ওমানের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশা শেষ বাংলাদেশের
Published: 25th, April 2025 GMT
শেষ বাঁশির পর বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের কেউ কেউ হতাশায় শুয়ে পড়লেন টার্ফে। কেউ মাথা নিচু করে বসে রইলেন, কেউ নির্বাক দাঁড়িয়ে। এশিয়ান হকি ফেডারেশন (এএইচএফ) কাপে টানা চারবারের চ্যাম্পিয়নদের এবার ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে। আশরাফুল, পুষ্কর খীসাদের সব হাসি কেড়ে নিয়েছে ওমান। জাকার্তায় আজ টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে বাংলাদেশ ৫-৪ গোলে হেরে গেছে ওমানের কাছে। জয়ের পর উল্লাসে মেতে ওঠেন ওমানের খেলোয়াড়েরা।
প্রথম কোয়ার্টারে ওমান এগিয়ে গিয়েছিল। পরক্ষণেই সেই গোল শোধ করেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় কোয়ার্টারে বাংলাদেশও এগিয়ে যায় ২-১ ব্যবধানে। এরপর ওমানের দুই গোলে স্কোরলাইন ৩-২। তৃতীয় কোয়ার্টারের শুরুতেই ৪-২ করে ওমান। বাংলাদেশ ৪-৩ করে ব্যবধান কমায়। চতুর্থ কোয়ার্টারে পঞ্চম গোল করে ম্যাচে নিজেদের প্রাধান্য ধরে রাখে ওমান। শেষ দিকে পেনাল্টি স্ট্রোকে বাংলাদেশ ৫–৪ করলেও লাভ হয়নি।
ওমানের সঙ্গে ফাইনালে বাংলাদেশের দেখা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু চার জয়ে বাংলাদেশ ‘বি’ গ্রুপের সেরা হলেও ওমান ‘এ’ গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। চায়নিজ তাইপের সঙ্গে গোলগড়ে পেছনে পড়ে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে সেমিতে ওঠে।
ওমানকে ফাইনালে হারিয়েই ২০২২ সালে সর্বশেষ এএইচএফ কাপ জেতে বাংলাদেশ।
তবে দুই দলের পরের দেখায় ২০২৩ সালের অক্টোবরে এশিয়ান গেমসে ওমানের কাছে হেরে বাংলাদেশ হয়ে যায় অষ্টম। কয়েক বছর ধরেই হকিতে ওমান বাংলাদেশের বড় চ্যালেঞ্জ। শেষ পর্যন্ত সেই ওমানের কাছে হেরেই এই প্রথম এশিয়ার দ্বিতীয় সারির দলগুলোর টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠা হলো না বাংলাদেশের।
ওমান নিজেদের দেশে টুর্নামেন্ট খেলেছে সম্প্রতি। পাকিস্তানে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে গেছে জাকার্তা। ওদিকে গত এশিয়ান গেমসের ২২ মাস পর এই প্রথম বাংলাদেশ মাঠে নেমেছে, সেটাও কোনো প্রস্তুতি ম্যাচ ছাড়াই। অন্যরা যখন ভালো প্রস্তুতি নিচ্ছে, বাংলাদেশ তখন আর্থিক সংকটের কথা বলে কোনো ম্যাচ খেলেনি। তারপরও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন কোচ মামুন উর রশিদ। কিন্তু ওমান আগের চেয়েও শক্তিশালী হয়েছে, বাংলাদেশ রয়ে গেছে আগের জায়গাতেই।
১৯৯৭ ও ২০২২ সালে প্রথম দুটি এএইচএফ কাপে বাংলাদেশ খেলেনি। এরপর ২০০৮, ২০১২, ২০১৬ ও ২০২২ সালে চারবারই চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। এবার বড়জোড় তৃতীয় হতে পারে স্থান নির্ধারণী ম্যাচ জিতলে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পেশায় বাসচালক, আড়ালে করেন ইয়াবার কারবার
আট বছর ধরে গাড়ি চালানোর পেশায় আছেন মো. শাহীন। প্রথমে চালাতেন ট্রাক, এখন যাত্রীবাহী বাস। তবে এটা তার মূল কারবারের আড়াল মাত্র। বাস চালানোর আড়ালে তিনি কক্সবাজার থেকে ঢাকায় আনেন ইয়াবার বড় চালান। প্রতি চালানে ১০–২০ হাজার পিস ইয়াবা থাকে। এগুলো পৌঁছানোর বিনিময়ে তিনি পান মোটা অঙ্কের টাকা। প্রতি মাসে গড়ে ছয়টি চালান এনে তিনি অন্তত ছয় লাখ টাকা পান। ফলে লাভজনক এ কারবারে তিনি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছেন।
সম্প্রতি রাজধানীর পূর্ব রামপুরা এলাকা থেকে বাসচালক শাহীন ও সুপারভাইজার সঞ্জিত রাজবংশীকে গ্রেপ্তার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। ওই সময় বাসটিতে তল্লাশি চালিয়ে ১৫ হাজার ৬০০ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। এই চালানটি ঢাকার গাবতলী এলাকায় পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল বলে জানা গেছে।
ডিএনসি ঢাকা মহানগর উত্তরের উপপরিচালক শামীম আহম্মেদ জানান, আন্তঃজেলা বাসের চালক–হেলপারদের একটি অংশ মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়েছে। এ কারণে বিভিন্ন রুটের পরিবহনকর্মীদের মাদকসংশ্লিষ্টতার তথ্য পেতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। এরপর গোপন তথ্যের ভিত্তিতে কক্সবাজার থেকে আসা শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস পূর্ব রামপুরার মোল্লা টাওয়ারের সামনে থামানো হয়। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদে চালক ও সুপারভাইজার স্বীকার করেন, তাদের কাছে মাদকদ্রব্য আছে। এরপর তাদের দেখানো অনুযায়ী চালকের আসনের নিচ থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছেন ডিএনসি ধানমন্ডি সার্কেলের পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন।
ডিএনসি ঢাকা মহানগর উত্তরের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, শাহীনের ভাষ্য অনুযায়ী, দুই বছর ধরে তিনি বাসে মাদক পরিবহনের কাজ করেন। এর আগে ট্রাক চালানোর সময় অন্য চালকদের মাধ্যমে এ কারবারের বিষয়ে জানতে পারেন। পরে টেকনাফের মাদক কারবারিদের সঙ্গে তার যোগাযোগ ও সখ্য গড়ে ওঠে। তিনি প্রতি ১০ হাজার পিস ইয়াবা ঢাকায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য আনুমানিক এক লাখ টাকা করে পান। এবারের চালানের জন্য পেতেন দেড় লাখের কিছু বেশি। তবে পৌঁছানোর আগেই তিনি ও তার সহযোগী ধরা পড়েন।
অভিযান সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইয়াবার চালানের প্রেরক ও প্রাপকসহ আরও কয়েকজনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। তাদের গ্রেপ্তার করা গেলে পুরো চক্রটিকে শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।