নারায়ণগঞ্জে আড়াইহাজার থানায় টাকা নেওয়ার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা গেছে, ওই থানার অফিসার ইনচার্জ এনায়েত হোসেন লিখিত আবেদনের সঙ্গে দেওয়া টাকা নিয়ে বলছেন, ‘কম টাকা দিলে সম্মান থাকে।’

এরপর তিনি টাকাসহ আবেদনটি ড্রয়ারে রেখে দেন। এরকম একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর রোববার থেকে ভোলার -৩ আসনের আওয়ামী লীগের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের সাথে ওসি এনায়েত হোসেনের একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।

রোববার এনিয়ে গোটা আড়াইহাজার জুড়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই ফেসবুকে মন্তব্য করতে দেখা যায় যে, ভোলা থাকাকালীন ওসি এনায়েত হোসেন এমপি শাওনের নির্দেশে জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার উপর গুলি চালিয়েছেন। সেখান থেকে পালিয়ে বিশেষ সুবিধার বিনিমরয় আড়াইহাজারে পোস্টিং নেন।

আড়াইহাজারে গত বছরের সেপ্টেম্বরে যোগদানের পর থেকে আড়াইহাজারের নিরীহ জনগনকে তিনি টাকা কামানোর মেশিন হিসেবে ব্যবহার করা শুরু করেন। থানা ধরে এনে রাতের অন্ধকারে বিভিন্ন মামলার ভয় দেখিয়ে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নেন।

তিনি চোর-ডাকাত, মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের পরিবর্তে আড়াইহাজারের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে হত্যা, নাশকতার মামলার  ভয় দেখিয়ে টাকা কামানো মিশনের নামেন। এনিয়ে তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকবার থানায় বিক্ষোভ হলেও একশ্রেণির সুবিধাভোগীদের জন্য তা সহজেই ধামাচাপা দেন।

সাতগ্রাম ইউনিয়নির বিপ্লব নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে হত্যা মামলার ভয় দেখিয়ে ৫ লক্ষা টাকা হাতিয়ে নেন। জালাকান্দি এলাকার পেশাদার ফটোগ্রাফার রিফাতকে বিনা কারণে তাকে গ্রেপ্তার করে। হত্যা মামলা থেকে বাঁচাতে ওসি এনায়েত হোসেনকে নিরীহ রিফাতের পরিবার ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মো.

 রাজু কমেন্টে বলেন, ‘ গত বছরের আগষ্টের পরে যত লোক এরেস্ট হয়েছে সবার নিকট থেকে উনি মোটা অংকের করে টাকা নিয়েছেন। আতাদীর আওয়ামী লীগ নেতা কাশেমের পরিবারের নিকট থেকে নিয়েছেন ৬০ হাজার। দাবুরপুরার ব্যবসায়ী সালাম হাজীর নিকট থেকে  দেড় লাখ টাকা নিয়েছেন ওসি সাহেব।’ 

তবে এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট দাবী করে থানার ওসি ওসি এনায়েত হোসেন বলেন, একটি মহল উদ্দেশ্য প্রণীতভাবে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।’
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ

এছাড়াও পড়ুন:

সবাই ভেবেছিলেন কিশোরী ডুবে গেছে, ১০ দিন পর ফোন করে জানাল সে গাজীপুরে আছে

১০ দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল কিশোরী সোহানা খাতুন। বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তবে গত বুধবার রাতে মাকে ফোন করেছে সোহানা; জানিয়েছে সে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

নিখোঁজ হওয়া কিশোরীর নাম সোহানা খাতুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কারিগর পাড়ায়। তার বাবা গোলাম মওলা ও মা শিরিনা খাতুন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল ও কাপড় ধুতে গিয়েছিল সোহানা। দীর্ঘ সময়েও না ফেরায় তার মা নদীর ধারে যান; দেখেন, সোহানার কাপড় পড়ে আছে। এরপর স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। পরদিন খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান স্থগিত করে। ২১ জুলাই এক কবিরাজ এনে নদীতে খোঁজার চেষ্টাও করেন সোহানার বাবা–মা।

এমন অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ সোহানা তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানায়, সে ঢাকার গাজীপুরে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সোহানার বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, মেয়ে নদীতে ডুবে গেছে। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করেছি। এমনকি কবিরাজও এনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বুধবার আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায়, সে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে। আমরা বিষয়টি গতকাল রাতে পুলিশকে জানিয়েছি।’ বিষয়টি বুঝতে না পেরে সবাইকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তিনি ক্ষমা চান।

স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর আগে খালাতো ভাই কুতুব উদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় সোহানা এবং দুজন বিয়ে করে। তবে বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে সোহানা তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। নদীতে নিখোঁজ হওয়ার ‘নাটক’ করে সে পালিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, শুরুতে পরিবারের লোকজন জানিয়েছিল, নদীতে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সোহানা। গতকাল আবার তার বাবা জানিয়েছে, মেয়ে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ