গাজীপুরে গণ-অভ্যুত্থানের সময় হত্যার অভিযোগে মহানগরের গাছা থানায় দায়ের করা তিনটি মামলায় সাবেক ৩ জন মন্ত্রী, ২ জন প্রতিমন্ত্রী, একজন সেনা ও এক ব্যাংক কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির করা হয়। 

মঙ্গলবার গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত-৩ এ তাদেরকে হাজির করা হলে, বিচারক ওমর হায়দার এসব মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে কাশিমপুর ও কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে দু’টি প্রিজনভ্যানে সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলাম, সাধন চন্দ্র মজুমদার ও ডা.

দীপু মনি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান ও ব্যাংক কর্মকর্তা নজরুল ইসলামকে গাজীপুর আদালতে আনা হয়। আসামিদের বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরিয়ে কড়া পাহারায় আদালতের এজলাসে তোলা হয়। আদালতের কার্যক্রম শেষে আসামিদের আদালত চত্বর থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় স্থানীয় বিএনপির সমর্থক আইনজীবীরা আদালত এলাকায় আসামিদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। তাদেরকে লক্ষ্য করে কেউ কেউ ডিমও নিক্ষেপ করে।  

গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী মোহাম্মদ রাশেদ জানান, তিনটি মামলার শুনানির দিন মঙ্গলবার ধার্য ছিল। সকালে ছয়জনকে কারাগার থেকে গাজীপুর আনা হয়। বেলা সোয়া ১১টার দিকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত-৩ এ শুনানি শেষে আবার তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গাজীপুর মহানগর আদালত পরিদর্শক আহসান উল্লাহ চৌধুরী জানান, গাছা থানার তিনটি হত্যা মামলায় আসামিদের গাজীপুরে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত-৩ এ হাজির করা হয়। পরে হাজির করা আসামিদের তিনটি হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করা হলে বিজ্ঞ চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক ওমর হায়দার  গ্রেফতারের আবেদন মঞ্জুর করেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর মকর ত হ জ র কর মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

দুর্নীতির মামলায় শেখ হাসিনার পরিবারের ৭ সদস্যের বিচার শুরু, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের পৃথক ছয়টি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন ও ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম ও সুলতান মাহমুদ।

আগামী ১১ ও ১৩ আগস্ট মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের ঠিক করা হয়েছে।

মামলায় অভিযুক্ত শেখ হাসিনা পরিবারের সদস্যরা হলেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক (ববি)।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের পৃথক ছয়টি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুদকের পক্ষ থেকে অভিযোগ গঠনের পক্ষে আদালতে যুক্তি তুলে ধরা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন আদালত।

এর আগে গত ২০ জুলাই পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের মামলায় শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে করা মামলাটি এই আদালতে বদলি হয়।

দুদকের পিপি মীর আহমেদ আলী সালাম প্রথম আলোকে বলেন, সম্প্রতি প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের ছয়টি মামলায় শেখ হাসিনাসহ অন্যদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পরে মামলাগুলো বিচারের জন্য অন্য আদালতে বদলির আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত।

প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক তিন মামলায় গত এপ্রিলে শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক তিনটি মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। তিনটি মামলায় তাঁদের ছাড়াও সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদসহ ১৬ জন অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি।

২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের নামে বরাদ্দ নেওয়া প্লটের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা করে দুদক।

পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ছয়টি মামলায় শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে গত ১০ মার্চ অভিযোগপত্রের অনুমোদন দেয় দুদক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ