ফিলিস্তিন মুসলিম গণহত্যা ও ভারতে হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসন বন্ধে বিশ্বমুসলিম ঐক্যের আহ্বান জা‌নি‌য়েছেন সু‌ন্নি সম‌র্থিত শীর্ষ আলেমরা।

শ‌নিবার (২৬ এপ্রিল) রাজধানী‌র জাতীয় প্রেসক্লা‌বে অনু‌ষ্ঠিত ম্যাস গ্যাদারিং ফর প্যালেস্টাইন কর্মসূচি‌তে তারা এ আহ্বান জানান।

ফিলিস্তিনে নির্বিচারে মুসলিম গণহত্যা বন্ধ, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন, অবিলম্বে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি, গণহত্যায় জড়িত ইসরায়েলীদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার, ভারতের মুসলিমদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধ, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়া এবং বাংলাদেশে ইজরায়েলী পণ্য ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধের দাবি‌তে এই মহাসমা‌বেশ আ‌য়োজন ক‌রে।

জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মজলুম ফিলিস্তিনবাসী ও ভারতের নির্যাতিত মুসলমানদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বক্তব‌্য রা‌খেন আহলে সুন্নাত চেয়ারম্যান শাইখুল হাদীস আল্লামা কাজী মঈনুদ্দিন আশরাফি, মহাসচিব পীরে ত্বরিকত আল্লামা সৈয়দ মছিহুদ্দোলাহ, মুফতি অছিয়র রহমান, পীর আল্লামা আবুল কাশেম নুরী, পীর ড.

এনায়াতুল্লাহ আব্বাসী, মুফতি আবুল কাশেম ফজলুল হক, প্রফেসর জালাল আজাহারী, মাওলানা হাসান আজাহারী, রহিম আজাহারী, অধ্যক্ষ আখতার হোসেন চৌধুরী, এনসিপি নেতা হাসান আলীসহ গাউছিয়া কমিটি বাংলাদেশ, আনজুমান রহমানিয়া, ছারছিনা, ফুলতলি, সোনাকান্দা, এনায়েতপুর, মাইজভান্ডার, ফান্দাউক, নেত্রকোনা রেজভিয়া, দরবারে আজিজিয়া ছিপাতলি, আহলা দরবার, বারীয়া ,জাহাগিরিয়া, শাহপুর দরবারসহ অসংখ্য দরবারের সাজ্জাদানশীন পীর, দরবারের প্রতিনিধি-ভক্ত অনুরক্ত এবং বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, যুবসেনা, ছাত্রসেনা এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের নেতাকর্মী সমর্থক।

মহাসমাবেশে লা‌খো সু‌ন্নি জনতার ঢল না‌মে। সকাল ৯টায় মহাসমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ৭টা থেকে প্রেসক্লাবের আশে-পাশ ছাড়িয়ে দৈনিক বাংলার মোড়  থেকে জিরো পয়েন্ট, নাইটিঙ্গেল, ঢাবি বক চত্বর, মৎস ভবন, রমনা সোহরাওয়ার্দী গেইট পর্যন্ত লা‌খো সু‌ন্নি জনতায় কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।

সমাবেশে সবার কণ্ঠে প্রতিধ্বনিত হয়, ফ্রি ফ্রি প্যালাস্টাইন ও নারায়ে রিসালতের স্লোগান। পরে ঘোষণা পত্র পাঠ,  মিলাদ কিয়াম ও বিশ্বের নির্যাতিত মুসলমানদের কল্যাণে বিশেষ দোয়া-মুনাজাতের মাধ্যমে শা‌ন্তিপুর্ণভা‌বে সমাবেশ শেষ হয়।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দরব র

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী

২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।

সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।

পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু

১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।

বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।

এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।

আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।

জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
  • একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল
  • সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী