষার্থীদের জন্য প্রশিক্ষণ, সৃজনশীল প্রকল্পের জন্য বাজেট বরাদ্দ, সংস্কৃতির ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে প্রসার, সংস্কৃতি কেন্দ্র এবং শিল্পকলা একাডেমি স্থাপন, সংস্কৃতি ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ়করণ, শিল্পীদের জন্য মাসিক সম্মানী, সংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর মাসিক গ্রান্ট, শিল্পীদের সম্মান ও সন্মানী প্রদান, বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক প্রকল্প, সংস্কৃতির ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ, সংস্কৃতির প্রতি জনগণের আগ্রহ সৃষ্টি, সংস্কৃতির জন্য পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং শিল্পীদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা।
বলা দরকার, সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন থিয়েটার আর্টিস্টস এসোসিয়েশন অব ঢাকা’র সভাপতি আজাদ আবুল কালাম, পরিচালনা করেন অপু শহীদ, সেক্রেটারি ইভেন্ট, থিয়েটার আর্টিস্টস এসোসিয়েশন অব ঢাকা, এবং ধারণাপত্র পাঠ করেন তৌফিকুল ইসলাম ইমন, সেক্রেটারি অর্গানাইজেশন, থিয়েটার আর্টিস্টস এসোসিয়েশন অব ঢাকা। প্রধান অতিথির দায়িত্ব পালন করেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও গবেষক আনু মোহাম্মদ
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: দ র জন য র জন য প প রস ত ব স জনশ ল এক ড ম বর দ দ
এছাড়াও পড়ুন:
পবিত্র কোরআনে ‘রুকু’ কীভাবে এল
আমরা কোরআন তিলাওয়াত করার সময় প্রতিটি সুরার শুরুতেই আয়াত সংখ্যার সঙ্গে ‘রুকু’ সংখ্যাও লেখা দেখি। পৃষ্ঠার মাঝেও রুকু লেখা থাকে। এই রুকু মানে কী? কী কাজ এই রুকুর?
এই প্রবন্ধে রুকুর ধারণা, কোরআন তিলাওয়াতের সঙ্গে এর সম্পর্ক এবং কোরআনে রুকুর সংখ্যা নিয়ে আলোচনা করা হলো।
রুকু কীরুকু আরবি শব্দ, যার অর্থ ‘নমন’ বা ‘বাঁকানো’। নামাজে রুকু বলতে কোমর ঝুঁকিয়ে আল্লাহর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের অঙ্গভঙ্গিকে বোঝায়।
তবে কোরআন তিলাওয়াতের ক্ষেত্রে রুকু একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ আয়াতের সংকলনকে বোঝায়, যা তিলাওয়াতকে সংগঠিত ও সহজতর করে। এটি বিশেষ করে হাফেজদের (যাঁরা কোরআন মুখস্থ করেন) জন্য সুবিধাজনক।
ইমাম সারাখসি (মৃ. ৪৮৩ হি.) রুকুকে রাকাতের সঙ্গে সম্পর্কিত করে বলেছেন, এক রাকাতে তিলাওয়াতের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ আয়াতের সংকেত হিসেবে রুকু ব্যবহৃত হতো।কোরআন তিলাওয়াতে রুকুর ভূমিকারুকু নির্ধারণের উদ্দেশ্য ছিল তিলাওয়াতের সময় আয়াতের বিষয়বস্তুর ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এবং বিরতি নেওয়ার সুবিধা প্রদান। ইসলামের প্রাথমিক যুগে, বিশেষ করে হাফেজরা তিলাওয়াতের পর নির্দিষ্ট আয়াতে এসে রুকুতে যেতেন, যা এই প্রথার উৎপত্তির ইঙ্গিত দেয়।
ঐতিহাসিকভাবে রুকু নির্ধারণের প্রথা মা-ওয়ারাউন্নাহার (বুখারা, সমরখন্দ) অঞ্চলে ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল। এটি তারাবিহ নামাজের সময় কোরআন তিলাওয়াতকে সংগঠিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত।
ইমাম সারাখসি (মৃ. ৪৮৩ হি.) রুকুকে রাকাতের সঙ্গে সম্পর্কিত করে বলেছেন, এক রাকাতে তিলাওয়াতের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ আয়াতের সংকেত হিসেবে রুকু ব্যবহৃত হতো। অন্য একটি মত অনুসারে, হাফেজরা নির্দিষ্ট পরিমাণ তিলাওয়াতের পর রুকুতে যাওয়ার কারণে এই নামকরণ হয়েছে। (আল-সারাখসি, আল-মাবসুত, বৈরুত: দার আল-মা’রিফা)
আরও পড়ুনধীরে ধীরে কোরআন অবতীর্ণ হওয়ার কারণ৩০ মে ২০২৫কোরআনে রুকুর সংখ্যাকোরআনে রুকুর সংখ্যা বিভিন্ন অঞ্চলে ও ঐতিহ্য অনুসারে ভিন্নতা দেখায়। প্রধানত তিনটি ধারা প্রচলিত: ৫৫৮, ৫৪০ ও ৪৮০।
৫৫৮ রুকু: বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের মুসহাফে সাধারণত ৫৫৮টি রুকু ব্যবহৃত হয়। প্রতিটি সুরায় রুকুর সংখ্যা উল্লেখ থাকে এবং আরবি অক্ষর ‘আইন’ দিয়ে রুকু চিহ্নিত করা হয়। এই চিহ্নে তিনটি সংখ্যা থাকে:
১. ওপরের সংখ্যা: সুরার মধ্যে রুকুর ক্রম।
২. মাঝের সংখ্যা: রুকুর আয়াতসংখ্যা।
৩. নিচের সংখ্যা: পারার (জুজ) মধ্যে রুকুর ক্রম।
এই পদ্ধতি তিলাওয়াতকে সুসংগঠিত করে এবং হাফেজদের জন্য সুবিধাজনক। (সিদ্দিকি, এ, ২০১৭, কোরআনিক ম্যানুস্ক্রিপ্টস অ্যান্ড দেয়ার ডিভিশনস, জার্নাল অব ইসলামিক স্টাডিজ, ২৮(২), (১৪৫-১৬৭)
বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের মুসহাফে সাধারণত ৫৫৮টি রুকু ব্যবহৃত হয়। প্রতিটি সুরায় রুকুর সংখ্যা উল্লেখ থাকে এবং আরবি অক্ষর ‘আইন’ দিয়ে রুকু চিহ্নিত করা হয়।৫৪০ রুকু: বুখারায় প্রথম রুকু নির্ধারণের সময় এর সংখ্যা ছিল ৫৪০। বুখারার মাশায়েখরা রমজানে তারাবিহ নামাজে প্রতি রাকাতে ১০টি আয়াত তিলাওয়াতের প্রথা অনুসরণ করতেন। এভাবে ৩০ দিনে কোরআনের প্রায় ৬ হাজার আয়াত তিলাওয়াত হতো। তবে দশ আয়াতের ভিত্তিতে তিলাওয়াত করলে বিষয়বস্তুর মাঝখানে বিরতি পড়ত, তাই তারা বিষয়ের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য রুকু নির্ধারণ করেন। (রহিম বখশ, আল-খাত্ত আল-উসমানি ফি রাসমিল কোরআন, লাহোর: মাকতাবা কুদ্দুসিয়া, ১৯৮২)
৪৮০ রুকু: সিন্ধুর হাশিম থাট্টুভি কোরআনের রুকুসংখ্যা ৪৮০ নির্ধারণ করেছিলেন। তিনি সুরাভিত্তিক নয়, বরং পারাভিত্তিক রুকু নির্ধারণ করেন। প্রতি পারায় ১৬টি রুকু ধরে ৩০ পারায় মোট ৪৮০ রুকু হয়।
তিনি ‘রুকু’ শব্দের পরিবর্তে ‘মাকরা’ বা ‘মাকারি’ শব্দ প্রস্তাব করেন, যা ‘কিরআত’ (পাঠ্যাংশ) থেকে উদ্ভূত। (আজমি, এম এম, ২০০৩, দ্য হিস্ট্রি অব দ্য কোরআনিক টেক্সট: ফ্রম রেভল্যুশন টু কম্পাইলেশন, যুক্তরাজ্য: আল-কোরআন সোসাইটি)
আরও পড়ুনসহজে কোরআন বোঝার পাঁচটি কৌশল০৩ মে ২০২৫রুকুর প্রচলনহিজাজ, আন্দালুসিয়া, মিসর, আফ্রিকা ও সিরিয়ায় রুকুর প্রচলন তেমন ছিল না। রুকুর প্রচলন মূলত মা-ওয়ারাউন্নাহার (বুখারা, সমরখন্দ), ভারতবর্ষ ও তুরস্কে ব্যাপক ছিল। ওসমানি খেলাফতের পর তুরস্কে এটা বিলুপ্ত হয়ে, তবে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে এখনো রুকুর প্রচলন আছে।
বুখারার মাশায়েখরা রমজানে তারাবিহ নামাজে প্রতি রাকাতে ১০টি আয়াত তিলাওয়াতের প্রথা অনুসরণ করতেন। তবে এভাবে তিলাওয়াত করলে বিষয়বস্তুর মাঝখানে বিরতি পড়ত, তাই তারা বিষয়ের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য রুকু নির্ধারণ করেন।ইমাম দানি (মৃ. ৪৪৪ হি.) তাঁর গ্রন্থ আল-বায়ান ফি আদ্দি আয়িল কোরআন-এ কোরআনের বিভিন্ন ভাগ নিয়ে আলোচনা করলেও রুকু নিয়ে বিস্তারিত বলেননি। তবে ইমাম সারাখসি এবং রহিম বখশ তাঁদের লেখায় রুকুর ঐতিহাসিক বিবরণ দিয়েছেন।
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সময়ে সাহাবিরা ১০টি আয়াত করে মুখস্থ করতেন এবং এর ব্যাখ্যা বুঝে পরবর্তী আয়াত শিখতেন, যা রুকু নির্ধারণের প্রাথমিক ধারণার সঙ্গে সম্পর্কিত। (আল-দানি, আল-বায়ান ফি আদ্দি আয়িল কুরআন, কায়রো: দার আল-মা’আরিফ)
সারকথা, রুকু কোরআন তিলাওয়াতকে সহজ ও সংগঠিত করে, বিশেষ করে হাফেজদের জন্য। এটি ইসলামের প্রাথমিক যুগ থেকে প্রচলিত একটি পদ্ধতি, যা বুখারা, সমরখন্দ ও ভারতীয় উপমহাদেশে ব্যাপকভাবে গৃহীত হয়েছে। ৫৫৮, ৫৪০ ও ৪৮০ রুকুর ধারা বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচলিত হলেও বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে ৫৫৮ রুকুই বেশি ব্যবহৃত হয়।
লেখক: খণ্ডকালীন শিক্ষক, আরবি বিভাগ, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আরও পড়ুনযে ঘটনায় কোরআনে পূর্ণ দুটি রুকু নাজিল হয়১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪