পদ্মার বালু উত্তোলন ঘিরে নড়িয়ায় বিএনপির দুই পক্ষ মুখোমুখি
Published: 20th, April 2025 GMT
শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে বিএনপির স্থানীয় দুটি পক্ষ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এক পক্ষ চায় পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা বাঁধের কাছ থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করা হোক। আর দলটির আরেক পক্ষের নেতৃত্বে বালু উত্তোলন করছে একটি চক্র।
একটি পক্ষ নড়িয়ার মানুষের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, অবস্থান ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। তারপরও বালু উত্তোলন বন্ধ না হওয়ায় আজ রোববার নড়িয়া উপজেলা সদরে আবারও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
ওই কর্মসূচিকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে পাল্টা বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমেদ ওরফে রয়েল ও তাঁর অনুসারীরা। বিভিন্ন গণমাধ্যমে বালু উত্তোলন নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করার কারণে তিনি সাংবাদিকদেরও প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন।
নড়িয়ার সর্বস্তরের জনতার ব্যানারে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে ডাকা বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির একটি পক্ষ গতকাল শনিবার দিনব্যাপী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করেছে। এই পক্ষের নেতৃত্বে আছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মহিউদ্দিন আহম্মেদ, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল এস এম ফয়সাল, ঢাকার কলাবাগান থানা মহিলা দলের সভাপতি শামীমা জামান। আর এই কর্মসূচিটি প্রতিহত করার ডাক দিয়ে উপজেলা বিএনপির আরেকটি পক্ষ রাতে উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। মিছিল শেষে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমেদ বক্তব্য দেন। সেখানে তিনি বৈধ প্রক্রিয়ায় নিলামে কেনা বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে অপর পক্ষকে দায়ী করেন। তিনি ওই পক্ষকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ উল্লেখ করে প্রতিহত করার ঘোষণা দেন।
পদ্মা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। সম্প্রতি নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) দ্রুত তফসিল ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘হয় মোদের চাকসু দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’, ‘চাকসু মোদের অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’—এমন স্লোগান দেন।
আরো পড়ুন:
আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে বিশ্বে তৃতীয় ইউআইইউ
জবির প্রভাবশালী আওয়ামীপন্থি ‘ক্যাডার’ শিক্ষকরা যেখানে আছেন
আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বলেন, “জুলাই মাসে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ হওয়ার ঘটনাগুলো আমাদের জানা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীও সে সময় শহীদ হয়েছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই সবার আগে চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা ছিল, কিন্তু এখনও কোনো অগ্রগতি নেই। অথচ ডাকসু, রাকসু, জাকসুর তফসিল ঘোষণা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা অনুমোদনের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এরপর আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। “যদি তা না হয়, তাহলে আমরা দুর্বার ছাত্রআন্দোলনের দিকে যাব,” বলেন তিনি।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, “দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এরইমধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা এতদিন রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, এখন আর রোডম্যাপ নয়—তফসিল চাই।”
তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সক্রিয় ছাত্র সংসদ। তাই আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তফসিল এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন চাই।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা চূড়ান্ত হলে নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করবেন।”
চাকসু গঠনের ধারণা মূলত এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর আদলে। বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংসদ গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়।
১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ মে। এই নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আর কোনো চাকসু নির্বাচন হয়নি।
২০২৫ সালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হওয়ায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসুর মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছেন।
ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা