প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তোলা নারীর মৃত্যু, পরিবার বলছে আত্মহত্যা
Published: 26th, April 2025 GMT
যুক্তরাজ্যের প্রিন্স অ্যান্ড্রু এবং কুখ্যাত যৌন নিপীড়ক ও নারী পাচারকারী জেফরি এপস্টেইনের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আনা নারী ভার্জিনিয়া জিউফ্রির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ৪১ বছর বয়সী এই নারী আত্মহত্যা করেছেন।
যৌন নিপীড়নের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত জেফরি এপস্টেইন ও তাঁর সাবেক প্রেমিকা জিসলেন ম্যাক্সওয়েলের বিরুদ্ধে সবচেয়ে জোরালো ও প্রকাশ্য অভিযোগকারীদের একজন ছিলেন জিউফ্রি। তিনি দাবি করেছিলেন, তাঁর বয়স যখন ১৭ বছর ছিল, তখন তাঁকে ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স অ্যান্ড্রুর কাছে নেওয়া হয়েছিল। তবে প্রিন্স অ্যান্ড্রু এসব অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করেছেন।
জিউফ্রির পরিবারের পক্ষ থেকে গতকাল শুক্রবার একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘তিনি (জিউফ্রি) যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একজন সাহসী যোদ্ধা ছিলেন এবং নির্যাতনের চাপ সহ্য করাটা তাঁর পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছিল না। জীবনভর যৌন নিপীড়ন ও পাচারের শিকার হয়ে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।’
পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় নিজের খামারবাড়িতে মারা গেছেন এই নারী। তিনি তিন সন্তানের মা ছিলেন।
পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ বলছে, শুক্রবার রাতে নিরগ্যাবি এলাকার একটি বাড়িতে এক নারীর অচেতন অবস্থায় থাকার খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে যায়।
পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে ৪১ বছর বয়সী ওই নারীকে ঘটনাস্থলেই মৃত ঘোষণা করা হয়।’
জিউফ্রির মৃত্যুর কারণ জানতে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ‘এটি সন্দেহজনক মৃত্যু নয়।’
তিন সপ্তাহ আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট দেন জিউফ্রি। সেখানে তিনি একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়ার কথা লিখেছিলেন। যদিও পরিবার পরে জানায়, এটা প্রকাশ করার ইচ্ছা তাঁর ছিল না। স্থানীয় পুলিশ পরে দুর্ঘটনার তীব্রতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে।
প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিজ্ঞতা প্রকাশ্যে আনার পর আলোচনায় এসেছিলেন জিউফ্রি। তিনি মি টু আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
জিউফ্রি অভিযোগ করেছিলেন, এপস্টেইন ও জিসলেন ম্যাক্সওয়েল তাঁকে কিশোর বয়সে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর কাছে পাচার করেছিলেন।
আরও পড়ুনকিশোরীদের নিয়ে এপস্টেইনের ব্যক্তিগত দ্বীপে সময় কাটান প্রিন্স অ্যান্ড্রু০৬ জানুয়ারি ২০২৪যদিও প্রিন্স অ্যান্ড্রু সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ২০২২ সালে তিনি জিউফ্রির সঙ্গে আদালতের বাইরে রফাদফা করেন। এর অংশ হিসেবে এপস্টেইনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে প্রিন্স অ্যান্ড্রু দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে তিনি কোনো দোষ স্বীকার বা ক্ষমা প্রার্থনা করেননি।
মার্কিন নাগরিক জিউফ্রি বলেছিলেন, ২০০০ সালে ব্রিটিশ অভিজাত সমাজের পরিচিত মুখ ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। এরপর তিনি এপস্টেইনের সঙ্গে পরিচিত হন এবং বহু বছর ধরে তাঁর ও তাঁর সহযোগীদের মাধ্যমে নির্যাতনের শিকার হন।
যুক্তরাজ্যের বর্তমান রাজা তৃতীয় চার্লসের ছোট ভাই প্রিন্স অ্যান্ড্রু। প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ও প্রিন্স ফিলিপ তাঁর মা-বাবা। যৌন অপরাধের মামলায় বিচারের অপেক্ষায় থাকা জেফরি এপস্টেইন ২০১৯ সালে আত্মহত্যা করেছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ব র র কর ছ ন র বয়স
এছাড়াও পড়ুন:
রাজনীতিতে না জাড়ানোর কারণ জানালেন প্রীতি জিনতা
বলিউড অভিনেত্রী প্রীতি জিনতা এখন অভিনয়ে অনিয়মিত। অভিনয়ে তাকে দেখা না গেলেও নিজের ক্রিকেট দলের হয়ে মাঠে তাকে প্রায়ই দেয়া যায়। মাঝে গুঞ্জন উঠেছিলে রাজনীতিতে যোগ দিচ্ছেন তিন। অবশ্য এবিষয়ে টুঁশব্দও করেননি এই অভিনেত্রী।
এদিকে মাস তিনেক আগে কংগ্রেসের পক্ষ অভিযোগ তোলা হয়েছিল, প্রীতি জিনতার ১৮ কোটি টাকার ঋণ নাকি মকুফ করে দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। শুধু তাই নয়, প্রীতি নাকি তার সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট বিজেপির হাতে সঁপে দিয়েছেন- এমন অভিযোগও ওঠে। এরপর বলিউড নায়িকার রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার জল্পনা শুরু হয়।
সম্প্রতি এক্স হ্যান্ডলে প্রীতি জিনতাকে একজন জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনি কি ভবিষ্যতে বিজেপিতে যোগ দেবেন? আপনার গত কয়েক মাসের টুইট দেখে তো তেমনটাই মনে হচ্ছে। জবাবে অভিনেত্রী বলেন, ‘সোশাল মিডিয়ায় ব্যবহারকারীদের এটাই একটা সমস্যা। সবাই এত বিচার করতে বসে যান সবকিছু নিয়ে। আমি যেমনটা আগে বলেছি, মন্দিরে, মহাকুম্ভে যাওয়া কিংবা নিজের পরিচয় নিয়ে আমি গর্বিত। তার মানে এই নয় যে এসমস্ত কারণে আমি বিজেপিতে যোগ দেব।’
প্রীতি বলেন, ‘ভারতের বাইরে থাকার ফলে আমি দেশের প্রকৃত মূল্য উপলব্ধি করতে পেরেছি এবং আর পাঁচজন ভারতীয়র মতোই গর্ববোধ করি আমার দেশকে নিয়ে।’
রাজনীতিতে না আসার কারণ গত ফেব্রুয়ারি মাসেও জানিয়েছিলেন প্রীতি জিনতা। সেসময় তিনি বলেন, ‘রাজনীতি আমার দ্বারা হবে না। বিগত কয়েক বছরে একাধিক রাজনৈতিক দল আমাকে টিকিট দিতে চেয়েছে। এমনকি রাজ্যসভার আসনের প্রস্তাবও এসেছিল। তবে আমি বিনম্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছি। কারণ, আমার ইচ্ছে নেই। আর আমাকে ‘সৈনিক’ বললেও অতিরঞ্জিত হবে না। কারণ, আমি একজন আর্মি পরিবারের সন্তান। আমার বাবা সৈনিক এবং আমার দাদাও। আর্মি পরিবারের সন্তান হওয়ায় আমাদের মানসিকতা খানিক আলাদা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নিজেদের উত্তর ভারতীয়, দক্ষিণ ভারতীয় কিংবা হিমাচলী বা বাঙালি বলে ভাবি না, আমাদের পরিচয় শুধুমাত্র ভারতীয়। আর হ্যাঁ, দেশভক্তি আমাদের রক্তে।’ সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন।