রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই আন্দোলনে হামলার অভিযোগে শিক্ষার্থী আটক, পরে পুলিশে সোপর্দ
Published: 23rd, April 2025 GMT
জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কর্মীরা। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আবু সাঈদ চত্বর থেকে তাঁকে আটক করা হয়।
ওই শিক্ষার্থীর নাম উজ্জ্বল মিয়া। তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। পুলিশ বলছে, উজ্জ্বল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলায় জড়িত ছিলেন। আগের মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আল আমিনের দাবি, উজ্জ্বল মিয়া ছাত্রলীগের কর্মী। গত বছরের ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালযয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সঙ্গে উজ্জ্বল সরাসরি জড়িত। আজ সন্ধ্যায় শহীদ আবু সাঈদ চত্বরে উজ্জ্বল চা পান করছিলেন। এ সময় ছাত্রদলের কর্মীরা তাঁকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হাতে তুলে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ফেরদৌস রহমান প্রথম আলোকে বলেন, উজ্জ্বল আবু সাঈদ চত্বরের সামনে ঘোরাঘুরি করছিলেন। কয়েকজন শিক্ষার্থী তাঁকে আটক করলে তিনি সেখানে যান। ‘মব জাস্টিস’ যাতে না হয়, সে জন্য তাঁকে রাত ৯টার দিকে থানা হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।
ফেরদৌস রহমান জানান, আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ৭২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে একাডেমিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, উজ্জ্বল তাঁদের একজন। তাঁকে দুই সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (তাজহাট থানার উপপরিদর্শক) আজিজুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্ররা উজ্জ্বলকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দিলে প্রক্টর ফেরদৌস রহমান ও ছাত্র উপদেষ্টা ইলিয়াস প্রামাণিক তাঁকে নিয়ে তাজহাট থানায় যান।
উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে কোনো মামলা আছে কি না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে আজিজুল হক বলেন, উজ্জ্বল ১৬ জুলাই আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের দিনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় জড়িত বলে এমন ছবি আছে।
তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ আলম সরদার বলেন, জুলাই ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থী পাপলু মিয়া একটি মামলা করেছিলেন। ওই মামলায় উজ্জ্বলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব গম র ক য
এছাড়াও পড়ুন:
গভীর রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আমল মাসঊদের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার গভীর রাতে বিনোদপুরের মণ্ডলের মোড় এলাকায় তাঁর বাড়ির দরজার সামনে এ ঘটনা ঘটে। তবে এতে কেউ আহত হয়নি।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সেখানে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে। তবে কে বা কারা এটি করেছে, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগও কেউ করেনি। তাঁরা দুর্বৃত্তদের শনাক্তের চেষ্টা করছেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইফতিখারুল আমল মাসঊদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে ঘটনার পর তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে লিখেছেন, ‘ফ্যাসিবাদী অপশক্তির জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম। কোনো রক্তচক্ষুর ভয়ংকর হুমকি অন্যায়ের প্রতিবাদ করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। তবে তারা কখনো বাড়ি পর্যন্ত আসার ঔদ্ধত্য দেখাতে পারেনি। কিন্তু আজ আমার বাড়ির দরজায় গভীর রাতের অন্ধকারে হামলার সাহস দেখিয়েছে কাপুরুষের দল! এরা কারা? এদের শিকড়সহ উৎপাটনের দাবি জানাই।’
এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ভেবেছিলাম বাড়ির গেটে কিংবা গেটের বাইরে। কিন্তু গিয়ে দেখলাম একেবারে বাড়িতে হামলা হয়েছে। গতকালই ওনার অসুস্থ বাবা হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাসায় এসেছেন। জানি না শেষ কবে একজন শিক্ষকের বাড়িতে রাতের আঁধারে এভাবে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। আমরা শঙ্কিত, স্তম্ভিত।’
এদিকে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে এ সমাবেশের আয়োজন চলছে।