ক্রোমের যে ৩৫টি এক্সটেনশন নিয়ে নিরাপত্তা উদ্বেগ
Published: 23rd, April 2025 GMT
গুগলের ক্রোম ওয়েব স্টোরে থাকা অন্তত ৩৫টি এক্সটেনশন নিয়ে সম্প্রতি গুরুতর নিরাপত্তা উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, এসব এক্সটেনশন ব্যবহারকারীদের অজান্তে নানা রকম অনুমতি নিয়ে ওয়েব ব্যবহারে তথ্য সংগ্রহ করছে এবং তা একাধিক অজানা সার্ভারে পাঠাচ্ছে। ইতিমধ্যে এসব এক্সটেনশন ইনস্টল হয়েছে ৪০ লাখের বেশি যন্ত্রে।
ব্রাউজার এক্সটেনশন বিশ্লেষণকারী প্রতিষ্ঠান ‘সিকিউর অ্যানেক্স’-এর প্রতিষ্ঠাতা জন টাকনার এই এক্সটেনশনগুলোর গোপন কার্যক্রম শনাক্ত করেন। তিনি জানান, এসব এক্সটেনশনের আচরণ এতটাই সন্দেহজনক যে, কোনো সচেতন ব্যবহারকারী বা প্রতিষ্ঠান এগুলো ব্যবহার করবে এমনটা ভাবার সুযোগ নেই। এই এক্সটেনশনগুলো অতিরিক্ত অনুমতির সুযোগ নিয়ে ব্রাউজারে ট্যাব ব্যবস্থাপনা, ওয়েব অনুরোধে হস্তক্ষেপ, কুকি পড়া ও সংরক্ষণ, ওয়েবসাইটে স্ক্রিপ্ট চালানো এবং নির্ধারিত সময় অনুযায়ী কাজ চালানোর মতো সক্ষমতা অর্জন করে। এর ফলে ব্যবহারকারীর ওয়েব ব্রাউজিংয়ের প্রায় পুরো নিয়ন্ত্রণই এক্সটেনশনের হাতে চলে যায়। অথচ যেসব কাজের জন্য এসব এক্সটেনশন তৈরি করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়, সেগুলোর জন্য এত অনুমতির প্রয়োজন পড়ে না।
সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, এই এক্সটেনশনগুলোর ৩৪টি গুগলের ‘আনলিস্টেড’ শ্রেণিতে রয়েছে। অর্থাৎ, এগুলোর লিংক সরাসরি না জানলে ওয়েব স্টোরে খুঁজে পাওয়া যায় না। তা সত্ত্বেও গোপনে থেকে কীভাবে এগুলো ৪০ লাখ ইনস্টল অর্জন করল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর মধ্যে ১০টি এক্সটেনশন আবার গুগলের দেওয়া ‘ফিচার্ড’ স্বীকৃতি পেয়েছে, যা সাধারণত নির্ভরযোগ্য ডেভেলপারের মানসম্পন্ন এক্সটেনশনগুলোকেই দেওয়া হয়।
‘ফায়ার শিল্ড এক্সটেনশন প্রটেকশন’ নামের একটি এক্সটেনশন ব্রাউজারে ইনস্টল করা সন্দেহভাজন এক্সটেনশন শনাক্ত করে বলে দাবি করে। অথচ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এক্সটেনশনটি নিজেই ব্যবহারকারীর তথ্য একটি নির্দিষ্ট সার্ভারে পাঠাচ্ছে। এক্সটেনশনটি চালু করলে কোনো দৃশ্যমান ফিচার দেখা যায় না। এমনকি আইকনে ক্লিক করলেও কোনো অপশন দেখা যায় না। এটি দূরবর্তী কনফিগারেশনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয় এবং ব্যবহারকারীর দেখা ওয়েবসাইট, পর্দার আকারসহ নানা তথ্য গোপনে পাঠিয়ে দেয়। টাকনার বলেন, ‘কোনো এক্সটেনশনের মাধ্যমে সরাসরি পাসওয়ার্ড চুরি হওয়ার বিষয়টি শনাক্ত হয়নি, তবে যেভাবে কোড গোপন রাখা হয়েছে এবং যেভাবে দূর থেকে নিয়ন্ত্রণের সুযোগ রয়েছে, তাতে স্পষ্টভাবেই বলা যায়, এগুলো কোনো না কোনো রকমের স্পাইওয়্যার বা ইনফোস্টিলার।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই পর্যায়ের নিয়ন্ত্রণ ও তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষমতা থাকলে এগুলোর বিপজ্জনক উদ্দেশ্য না থাকার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।’
সন্দেহজনক কার্যক্রমে জড়িত যে ৩৫টি এক্সটেনশন শনাক্ত করা হয়েছে, সেগুলো হলো—চুজ ইওর ক্রোম টুলস, ফায়ার শিল্ড ক্রোম সেফটি, সেফ সার্চ ফর ক্রোম, ফায়ার শিল্ড এক্সটেনশন প্রটেকশন, ব্রাউজার চেকআপ ফর ক্রোম বাই ডক্টর, প্রটেক্টো ফর ক্রোম, আনবায়াসড সার্চ বাই প্রটেক্টো, সিকিউরিফাই ইওর ব্রাউজার, ওয়েব প্রাইভেসি অ্যাসিস্ট্যান্ট, সিকিউরিফাই কিড প্রটেকশন, বিং সার্চ বাই সিকিউরিফাই, ব্রাউজ সিকিউরলি ফর ক্রোম, বেটার ব্রাউজ বাই সিকিউরি সার্চ, চেক মাই পারমিশনস ফর ক্রোম, ওয়েবসাইট সেফটি ফর ক্রোম, মাল্টিসার্চ ফর ক্রোম, গ্লোবাল সার্চ ফর ক্রোম, ম্যাপ সার্চ ফর ক্রোম, ওয়াচ টাওয়ার ওভারভিউ, ইনকগনিটো শিল্ড ফর ক্রোম, ইনসাইট সার্চ ফর ক্রোম, প্রাইভেসি গার্ড ফর ক্রোম, ইয়াহু সার্চ বাই ঘোস্ট, প্রাইভেট সার্চ ফর ক্রোম, টোটাল সেফটি ফর ক্রোম, ডেটা শিল্ড ফর ক্রোম, ব্রাউজার ওয়াচডগ ফর ক্রোম, ইনকগনিটো সার্চ ফর ক্রোম, ওয়েব রেজাল্টস ফর ক্রোম, কুপোনোমিয়া—কুপন অ্যান্ড ক্যাশব্যাক, সিকিউরিফাই ফর ক্রোম, সিকিউরিফাই অ্যাডভান্সড ওয়েব প্রটেকশন, নিউজ সার্চ ফর ক্রোম, সিকিউরি ব্রাউজ ফর ক্রোম ও ব্রাউজ সিকিউরলি ফর ক্রোম।
সূত্র: আরসটেকনিকা ডটকম
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স র চ ফর ক র ম ব যবহ র
এছাড়াও পড়ুন:
স্টিভ জবসের মডেল কন্যাকে কতটা জানেন?
মার্কিন ফ্যাশন মডেল ইভ জবস। অ্যাপল কম্পিউটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসের কন্যা তিনি। স্টিভ জবস ও লরেন পাওয়েল জবস দম্পতির কন্যা ইভ।
কয়েক দিন আগে বয়সে ছোট প্রেমিকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ২৭ বছরের ইভ। তার বরের নাম হ্যারি চার্লস। যুক্তরাজ্যের নাগরিক হ্যারি অলিম্পিকে স্বর্ণপদকজয়ী অশ্বারোহী। বয়সে ইভের চেয়ে এক বছরের ছোট হ্যারি। গ্রেট ব্রিটেনে এ জুটির বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইভের জাঁকজমকপূর্ণ বিয়েতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধনাঢ্য পরিবারের লোকজন। এ তালিকায় রয়েছেন—তারকা শেফ ব্যারনেস রুথ রজার্স, বিল গেটসের মেয়ে জেসিকা, রোমান আব্রামোভিচের মেয়ে সোফিয়া প্রমুখ। অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতা উত্তরাধিকারীর পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবদের বিলাসবহুল মিনিবাসের স্রোত বইছিল বিয়ের ভেন্যুতে।
জাকজমকপূর্ণ বিয়েতে কত টাকা খরচ হয়েছে তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। সংবাদমাধ্যমটিকে প্রয়াত স্টিভ জবসের স্ত্রী লরেন পাওয়েল জবস বলেন, “ইভ-হ্যারির বিয়েতে ৫ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ হয়েছে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯০ কোটি ২৮ লাখ টাকার বেশি)।
১৯৯১ সালে লরেন পাওয়েলকে বিয়ে করেন স্টিভ জবস। এ সংসারে তাদের তিন সন্তান। ইভ এ দম্পতির কনিষ্ঠ কন্যা। ১৯৯৮ সালের ৯ জুলাই ক্যালিফর্নিয়ায় জন্ম। তার বড় বোন এরিন, ভাইয়ের নাম রিড। লিসা নামে তার একটি সৎবোনও রয়েছে।
ইভা পড়াশোনা করেছেন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০২১ সালে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং সমাজ (সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড সোসাইটি) বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। একই বছর প্যারিসে ‘কোপের্নি’ সংস্থার হাত ধরে মডেলিং দুনিয়ায় পা রাখেন। মডেলিং জগতে পা রেখেই চমকে দেন স্টিভ-তনয়া।
অনেকে নামিদামি ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করেছেন ইভ। বিখ্যাত ব্যাগ প্রস্তুতকারী সংস্থা লুই ভিতোঁরের মডেল হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। মডেলিংয়ের পাশাপাশি অশ্বারোহী হিসাবেও খ্যাতি রয়েছে ইভের। এক সময় বিশ্বের ২৫ বছরের কম বয়সি ১ হাজার সেরা অশ্বারোহীর মধ্যে পঞ্চম স্থানে ছিলেন তিনি।
মাত্র ছয় বছর বয়সে ঘোড়ার পিঠে চড়ে দৌড় শুরু করেছিলেন স্টিভ জবস তনয়া। ঘোড়ায় চড়ার প্রশিক্ষণের পাশাপাশি মেয়ে যাতে পড়াশোনায় মন দেয়, সে দিকে বরাবরই সজাগ দৃষ্টি ছিল ইভের বাবা-মায়ের। তবে গ্রীষ্মাবকাশ ও বসন্তের ছুটির সময়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য বাবা-মায়ের অনুমতি পেতেন ইভ।
ইভ যেখানে অশ্বারোহণের প্রশিক্ষণ নেন, সেই জায়গার মূল্য দেড় কোটি ডলার। ইভ প্রশিক্ষণ শুরু করার পর তার মা ওই জায়গা কিনে নিয়েছিলেন। তবে মডেল হওয়ার কোনো পরিকল্পনা কখনো ছিল না ইভের। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “আগে কখনো মডেলিং করিনি। তবে প্রস্তাব পেয়ে ঘাবড়ে যাইনি। আমার মনে হয়েছিল, কেন নয়? এই প্রস্তাব আমাকে আকৃষ্ট করেছিল।”
ঢাকা/শান্ত