আ.লীগ এ দেশে রাজনীতি করতে পারবে না: ভিপি নুর
Published: 26th, April 2025 GMT
গণঅধিকার পরিষদের (জিওপি) সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরল হক নুর বলেছেন, “জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান শুধুমাত্র আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতন ঘটায়নি এ দেশের ছাত্রজনতা; ভারতীয় আগ্রাসন এবং আধিপত্যকেও উচ্ছেদ করেছে। কাজেই আমাদের অবস্থান পরিষ্কার, অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের ঠিকানা হবে না।”
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ এ দেশে আর রাজনীতি করতে পারবে না। পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো দেশে এই ধরণের জঘন্য গণহত্যা ও বর্বরতা চালানোর পর অভিযুক্ত রাজনৈতিক দল রাজনীতি করতে পারেনি।”
শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে পঞ্চগড় জেলা শহরের চৌড়ঙ্গী মোড়ের মুক্তমঞ্চে জেলা গণঅধিকার পরিষদ অয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
ফ্যাসিবাদ নির্মূল না করে গণঅধিকার পরিষদ ঘরে ফিরবে না: নুর
আদালত চলতো হাসিনার নির্দেশে, রায় আসতো গণভবন থেকে: নুর
নূরুল হক নুর বলেন, “আমার দেশের মানুষ সীমান্তে মরে, কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৬ বছর কোনো প্রতিবাদ করেনি। সরকারের মন্ত্রীরা বলেছিলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের স্বামী-স্ত্রীর মতো সম্পর্ক। এখন তারা জনগণের প্রতিরোধের মুখে দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। এতেই প্রমাণিত, আওয়ামী লীগ ছিল ভারতের দাস, গোলামি করা রাজননৈতিক দল। প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে আমরা চাই, ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হবে, ন্যায্যতার সম্পর্ক হবে; গোলামির সম্পর্ক নয়।”
তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর ভুলে গেলে চলবে না- তাদের সুবিধাবাজি, ভাওতাবাজি চিন্তাভাবনার কারণেই গত ১৬ বছর তাদের ডাকে জনগণ রাস্তায় নামেনি। ছাত্র-জনতা তরুণদের বিশ্বাস করেই বাংলাদেশকে নতুনভাবে বিনির্মাণ করার জন্য বুক চেতিয়ে লড়াই করেছে এ দেশের জনগণ।”
তিনি আরো বলেন, “একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন এবং চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত যত আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে, প্রত্যেকটি আন্দোলনেই সাধারণ শ্রমিক, কৃষক, জনতা সংগ্রাম করেছে; এর ফল ভোগ করেছে ভাওতাবাজ ভণ্ড রাজনীতিবিদরা। আমরা বলতে চাই, আর ভাওতাবাজ ভণ্ড রাজনীতিবিদদের পেছনে ঘুরে দেশ, সমাজ, এলাকার ক্ষতি করা যাবে না। ভবিষ্যত নষ্ট করা যাবে না। এখন সময় এসেছে ঘুরে দাঁড়ানোর। সমাজকে পরিবর্তনের জন্য সাধারণ ছাত্র-জনতাকেই নেতৃত্ব দিতে হবে।”
নূরুল হক নুর বলেন, “আওয়ামী লীগের আমলে লুটপাট, দখলদারি, চাঁদাবাজি আর মাফিয়াদের রাজনীতি চলেছে। গণঅভ্যুত্থানের পরেও কিন্তু তার পরিবর্তন হয়নি। ট্রাক, টেম্পু, বাস স্ট্যান্ড থেকে আগে যেভাবে চাঁদা তোলা হত, এখনো তা বন্ধ হয়নি। আওয়ামী লীগ পালিয়ে গেলেও কাঁচা বাজার, সবজি বাজার, সমিতি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, গার্মেন্টস, মিল ফ্যাক্টরি থেকে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। চাঁদাবাজ, দখলদারদের তো আমরা জীবন দিয়ে, বুকের তাজা রক্ত দিয়ে হটিয়েছি, বিতারিত করেছি, তাহলে এখন চাঁদাবাজ, দখলদার কারা? আমরা একটা পরিবর্তনের রাজনীতির কথা বলি। বিভিন্ন রাজননৈতিক দলের নেতাদের বলি- আপনাদের স্বভাব-চরিত্র যদি আওয়ামী লীগের মতো হয়, জনগণ কিন্তু ভোটের মাঠে জবাব দেবে।”
পঞ্চগড় জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি মাহাফুজার রহমান সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- কেন্দ্রীয় শ্রমিক অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান নূর আসাদ, গণসংহতি আন্দোলনের পঞ্চগড়ের আহ্বায়ক সাজেদুর রহমান সাজু, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি- জাগপার সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার বিপ্লব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পঞ্চগড়ের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি।
ঢাকা/নাঈম/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র ল হক ন র র জন ত র র জন আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
জনমানুষের ঐক্যের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রসর হতে পারব: আলী রীয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘শুধুমাত্র সংস্কার কমিশনগুলোর প্রতিবেদন, মতামত বা সুপারিশমালায় যথেষ্ট নয়; রাজনৈতিক এবং গণতান্ত্রিক শক্তিসহ জনমানুষের ঐক্যের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রসর হতে পারব।’
সোমবার সংসদ ভবনস্থ এল. ডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের আলোচনার শুরুতে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন। এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আশাবাদ ব্যক্ত করে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘গত ৫৩ বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষ যে গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করেছে, সে আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের দ্বার উন্মুক্ত করতে হবে৷ শুধুমাত্র কাগজে আমরা কী লিখছি তা নয়, জনগণের প্রতি অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে এই লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে৷ তিনি আরো বলেন, ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা। যার মাধ্যমে ক্ষমতার বিন্যাসের পরিবর্তন ঘটে এবং বাংলাদেশ তার সমস্ত সম্ভাবনা নিয়ে জাগ্রত হতে পারে।’
আলোচনায় গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরু এর নেতৃত্বে ১০ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলে দলটির সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন এবং সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসান ছাড়াও আরো আবু হানিফ, হাবিবুর রহমান রিজু, অ্যাডভোকেট খালিদ হোসেন, সাকিব হোসাইন, শাকিল উজ্জামান, ফাতেমা তুজ জোহরা রেসা এবং মুনতাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখিত গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ওপর রাজনৈতিক দলের সুনির্দিষ্ট মতামত জানাতে অনুরোধ করে সুপারিশগুলোর স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়। ইতোমধ্যে সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ৩৫টি দলের কাছ থেকে মতামত পেয়েছে। গণঅধিকার পরিষদসহ এ পর্যন্ত ২০টি রাজনৈতিক দল কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন হতে আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানানো হয়।