রাবির ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ
Published: 26th, April 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষার ‘এ’ ইউনিটের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে এ ফল প্রকাশ করা হয়।
কলা, আইন, সামাজিক বিজ্ঞান ও চারুকলা অনুষদভুক্ত ২৭টি বিভাগ এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট ‘এ’ ইউনিটের অন্তর্ভুক্ত। রাবির ভর্তি-সংক্রান্ত ওয়েবসাইট https://application.
‘এ’ ইউনিটে মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ৯৬ হাজার ১৬২ জন। গ্রুপ-১ এর ৪৮ হাজার ৮২ জনের মধ্যে ৪১ হাজার ১১৭ জন এবং গ্রুপ-২ এর ৪৮ হাজার ৮০ জনের মধ্যে ৪১ হাজার ৩১৩ জন পরীক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় উপস্থিত ছিলেন। গ্রুপ-১ এ ১৭ হাজার ৭০৩ জন (৪৩.০৬%) এবং এবং গ্রুপ-২ এ ১৫ হাজার ৮২৬ জন (৩৮.৩১%) জন পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হন।
প্রাথমিক ফলাফলে ন্যূনতম ৪০ নম্বরপ্রাপ্ত পরীক্ষার্থীদের মধ্যে যারা চারুকলা অনুষদভুক্ত তিনটি বিভাগে (১. চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগ, ২. মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগ, ৩. গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগ) এবং কলা অনুষদভুক্ত সংগীত বিভাগ ও নাট্যকলা বিভাগে ভর্তি হতে ইচ্ছুক, তাদেরকে ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য আগামী ২৬ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে অনলাইনে নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। ফরম পূরণের ওয়েবলিংক: https://admission.ru.ac.bd/ ।
এসব বিভাগের ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ কোনো পরীক্ষার্থীর ‘এ’ ইউনিটভুক্ত অন্য বিভাগে মেধা অনুসারে ভর্তির ক্ষেত্রে বাধা হবে না। সংগীত বিভাগ ও নাট্যকলা বিভাগের ব্যবহারিক পরীক্ষা ১১, ১২, ১৩ মে, ২০২৫ তারিখে হবে। এ দুই বিভাগের ব্যবহারিক পরীক্ষার বিস্তারিত সময়সূচি ৫ মে, ২০২৫ তারিখে জানানো হবে। চারুকলা অনুষদের ব্যবহারিক (ড্রয়িং) পরীক্ষা ১১ মে, ২০২৫ তারিখে দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত হবে।
ইংরেজি বিভাগে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে ইংরেজি অংশে প্রাপ্ত সর্বোচ্চ নম্বরের ভিত্তিতে দুটি গ্রুপ থেকে মোট ১ হাজার ৬৬৪ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের লিখিত পরীক্ষা আগামী ১১ মে, ২০২৫ তারিখ সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত হবে। ইংরেজি বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে শুধু লিখিত পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে চূড়ান্ত মেধাতালিকা প্রকাশ করা হবে। ভর্তি পরীক্ষা-সংক্রান্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর ভর্তিচ্ছুদের বিষয় পছন্দক্রম নিয়ে বিভাগভিত্তিক চূড়ান্ত মেধাতালিকা পরবর্তী সময়ে প্রকাশ করা হবে।
উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইট https://admission.ru.ac.bd/ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ University of Rajshahi-তে দেখা যাবে।
ঢাকা/ফাহিম/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবহ র ক পর ক ষ পর ক ষ য় অ শ র ব যবহ র ক ২০২৫ ত র খ পর ক ষ র থ ত পর ক ষ ইউন ট
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষক রায়হান অভিযুক্ত হলেও নাম নেই অস্ত্র ব্যবসায়ীর
সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শ্রেণিকক্ষে গত বছরের ৪ মার্চ শিক্ষার্থীকে গুলির একটি মামলায় গত ৩১ জানুয়ারি অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে ডিবি। এতে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীকে গুলি করা কলেজের কমিউনিটি মেডিসিনের প্রাক্তন শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে অভিযোগপত্রে নাম নেই যার কাছ থেকে ডা. রায়হান অস্ত্র সংগ্রহ করেছিলেন সেই এস এস আল হোসাইন ওরফে সোহাগের। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার নওদাপাড়ার সোহাগের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র-বিস্ফোরক ও নাশকতার একাধিক মামলা আছে।
গত বছরের ৪ মার্চ ব্যাগভর্তি অস্ত্র-গুলি নিয়ে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের ভয় দেখান শিক্ষক রায়হান। তার দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদ করায় তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে লক্ষ্য করে শিক্ষক রায়হান গুলি করেন। শিক্ষার্থী তমাল বাম উরুতে গুলিবিদ্ধ হলেও বর্তমানে সুস্থ। ওই ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ব্যাগভর্তি অবৈধ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হন শিক্ষক রায়হান। তাঁর ব্যাগে লাইসেন্সবিহীন দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি জাপানি সামুরাই, ১০টি বার্মিজ ছুরি ও ৭৮ রাউন্ড তাজা গুলি পাওয়া যায়। ডা. রায়হানের বিরুদ্ধে সে সময় আহত শিক্ষার্থী তমালের বাবা বগুড়ার আবদুল্লাহ আল আমিন হত্যাচেষ্টা ও ডিবি পুলিশ বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার হন রায়হান। যদিও পরবর্তী সময়ে জামিন নিয়ে রায়হান এখন পলাতক। ঘটনার পর থেকে উধাও অস্ত্র ব্যবসায়ী সোহাগও।
পুলিশ সূত্র জানায়, ডা. রায়হান সিরাজগঞ্জ আদালতে স্বীকারোক্তি ও জবানবন্দি দেন। তিনি জানান, সোহাগের কাছ থেকেই সব অস্ত্র কিনেছেন। এরপর অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে সোহাগ ও রায়হানের বিরুদ্ধে মামলা করেন সিরাজগঞ্জ ডিবি পুলিশের সাবেক এসআই ওয়াদুত আলী। অভিযোগ উঠেছে, অভিযোগপত্র থেকে সোহাগের নাম বাদ দিয়েছেন ডিবির বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাজমুল ইসলাম ও ইউনিট ওসি ইকরামুল হোসাইন। ডিবির তদন্ত ও দাখিলকৃত অভিযোগপত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তাঁর বাবা।
সিরাজগঞ্জ ডিবির এসআই নাজমুল হক নতুন তদন্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করলেও তিনি এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তাঁর ইউনিটপ্রধান বর্তমান ওসি ইকরামুল হোসাইন আজ ২৯ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার কাছে থেকে পুলিশ পদক নিতে ঢাকায় রয়েছেন। তিনি ফোনে দাবি করেন, ডা. রায়হান আদালতে ১৬৪ ধারায় বিচারকের সামনে সোহাগের নাম বললেও তাঁর বাবা বা গ্রামের নাম জানাতে পারেননি। মামলার বাদী এজাহারে যে সোহাগের নাম-ঠিকানা উল্লেখ করেন, তিনি এতে জড়িত নন। বিএনপি করার কারণে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হয়রানি করতেই আগের সরকারের সময় সাবেক এসপি ও ওসি সোহাগকে জড়িয়েছেন। শিক্ষক রায়হান যে সময় অস্ত্রগুলো কিনেছিলেন, তার আগে থেকেই সোহাগ ঢাকা ও ভারতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরবর্তী সময়ে ইমিগ্রেশন ও হাসপাতাল সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
এ বিষয়ে সাবেক এসপি আরিফুল ইসলামের বক্তব্য পাওয়া না গেলেও মামলার বাদী ডিবির সাবেক এসআই ওয়াদুত আলী বলেন, শিক্ষক রায়হানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে সোহাগের কথোপকথন ও লেনদেনের বিষয় নিশ্চিত হওয়া যায়। তাই এজাহারে সোহাগের নাম ও মোবাইল নম্বর উল্লেখ করা হয়।
সমকালের অনুসন্ধানেও সাবেক এসআই ওয়াদুত আলীর এজাহার অনুযায়ী সোহাগের ফোন নম্বরের কল ডিটেইল এবং এনআইডি নম্বর সংগ্রহ করা হয়। সেখানে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সোহাগেরই তথ্য ও ছবি পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে অজ্ঞাত স্থান থেকে শিক্ষক রায়হান শরীফ গতকাল ফোনে বলেন, ‘আমি মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। ডিবির চার্জশিটের বিষয়টি জানি না।’
মামলার সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ইব্রাহিম হোসেন বলেন, চার্জশিট থেকে সোহাগকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি আত্মঘাতী ও তদন্তের নীতিমালার বাইরে।
জানা গেছে, ভেড়ামারার স্বেচ্ছসেবক দলের সদস্য সচিব কথিত অস্ত্র ব্যবসায়ী সোহাগ। গতকাল তিনি ফোনে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অস্ত্র, খুন ও নাশকতা মামলাগুলো রাজনৈতিক। আমি অস্ত্র ব্যবসায়ী নই। রাজনৈতিক এক নেতার বিরুদ্ধে মামলা করায় আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।
রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা স্বাধীন হলেও পুলিশ সুপার, সার্কেল অফিসার ও সংশ্লিষ্ট ইউনিটের ওসি সুপারভাইজরি অথারিটি। বিষয়টি খতিয়ে দেখব।