খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ভয়হীন ক্যাম্পাস, নিরাপদ ও স্বাভাবিক একাডেমিক পরিবেশ সৃষ্টি এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তির দাবি করেছে ছাত্রদল।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক (সহ-সভাপতির পদমর্যাদায়) মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়েছে।
বিবৃতি বলা হয়েছে, আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল প্রথমেই খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এ ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক ঘটনাবলীতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। আমরা চাই, কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা অনুযায়ী ভয়হীন ক্যাম্পাস, নিরাপদ, সুষ্ঠু ও সেশনজটমুক্ত স্বাভাবিক একাডেমিক পরিবেশ এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৌর্হাদ্যর্পূণ পরিবেশ বিরাজ করুক।
আরো পড়ুন:
‘কুয়েট উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত অনশন চলবে’
ঢাবিতে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে ‘টিকা’
অতি সম্প্রতি কুয়েটে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে গেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকায় ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে ছাত্রদলের ফরম সংগ্রহ করে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এলে পরিকল্পিতভাবে মব সৃষ্টির মাধ্যমে তাদের মারধর করা হয়। বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সোস্যাল মিডিয়ায় এর ভিডিও ফুটেজ রয়েছে।
মবের সঙ্গে জড়িত কিছু উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এ ঘটনাটি ক্যাম্পাসের ভেতরে এবং বাইরে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার ধারাবাহিকতায় মব সৃষ্টিকারীদের হাতে কুয়েটের শিক্ষকরাও লাঞ্ছিত হন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং শিষ্ঠাচার বহির্ভূত।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ছাত্রদল ঘটে যাওয়া প্রতিটি ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছে। একইসঙ্গে ছাত্রদল প্রত্যাশা করে, বিগত ফ্যাসিস্ট শাসনামলে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের মাধ্যমে ক্যাম্পাসগুলোতে যে ভয়ের সংস্কৃতি বিরাজ করছিল, মব কালচারের মাধ্যমে যেন সেটির পুনরুত্থান না ঘটে।
আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, সাম্প্রতিক সময়ে একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠী যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছাত্রদলকে জড়ানো বা ছাত্রদলের ওপর যেকোনোভাবে দায় চাপানোর একটি অসৎ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। আমরা তাদের এই হীন অপচেষ্টার নিন্দা জানাই।
ছাত্রদল বলছে, এ প্রেক্ষাপটে শিক্ষা, সম্মান ও শিক্ষার পরিবেশ রক্ষায় কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাহসী অবস্থানকে আমরা স্বাগত জানাই। আমরা মনে করি, কুয়েটের শিক্ষার্থীদের এই অবস্থান গুটিকয়েক ব্যক্তির রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য নয়; বরং গোটা শিক্ষাব্যবস্থার সুরক্ষার স্বার্থেই পরিচালিত হচ্ছে। এমতাবস্থায় ছাত্রদল ক্যাম্পাসে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছে।
আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি, ইউজিসির একটি প্রতিনিধি দল কুয়েটের পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শনে যাবেন। ছাত্রদল প্রত্যাশা করে, প্রতিনিধি দল সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে কুয়েটে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক সম্মান, স্নেহের সম্পর্ক ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে একটি নিরাপদ একাডেমিক পরিবেশ গড়ে তোলার ব্যাপারে আন্তরিক থাকবেন। একইসঙ্গে যেসব শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেটিকে পুনর্বিবেচনা করবেন।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ক পর ব শ ছ ত রদল
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় গোলের থ্রিলারে জমজমাট ড্র বার্সেলোনা-ইন্টারের
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল মানেই উত্তেজনার পারদ চড়া—আর বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মিলে সেটিকে নিয়ে গেল অন্য উচ্চতায়। কাতালানদের ঘরের মাঠ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বুধবার রাতে দর্শকরা উপভোগ করলেন এক দুর্দান্ত গোলবন্যার ম্যাচ। ম্যাচ শেষে ফল—৩-৩ গোলে ড্র।
মৌসুমের রেকর্ড ৫০ হাজার ৩১৪ দর্শকের সামনে ইউরোপীয় ফুটবলের এই মহারণে উভয় দলই তুলে ধরেছে আক্রমণাত্মক ফুটবল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালের ইতিহাসে ১৯৯৯ সালের পর এটিই প্রথম ম্যাচ যেখানে ছয়টি গোল হয়েছে এবং শেষ হয়েছে ড্রয়ে।
ম্যাচ শুরু হতে না হতেই চমকে দেয় ইন্টার মিলান। ম্যাচের মাত্র প্রথম মিনিটেই ডেনজেল ডামফ্রিজের ব্যাকহিল গোল দলকে এগিয়ে দেন মার্কাস থুরাম। এরপর ২১ মিনিটে আবারও দিমারকোর কর্নার থেকে ফ্রান্সেসকো আকেরবির সহায়তায় শ্বাসরুদ্ধকর অ্যাক্রোব্যাটিকে ব্যবধান বাড়ান ডামফ্রিজ।
তবে ঘুরে দাঁড়াতে দেরি করেনি বার্সা। দুই মিনিট পরই ইয়ামাল ডান দিক থেকে একক নৈপুণ্যে দুর্দান্ত গোল করে ব্যবধান কমান। প্রথমার্ধ শেষের আগে পেদ্রির ফ্লিকে রাফিনিয়ার নিয়ন্ত্রণ এবং তাতে ফেরান তোরেসের শটে গোল করে ২-২ সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয়ার্ধে লাউতারো মার্টিনেজের ইনজুরির পর মাঠে নামেন মেহেদি তারেমি। ৬০ মিনিটে কর্নার থেকে হেড করে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ডামফ্রিজ। কিন্তু দ্রুতই গোল শোধ করে বার্সা—ছোট কর্নার থেকে রাফিনিয়ার শট লাগে পোস্টে, সেখান থেকে গোলরক্ষক সোমারের পিঠে লেগে ঢুকে পড়ে জালে—ফলাফল ৩-৩। ৭৫ মিনিটে হেনরিখ মিখিতারিয়ান গোল করে ইন্টারকে আবারও এগিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু ভিএআরের চোখে পড়ে সামান্য অফসাইড, বাতিল হয় সেই গোল।
এখন সবকিছু নির্ভর করছে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচের ওপর, যা হবে ৬ মে, মঙ্গলবার, ইন্টারের ঘরের মাঠ জিউসেপ্পে মিয়াজ্জায়। ওই ম্যাচেই জানা যাবে ফাইনালে কারা প্যারিস সেইন্ট জার্মেই ও আর্সেনালের মধ্যকার বিজয়ীর মুখোমুখি হবে।