নির্দোষ দাবি প্রতিপক্ষের, হয়নি মামলা
Published: 30th, April 2025 GMT
নড়াইলের কালিয়ায় মোটরসাইকেল চালক রফিকুল মোল্যার (৪০) লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হয়নি। এ ঘটনায় নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছে প্রতিপক্ষ। গতকাল বুধবার সকালে আয়োজিত মানববন্ধনে তারা অভিযোগ করেন, তাদের পক্ষের ফরিদ হত্যা মামলা দুর্বল করতে ও ফাঁসাতে পরিকল্পিতভাবে রফিকুলকে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত রফিকুল মোল্যা উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের বাসিন্দা। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে একই গ্রামের প্রতিপক্ষ রিকাইল শেখের বাড়ির পেছনে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। নড়াইল সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে রাতেই রফিকুলের দাফন হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে একই গ্রামের মিলন মোল্যার লোকজনের সঙ্গে আফতাব মোল্যার পক্ষের বিরোধ দীর্ঘদিনের। এর জেরে ১১ এপ্রিল দু’পক্ষের সংঘর্ষে খুন হন ফরিদ মোল্যা (৫৭)। এ ঘটনায় বাবলা-হাসলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক পিকুলকে প্রধান আসামি করে ৪৫ জনের বিরুদ্ধে কালিয়া থানায় হত্যা মামলা হয়। নিহত রফিকুল মামলাটির ১৮ নম্বর আসামি। এই দু’পক্ষের মধ্যে ২০২৪ সালের ১ ও ৪ সেপ্টেম্বর দুই দফায় সংঘর্ষ হয়।
বাবলা-হাসলা ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হকের লোকজনের বিরুদ্ধে এ হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এর পরই চলতি মাসে দুটি হত্যাকাণ্ড ঘটল। স্থানীয় বাসিন্দাদের দেওয়া তথ্যমতে, ফরিদ মোল্যা হত্যার জেরে আসামি পক্ষের ২৫টি পরিবারের প্রায় ৫০টি বাড়িতে আগুন, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ২৭ এপ্রিল রফিকুলের মা ফাতেমা বেগম কালিয়া থানায় মামলা করেন। এতে আসামি করা হয় প্রতিপক্ষ আফতাব মোল্যা পক্ষের লোকজনকে। এর এক দিন পরই তাঁর ছেলের লাশ পাওয়া যায়।
রিকাইল শেখের বাড়ির সামনে তাঁর পরিবার ও এলাকাবাসীর ব্যানারে বুধবার সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্য দেন মুস্তারি বিল্লাহ, রিকাইল শেখের মেয়ে ইভা খানম, ফিরোজ মোল্যা, হানেফ মোল্যা, আব্দুল গফুর ও জামিলা বেগম। তারা অভিযোগ করেন, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ও ফরিদ হত্যা মামলা দুর্বল করতে পরিকল্পিতভাবে রফিকুলকে হত্যা করা হয়েছে। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্ত করলে ঘটনার প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসবে।
এ সময় বক্তারা দাবি করেন, রফিকুল হত্যার জেরে মঙ্গলবার রাতে ওই গ্রামের পূর্বপাড়া হামলা হয়। এতে বেশ কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে ২০০ মণ ধান ও ১৫টি গরু লুট করা হয়েছে।
রফিকুলের শ্যালক শামিম আহমেদ প্রতিপক্ষের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা শোকাহত পরিবার নিয়ে ব্যস্ত। কারা কোথায় কী করছে (ভাঙচুর), তা আমাদের জানা নেই।’ রফিকুল হত্যায় তারা এখনও মামলা করেননি বলেও জানান।
রফিকুলের স্ত্রী অজুহা বেগমের ভাষ্য, সোমবার মাগরিবের আজানের পর স্বামীর সঙ্গে ফোনে সর্বশেষ কথা হয় তাঁর। রাত ৩টার দিকে কল দিলে ফোন নম্বরে সংযোগ পাননি। মঙ্গলবার সকালে স্বামীর লাশ উদ্ধারের খবর পান।
কালিয়া থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, রফিকুল হত্যার বিষয়টি রহস্যজনক। এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই এলাকায় কোনো বাড়ি ভাঙচুর বা লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি। কিছু লোক গবাদি পশু ও বাড়ির মালপত্র সরিয়ে নিয়েছেন বলে জেনেছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এ ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন
ফতুল্লার লালপুর পৌষাপুকুর পাড় এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী সমাধানের জন্য মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
আগামী দুই দিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে সড়ক অবরোধ সহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে মানববন্ধন থেকে। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী ঢাকা-নারায়নগঞ্জ পুরাতন সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। এতে করে ঢাকা-নারায়নগঞ্জ পুরাতন সড়কের উভয় পাশে যানবাহন বন্ধ হয়ে যানজটের সৃস্টি হয়।
বুধবার সকাল ১০ টার দিকে ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুস্ঠিত হয়। ১১ টার দিকে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ঘটনাস্থলে এসে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা হয়েছে। তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন আজ দুপুরের পর এলাকাবাসীর সাথে নির্বাহী কর্মকর্তা কথা বলবেন তাদের সমস্যার কথা শুনবেন এবং দ্রুতই তা সমাধানের জন্য কাজ করবেন।
এ সময় লালপুর পৌষাপুকুরপাড় পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি মোসলেম উদ্দিন মুসা বলেন জলাবদ্ধতার কারনে মুসুল্লিরা নামাজ পরতে পারছেনা,কর্মজীবিরা কাজে যেতে পারছেনা,স্কুল -কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীরা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছেনা,নোংরা পানির কারনে ঘরে ঘরে পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ হয়ে পরেছে।
আমাদের কে আশ্বাস করেছিলো সেনাবাহিনী কতৃক যে পাম্প বসানো হয়েছিলো সেটা চালু হলে আমাদের দ্ঃূক কস্ট লাঘব হবে। কিম্ত সে পাম্প চালু হলেও আমাদের কস্ট শেষ হয়নি। সেই পাম্প আমাদের কোন কাজে আসেনি।
আমরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারক লিপি দিয়েছি তারা এসে দেখেও গেছে কিন্ত আজো সমস্যার সমাধান করা হয়নি। বিগত সরকারের আমলে তখনকার চেয়ারম্যান, এমপি সাহেবের নিকট গিয়েছি। শামীম ওসমান এসে দেখে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে। তা শুধু কথার কথাই ছিলো। কিন্ত কোন কাজে আসেনি।
ইউপি সদস্য মাঈনুদ্দিন জানায়, দীর্ঘদন যাবৎ আমরা এই সমস্যা আছি। মৃত মানুষের লাশ পযন্ত দাফন করতে পারছিনা। মসজিদের ভিতরে পানি নামাজ পরতে পারছিনা। রাস্তায় বের হতে পারছিনা।
আমাদের কোরবানী ঈদে পশু কোরবানী দিতে হয় ছাদের ওপরে নতুবা অন্য এলাকায় গিয়ে। এ সব কিছুই সরকারের সকল বিভাগের কর্মরত কর্তার জানে। কিন্ত শুধু আশ্বাস পেয়ে গেছি। কোন সমাধান পাইনি তাই আজ বাধ্য হয়ে রাস্তায় নামতে হয়েছে আমাদেরকে।
আমরা দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতার কবলে রয়েছি। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। ফতুল্লায় এতো উন্নয়ন হয়, কিন্তু লালপুর পৌষাপুকুর পাড়ের জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী কোন সমাধান হচ্ছেনা। আমরা চাই এই জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী সমাধান হোক।
ব্যবসায়ী হাবিব জানায়, আমাদের সমস্যা দীর্ঘদিনের। হাসিনা সরকারের আমলে আমাদের কোন কাজ হয় নাই। আমরা সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে স্মারক লিপি দিয়েছি। কিন্ত কোন কাজ হয়নি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি কোন প্রকার টেক্স আর দিবোনা।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, লালপুর- পৌষাপুকুরপাড় পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক আঃ বারী, আজাদুর রহমান আজাদ,আলামিন বাগ পঞ্চায়েতের সাধারণ সম্পাদক রফিক, লালপুর আলামিন বাগ পঞ্চায়েতের সভাপতি মো. জনি, শামীম।