জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত নতুন ভবন নির্মাণের স্থান ও মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে বিতর্কের প্রেক্ষিতে ব্যাখ্যা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ।  

রবিবার (২০ এপ্রিল) রাত ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের নতুন ভবনের জন্য পূর্বে নির্ধারিত স্থানটি টেকনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট কমিটি (টিএমসি) পরিদর্শন করে বাতিলের সুপারিশ করে। পরবর্তীতে তিনটি বিকল্প স্থান (গণিত ভবন সংলগ্ন এলাকা, ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের উত্তর পার্শ্ব, এবং পদার্থ বিজ্ঞান ভবনের পশ্চিম পাশ ও লেকচার থিয়েটারের দক্ষিণ পার্শ্ব) মূল্যায়ন করা হয়।

আরো পড়ুন:

গাছ কেটে অপরিকল্পিত উন্নয়নের প্রতিবাদে জাবিতে মানববন্ধন

জাবিতে গবেষণাবিষয়ক কর্মশালা

বায়োডাইভার্সিটি ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্টের ভিত্তিতে টিএমসি এবং উদ্ভিদ ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের বিশেষজ্ঞদের জরিপে পদার্থ বিজ্ঞান ভবনের পশ্চিম পাশ ও লেকচার থিয়েটার সংলগ্ন স্থানটিকে সর্বনিম্ন পরিবেশগত প্রভাবযুক্ত হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়। এখানে প্রজাতির বৈচিত্র্য সূচক (পিএসডিআই) অন্যান্য স্থানের তুলনায় কম। এজন্য ভবন নির্মাণে বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি অপেক্ষাকৃত কম হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, সংশোধিত পূর্ণাঙ্গ মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে। এ জন্য ৪ কোটি ১১ লাখ ৩৫ হাজার ৩০০ টাকা বরাদ্দ চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) অনুরোধ করা হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। মাস্টারপ্ল্যান কমিটির চার সদস্য টিএমসিতে থাকায় ভবনের ডিজাইন ও অবস্থান ক্যাম্পাসের প্রকৃতি-সংরক্ষণ নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে বলে প্রশাসন আশ্বস্ত করেছে।  

বিজ্ঞপ্তিতে জাবি প্রশাসন বলছে, যেকোনো যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত মতামতকে আমরা স্বাগত জানাই। নতুন ভবনের স্থান বা নকশা সংক্রান্ত সুপারিশ থাকলে তা বিবেচনা করা হবে।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ভবন র পদ র থ

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ