‘তিন মাস হইলো মোর ছইলটার খবর পাও নাই। তারা ছইলটাক কোটে (কোথায়) থুইচে (রেখেছে) তাও জানি না। গুম করি থুইল (রাখলো) নাকি, খুন করলো, সেই খবরও পাইনুনা। তোরা মোর ছইলোক আনি দ্যান বাবা।’ 

কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন মিঠাপুকুরের মির্জাপুর ইউনিয়নের পশ্চিম মুরাদপুর গ্রামের এক নারী। তাঁর নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে অপহরণ করা হয় তিন মাস আগে। এখনও তাকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় মামলা করেছেন তার মা। 

অভিযোগ থেকে জানা গেছে, বড় হযরতপুর ইউনিয়নের নানকর রসুলপুর গ্রামের গৌরভ মহন্ত ওই শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে উত্ত্যক্ত করত। প্রতিবাদ করলে সে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এর পর বন্ধুদের নিয়ে উত্ত্যক্ত করা শুরু করে। চার মাস আগে বিষয়টি ওই শিক্ষার্থী তার মাকে জানায়। অভিভাবকরা গৌরভের পরিবারকে বিষয়টি জানায়। গত ২৬ জানুয়ারি রাত ১০টায় ওই শিক্ষার্থী তার শোবার ঘরে লেখাপড়া করছিল।

মা পাশের ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় গৌরভ কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে শিক্ষার্থীর ঘরে ঢুকে মুখ চেপে ধরে বাইরে নিয়ে যায়। চিৎকার শুনে মা বাইরে এসে দেখেন গৌরভসহ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেও তারা মেয়েকে রক্ষা করতে পারেননি। পরদিনই মিঠাপুকুর থানায় গৌরভ চন্দ্র মহন্তসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন তারা। 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বৈরাতী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আমিনুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীকে উদ্ধার ও আসামিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

‘নতুন কৌশলে’ তেল আবিব ও হাইফায় ইরানের হামলা

‘নতুন কৌশলে’ ইসরায়েলের তেল আবিব ও বন্দরনগরী হাইফায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় চালিয়েছে ইরান। স্থানীয় সময় আজ সোমবার ভোররাতে তেল আবিবের আকাশে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্রের দৃশ্য দেখা যায়। একই সময় জেরুজালেমেও শোনা যায় বিস্ফোরণের শব্দ। হামলায় পাঁচ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। খবর রয়টার্সের।

ইসরায়েলের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি লক্ষ্য করে চালানো আগাম হামলার পাল্টা জবাব হিসেবেই তেহরান এই আঘাত হানে।

জাতীয় জরুরি সেবা বিভাগ জানিয়েছে, সর্বশেষ ইরানি হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছে। শুক্রবার থেকে এ পর্যন্ত ইরানি হামলায় অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছে। হামলায় আরও অন্তত ১০০ জন আহত হয়েছে।

হাইফায় ধ্বংসস্তূপে উদ্ধার অভিযান চলছে। জরুরি বিভাগ জানিয়েছে, সেখানে প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছে। বন্দরের কাছে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম।

তেল আবিবের একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় কয়েকটি আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। এই এলাকার মাত্র কয়েকশ মিটার দূরেই মার্কিন দূতাবাসের একটি শাখা অবস্থিত। দূতাবাস ভবনে কিছু ক্ষতি হলেও কেউ আহত হয়নি বলে জানান মার্কিন রাষ্ট্রদূত।

এদিকে ইরানের বিপ্লবী গার্ড (আইআরজিসি) জানিয়েছে, সর্বশেষ হামলায় তারা এমন একটি ‘নতুন কৌশল’ ব্যবহার করেছে। এর ফলে ইসরায়েলের বহুস্তরবিশিষ্ট প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়েছে।

আইআরজিসির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই অভিযানে ব্যবহৃত উদ্যোগ ও সক্ষমতাগুলো যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা শক্তির সর্বোচ্চ সমর্থন এবং আধুনিকতম প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি সত্ত্বেও, ইসরায়েলের অধিকৃত ভূখণ্ডের লক্ষ্যবস্তুতে সফলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এই হামলা সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি । তবে তারা বারবার বলে আসছে, তাদের ‘আয়রন ডোম’ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শতভাগ সুরক্ষিত নয় এবং সামনে আরও কঠিন সময় আসছে।

ইরানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত ২২৪ জন। নিহতদের ৯০ শতাংশই বেসামরিক নাগরিক বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

সোমবার সকালে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা আবারও ইরানের বিপ্লবী গার্ড ও সামরিক বাহিনীর কমান্ড সেন্টারগুলোতে হামলা চালিয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ