আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আইন উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি
Published: 21st, April 2025 GMT
‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ আন্দোলন’ নামের একটি প্ল্যাটফর্মের ব্যানারে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনগুলো নিষিদ্ধ করার দাবিতে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
সোমবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে গিয়ে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল আইন উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ৯ দফা দাবিনামা জমা দেয়।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—আওয়ামী লীগকে নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা, দলের নিবন্ধন বাতিল, গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান, বিগত সরকারের সংসদ সদস্যদের অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত, গত ১৫ বছরের রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার এবং জুলাই আন্দোলনের ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন।
প্রতিনিধিদলে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাসুদ রানা, জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্সের আহ্বায়ক সালেহ মাহমুদ রায়হান, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাদিক আল আরমান এবং রাফিদ এম ভুইয়া।
স্মারকলিপি পেশ শেষে সচিবালয়ের প্রধান ফটকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রতিনিধি দলের পক্ষে বক্তব্য দেন মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ।
তিনি বলেন, ‘‘আমরা আশা করেছিলাম আইন উপদেষ্টা এই বিষয়ে কিছু ইতিবাচক বার্তা দেবেন, কিন্তু তিনি আমাদের কোনো আশার আলো দেখাতে পারেননি। মনে হয়েছে, সরকার আন্তর্জাতিক মহলের চাপের মুখে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পিছপা হচ্ছে। অথচ ৫ আগস্ট জনগণ নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে। এই মাটিতে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার অধিকার নেই।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘গণআন্দোলন ছাড়া আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা সম্ভব নয়। আরেকটি জুলাই তৈরি করে আমরা তাদের নিষিদ্ধে বাধ্য করব। খুব শিগগিরই আমরা মাঠে নামব।’’
প্রতিনিধিদলের আরেক সদস্য সালেহ মাহমুদ রায়হান বলেন, ‘‘আমরা সংবিধানের ১৩২ ধারার বিষয়ে আলোচনা করেছি। এই ধারার কারণে সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে হলে মন্ত্রণালয়ের অনুমতির প্রয়োজন হয়। এ কারণে বহু মামলার আবেদন গ্রহণ করা হয়নি। আমরা চাই এই ধারা সংশোধন বা বাতিল করা হোক। উপদেষ্টা বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।’’
এ সময় সচিবালয় এলাকায় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠন নিষিদ্ধের দাবিতে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নেন এবং দলটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে বিচার দাবিতে স্লোগান দেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইন উপদ ষ ট আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
পাল্টাপাল্টি হামলার তীব্রতা বাড়ল
ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা ঘিরে আরও অশান্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হামলার তীব্রতা বাড়াচ্ছে দুই দেশ। ইসরায়েলে গত শনিবার রাতভর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। একই রাতে ইরানের গ্যাসক্ষেত্র ও তেল শোধনাগারে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ হামলায় ইরানের কতজন নিহত হয়েছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি।
গতকাল রোববার ছিল দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলার তৃতীয় দিন। শনিবার রাতের পর রোববার দিনের বেলায়ও পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল ও ইরান। এদিন ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা জানিয়েছে ইয়েমেনের সশস্ত্র
গোষ্ঠী হুতি। চলমান সংঘাতে এই প্রথম ইরানপন্থী কোনো গোষ্ঠী যোগ দিল। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশকে শান্ত করার জন্য প্রচেষ্টা শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ।
গতকাল রাত একটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছিল। এ রাতেও তেহরানের নিয়াভারান, ভালিয়াসর ও হাফতে তির স্কয়ার এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ইরানের পূর্বাঞ্চলে মাশহাদ বিমানবন্দরে একটি ‘রিফুয়েলিং’ উড়োজাহাজে আঘাত হানার কথা জানায় ইসরায়েলি বাহিনী। এই উড়োজাহাজগুলো আকাশে থাকা অবস্থায় অন্য উড়োজাহাজে জ্বালানি সরবরাহ করতে সক্ষম। ইরান থেকেও ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার খবর পাওয়া গেছে।
ইসরায়েলে ব্যাপক হামলা ইরানেরইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি ঠেকানোর কথা বলে গত বৃহস্পতিবার রাতে দেশটিতে প্রথমে হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই রাতে ইসরায়েলের দুই শতাধিক যুদ্ধবিমান ইরানের ‘পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র’ স্থাপনায় আঘাত হানে। শুক্র ও শনিবারও ইরানে হামলা চলে। পাল্টা জবাব দিচ্ছে তেহরানও। তবে ইসরায়েলে শনিবার রাতভর ইরান যে হামলা চালিয়েছে, তা ছিল সবচেয়ে ব্যাপক।
ইসরায়েলে শনিবার প্রথম দফায় ইরানের হামলা শুরু হয় রাত ১১টার পরপর। এ সময় ইসরায়েলের জেরুজালেম ও হাইফা শহরে বেজে ওঠে সাইরেন। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাইফায় অবস্থিত তেল শোধনাগার। পরে রাত আড়াইটার দিকে দ্বিতীয় দফায় হামলা শুরু করে ইরান। তখন তেল আবিব ও জেরুজালেমে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শনিবার রাতে দুই দফায় ৭৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। প্রথম দফায় ছোড়া হয় ৪০টি। এতে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের তামরা শহরে চারজন নিহত হন। দ্বিতীয় দফায় ছোড়া হয় ৩৫টি ক্ষেপণাস্ত্র। এর একটি আঘাত হানে তেল আবিবের কাছে বাত ইয়াম এলাকায়। এতে অন্তত ছয়জন নিহত ও প্রায় ২০০ জন আহত হন। এ ছাড়া রেহভোত শহরে আহত হয়েছেন ৪০ জন।
ইসরায়েলি হামলায় জ্বলছে ইরানের শাহরান তেলের ডিপো। গতকাল দেশটির রাজধানী তেহরানের কাছে।