পহেলগামে পর্যটকদের লক্ষ্য করে চালানো সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। পাকিস্তান জানিয়েছে, তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে যে ভারত সামরিক পদক্ষেপ নিতে চায় এবং সেটা আগামী ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে হতে পারে।

লন্ডন-ভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের তথ্য অনুসারে, পারমাণবিক অস্ত্রধারী দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশীদের প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং অস্ত্রাগারের এক নজর এখানে দেওয়া হল। 

সেনা সদস্য

ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনীতে ১৪ লাখ সক্রিয় সেনা রয়েছে। এদের মধ্যে সেনাবাহিনীতে ১২ লাখ ৩৭ হাজার, নৌবাহিনীতে ৭৫ হাজার ৫০০, বিমান বাহিনীতে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৯০০ এবং উপকূলরক্ষী বাহিনীতে ১৩ হাজার ৩৫০ জন সদস্য রয়েছে।

সেনার দিক থেকে পাকিস্তানের শক্তি কম। দেশটির মোট সেনা সদস্য সাত লাখেরও কম। এদের  মধ্যে ৫ লাখ ৬০ হাজার  সেনাবাহিনীতে, ৭০ হাজার  বিমান বাহিনীতে এবং ৩০ হাজার নৌবাহিনীতে রয়েছে।

গ্রাউন্ড ফোর্স

ভারতের অস্ত্রাগারে ৯ হাজার ৭৪৩টি কামান রয়েছে, যেখানে পাকিস্তানের ৪ হাজার ৬১৯টি কামান রয়েছে। পাকিস্তানের ২ হাজার ৫৩৭টি ট্যাঙ্ক রয়েছে। সেই তুলনায় ভারতের ৩ হাজার ৭৪০টি যুদ্ধ ট্যাঙ্ক রয়েছে।

বিমান বাহিনী

ভারতের ৭৩০টি যুদ্ধ-সক্ষম বিমান থাকলেও, পাকিস্তানের বহরে এই সংখ্যা ৪৫২টি।

নৌবাহিনী

ভারতের নৌবাহিনীতে ১৬টি সাবমেরিন, ১১টি ডেস্ট্রয়ার, ১৬টি ফ্রিগেট এবং দুটি বিমানবাহী রণতরী রয়েছে। অথচ পাকিস্তানের নৌবাহিনীতে মাত্র আটটি সাবমেরিন এবং ১০টি ফ্রিগেট রয়েছে।

পারমাণবিক অস্ত্র

ভারতের কাছে ১৭২টি পারমাণবিক ওয়ারহেড আছে। পাকিস্তানের কাছে এর প্রায় সমান সংখ্যক- ১৭০টি ওয়ারহেড আছে।

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’

ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।

হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।

আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’

গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’

আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ