জাহিদুল হত্যায় বৈষম্যবিরোধী নেতৃত্ব ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে: ছাত্রদল সভাপতি
Published: 24th, April 2025 GMT
রাজধানীর বেসরকারি প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম (পারভেজ) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার বেলা দুইটার দিকে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বিরুনী ইউনিয়নের কাইচান গ্রামে নিহত জাহিদুলের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ছাত্রদলের সভাপতি বলেন, ‘জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে এবং দায়সারা গোছের কথা বলেছে। আমি আশা করছি, একটি হত্যাকাণ্ড নিয়ে মিথ্যাচার করায় ধীরে ধীরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের তাঁদের ওপর যে সামান্যতম আস্থা রয়েছে, সেই আস্থার সংকট দেখা দেবে। যেকোনো ঘটনায় আমি তাঁদের সঠিক তথ্য প্রদানের আহ্বান জানাই এবং এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে তাঁদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাই। তাঁদের নেতা-কর্মী যে–ই হয়ে থাকুক না কেন, তাঁদের বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। আমি বিশ্বাস করি তাঁরা সেই ভূমিকা পালন করবেন।’
রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘জাহিদুলকে হত্যার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষ নেতৃত্ব সরাসরি বনানী থানায় প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করেছেন। যাঁরা সরাসরি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব, তাঁদের যেন মামলার আসামি করা না হয়, সে জন্য সব দিক দিয়ে প্রেশার ক্রিয়েট করেছেন। এগুলো আপনারা দেখেছেন। পরে রাতে তাঁরা যে প্রেস কনফারেন্স করেছেন, এটিকে আমি নেতৃত্বের ইম্যাচুরিটি ও নেতৃত্বের ব্যর্থতা হিসেবে দেখব। তাঁরা সরাসরি অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, আমরা নাকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বৈষম্যবিরোধী নেতাদের জড়িত করেছি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পাবলিশ হলো। তখন দেখা গেল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুজন সরাসরি জড়িত এবং বেশ কয়েকজন আশপাশে ছিল। এরপর তাঁরা আর কোনো স্টেপ (পদক্ষেপ) নেননি। আমি আশা করব, তাঁদের মাত্র সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়েছে। তাঁদের আন্দোলন সংগ্রামের অভিজ্ঞতা খুবই কম। আমি বিশ্বাস করি, তাঁরা ধীরে ধীরে এগুলোর পরিপূর্ণতা লাভ করবেন।’
আজ নেতা-কর্মীদের নিয়ে জাহিদুলের বাড়িতে গিয়ে বাবা-মাকে সান্ত্বনা দিয়ে নিহত ব্যক্তির কবর জিয়ারত করেন রাকিবুল ইসলাম। এ সময় জাহিদুলের বাবা কুয়েতপ্রবাসী জসিম উদ্দিন ও মা পারভীন আক্তার ছেলের হত্যায় জড়িতদের বিচারে পাশে থাকার জন্য ছাত্রদল সভাপতির সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম বলেন, বিগত সাড়ে ১৫ বছর তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে ক্যাম্পাসে মব কালচার তৈরি করেছিল। সেই বাস্তবতায় এখনো বাংলাদেশের বেশ কিছু ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের অনুসারীরা স্বপ্ন দেখেন, তাঁরা আবার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসন হবেন। দুই হাজারের বেশি ছাত্র-জনতাকে হত্যার পর তাঁদের এ ধরনের স্বপ্ন দেখা কতটা বিভ্রম হলে সম্ভব। এ জন্য জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সেসব নেতৃত্ব অগ্রভাগে ছিলেন, তাঁদের অনেক বেশি দায় আছে। তাঁরা যেন যেকোনো ছোটখাটো বিষয়ে প্রতিক্রিয়া না দেখান, যার কারণে মব কালচার তৈরি হয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড জাতি তাদের কাছে প্রত্যাশা করে না।
রাজধানীর বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম (২২) নিজ ক্যাম্পাসের সামনে গত শনিবার ইঙ্গিতপূর্ণ হাসাহাসির জেরে ছুরিকাঘাতে খুন হন। জাহিদুল ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর পরিবার ও স্বজনেরাও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ক ব ল ইসল ম ছ ত রদল কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত নেতার অনুসারীদের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে বিএনপির স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিন দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন তাঁর অনুসারী নেতা-কর্মীরা। আজ সোমবার রাত ৯টার দিকে শহরের মজমপুর রেলগেটে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে এ বিক্ষোভ করেন তাঁরা।
সেখানে বিক্ষোভকারীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভের পাশাপাশি প্রতিবাদ মিছিলও করেন। এ ছাড়া সদর উপজেলার মধুপুর-লক্ষীপুর এলাকাতেও সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকেরা সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন।
বিক্ষোভকারী নেতা-কর্মীদের দাবি, সোহরাব উদ্দিন কুষ্টিয়া-৩ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য। তিনি দীর্ঘদিন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এর বদলে এখানে অন্য কাউকে প্রার্থী হিসেবে মেনে নেওয়া হবে না। তাই অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সোহরাব উদ্দিনকে পুনরায় মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।
এর আগে সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব জাকির হোসেন সরকার।
এ বিষয়ে মনোনয়নবঞ্চিত সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘শুনেছি আমার সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন। আমি শহরের বাইরে আছি।’ এর বেশি কথা বলেননি তিনি।
জানতে চাইলে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জাকির হোসেন সরকার বলেন, কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যিনি মনোনয়ন পাবেন, তাঁর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তবে এ নির্দেশনা যদি কেউ না মানেন, তাহলে কেন্দ্র ব্যবস্থা নেবে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হাসেন বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণ করেছি।’
কুষ্টিয়ার অন্য তিনটি সংসদীয় আসনে বিএনপির প্রার্থীরা হলেন কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজা আহম্মেদ বাচ্চু মোল্লা, কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভোড়ামারা) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাগীব রউফ চৌধুরী, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি।