আওয়ামী লীগের দলগতভাবে বিচার, নিবন্ধন বাতিল এবং রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবিতে আগামী ২ মে ঢাকায় বড় সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি। ঢাকা দক্ষিণ এবং উত্তর মহানগর এনসিপি একত্রে এটির আয়োজন করবে। এতে বড় ধরনের লোক জমায়েত করতে চায় তারা। এ ছাড়া একই দাবিতে সারা দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

শনিবার রাজধানীর বাংলামোটরে রূপায়ন টাওয়ারে অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সভাপতিত্বে সদস্যসচিব আখতার হোসেন সঞ্চালনা করেন।

সভা সূত্রে জানা গেছে, এবার সভায় কেউ কাউকে দোষারোপ করেননি। সভায় আলোচনায় নারী কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা ওঠে। এ সময় সদস্যসচিব আখতার হোসেন জানান, কমিশনের প্রতিবেদনের বিষয়ে দলীয়ভাবে তারা কোনো কথা বলবেন না। এ ছাড়া সভায় সারাদেশে জেলা উপজেলা পর্যায়ে কমিটি বিস্তারে আগামী পরশু থেকে মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম এবং হাসনাত আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে কাজ শুরু করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা যায়।

সভায় দলের সাংগঠনিক গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি ‘পলিটিক্যাল কাউন্সিল’ গঠন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে এনসিপি। এই কমিটি সংগঠনের সকল নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। সভা সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দলের আহ্বায়ক সদস্যসচিব, দুই জন করে জ্যৈষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক, জ্যৈষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব, মুখ্য সংগঠক, মুখ্য সমন্বয়ক, জ্যৈষ্ঠ মুখ্য সমন্বয়ক মিলে ১০টি দশ শীর্ষ পদের পাশাপাশি এটিকে বর্ধিত করে পলিটিক্যাল কাউন্সিল গঠিত হবে। এটি ১৯ সদস্যের হতে পারে।

এ ছাড়া ‘পলিটিক্যাল কাউন্সিল’ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সভায় একটি ‘নির্বাহী কাউন্সিল’ গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই কাউন্সিল ৩৯ বা ৫১ সদস্যের হতে পারে। তিন মাস পর এই কমিটি অবস্থা বিচারে নবায়ন, পূণর্মূল্যায়ন বা নতুন সদস্য এতে অন্তর্ভূক্ত করা হবে।

সভায় দলের গঠনতন্ত্র প্রণয়নে পাঁচ বা ততোধিক সদস্যের সমন্বয়ে একটি গঠনতন্ত্র প্রণয়ন টিম গঠনের সিদ্ধান্ত সাধারণ সভায় গৃহীত হয়েছে। এটির নেতৃত্ব দেবেন যুগ্ম আহ্বায়ক জাভেদ রাসিন। তারা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দলের খসড়া গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করবেন।

এ ছাড়াও আওয়ামী লীগের বিচার, আওয়ামীলীগকে কোনোভাবেই দাঁড়াতে না দেওয়া, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় সভায়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এনস প সম ব শ সদস যসচ ব এনস প সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত হতাশাজনক’ বলেছে দলটি।

আজ শুক্রবার রাতে এনসিপির এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহউদ্দিন সিফাত বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন।

এনসিপির বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে এনসিপি। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে লন্ডনে অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি ‘সংসদ নির্বাচন’ বিষয়ে দলটিকে আস্থায় আনতে সফল হয়েছে সরকার। জাতীয় ঐক্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি। কিন্তু বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে নাগরিকদের প্রধান দাবি তথা বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক বলে মনে করে এনসিপি।

নির্বাচন প্রশ্নে সরকার কেবল একটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও দাবিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে বলে বারবার প্রতীয়মান হচ্ছে—এ কথা উল্লেখ করে এনসিপি আরও বলেছে, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, জুলাই সনদ কার্যকর করা এবং বিচারের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন গণ-অভ্যুত্থানকে স্রেফ একটি ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে পরিণত করবে এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন–আকাঙ্ক্ষাকে অবদমিত করবে।

জনগণের দাবি তথা জুলাই সনদ রচনা ও কার্যকর করার আগে নির্বাচনের কোনো তারিখ ঘোষিত হলে তা জনগণ মেনে নেবে না বলে উল্লেখ করেছে এনসিপি। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংস্কারের বিষয়গুলোর ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ও জুলাই সনদ রচনা এবং কার্যকর করেই আসন্ন জুলাইকে যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ করার উদ্যোগ নিতে সরকারকে জোর দাবি জানাচ্ছে এনসিপি।’

জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে জুলাই সনদ কার্যকর করা ও বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণার পরই নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে এনসিপি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সংস্কার যেভাবে হলে ভালো হয়
  • জাফলংসহ দেশের পর্যটন উন্নয়নে সমন্বিত মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
  • পরিবেশবান্ধব পর্যটনে সমন্বিত মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
  • লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি