গাজীপুরের শ্রীপুর থানার ওসি মো. জয়নাল আবেদীন মণ্ডলের বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগে প্রকাশিত অডিও ক্লিপ ঘিরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং অডিওটি ফরেনসিক পরীক্ষায় পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 

অডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি পুলিশের নজরে আসে। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল)  দুপুরে গাজীপুরের পুলিশ সুপার ড.

চৌধুরী মো. যাবের সাদেক বলেন, ‘‘ওসির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। অডিওটির সত্যতা যাচাই না হওয়া পর্যন্ত কারো বিরুদ্ধে সিদ্ধান্তে যাবো না। আমরা চাই, স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটন হোক।’’ 

ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন নগরহাওলা গ্রামের ঝুট ব্যবসায়ী সেলিম সিকদার, যিনি অভিযোগ করেছেন, থানার ওসি তাঁর কাছে মোটা অঙ্কের ঘুষ দাবি করেন। ভাইরাল অডিওটিতে শোনা যায়, এক ব্যক্তি আরেকজনকে টাকা দেওয়ার বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করছেন। অভিযোগকারীর দাবি, এই কণ্ঠ ওসি জয়নালের। তবে ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল তা অস্বীকার করে বলেন, ‘‘এটি একটি ষড়যন্ত্র। অডিওটি এডিট করা এবং এটি আমার কণ্ঠ নয়।’’ 

আরো পড়ুন:

বিএনপি নেতার বাড়ির সামনে ককটেল বিস্ফোরণ

বরিশালে গুলিতে মাদক কারবারি নিহত, ১ জন গুলিবিদ্ধ 

এদিকে তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করেছে। সেলিম সিকদারকে পুলিশ সুপারের দপ্তরে ডেকে পাঠানো হয়েছে। জেলা পুলিশের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, অডিওটি ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হবে, যাতে কণ্ঠ শনাক্ত করা যায় এবং কোনো কারসাজি হয়েছে কি-না, তা নিরূপণ করা যায়।

স্থানীয় পর্যায়ে এ ঘটনা পুলিশের ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এলাকাবাসী স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। মানবাধিকার সংস্থার এক প্রতিনিধির মন্তব্য, ‘‘এই ধরনের ঘটনায় দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তিকে চিহ্নিত না করলে সাধারণ মানুষের মধ্যে পুলিশ সম্পর্কে আস্থাহীনতা বাড়বে।’’ 

তদন্ত কমিটির রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর জেলা পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে।

বিষয়টি নিয়ে দেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজপোর্টাল রাইজিংবিডিডটকম-এ সোমবার (২১ এপ্রিল) ‘গাজীপুরে ওসির ৫ লাখ টাকা ঘুষ চাওয়ার অডিও ফাঁস’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

ঢাকা/রফিক/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ঋত্বিকের বাড়ি যেন ‘মেঘে ঢাকা তারা’

বরেণ্য চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃক বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার এক বছর পার হয়েছে। একসময়ের ঐতিহ্যবাহী বাড়িটি এখন কেবলই ইটের স্তূপ আর আগাছায় ভরা এক ধ্বংসস্তূপ। স্মৃতিচিহ্ন বলতে টিকে আছে ভাঙা ইটের পাঁজা আর কয়েকটি ভাঙা দেয়াল, যেখানে গত বছর আঁকা হয়েছিল ঋত্বিকের একটি পোর্ট্রেট। সেই দেয়ালই যেন নির্বাক হয়ে জানান দিচ্ছে এক সাংস্কৃতিক অবহেলার করুণ ইতিহাস।
গতকাল রোববার ঋত্বিকের পৈতৃক ভিটায় গিয়ে দেখা যায়, খসে পড়া দেয়ালে ‘বাড়ী থেকে পালিয়ে’, ‘মেঘে ঢাকা তারা’, ‘অযান্ত্রিক’-এর মতো সিনেমার নাম ও চিত্রকর্ম আঁকা। এর মাঝে মোটা ফ্রেমের চশমা চোখে ছোট চুলের ঋত্বিক ঘটক যেন তাকিয়ে আছেন তাঁরই বাড়ির ধ্বংসাবশেষের দিকে।

অথচ এই বাড়ির সূত্রেই বহু মানুষ রাজশাহীকে চিনেছেন। কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক ঋত্বিকের ‘মেঘে ঢাকা তারা’ দেখার স্মৃতিচারণায় একবার বলেছিলেন, ‘সেই সিনেমা দেখার মুগ্ধতা বুকের মধ্যে মধুর মতো জমে আছে।’ কালের পরিক্রমায় ঋত্বিকের সেই বাড়িই আজ ‘মেঘে ঢাকা তারা’ হয়ে গেছে। স্মৃতি আছে, কিন্তু অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। রাজশাহীর চলচ্চিত্রকর্মীরা চান, এই ধ্বংসস্তূপের ওপরই ঋত্বিকের স্মৃতি সংরক্ষণে টেকসই কোনো উদ্যোগ নেওয়া হোক।

ঋত্বিক ঘটক

সম্পর্কিত নিবন্ধ