Samakal:
2025-09-18@10:17:04 GMT

বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না ফারুকের

Published: 27th, April 2025 GMT

বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না ফারুকের

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর প্রকাশ্যে গুলি চালানো নারায়ণগঞ্জের এস এম রানাকে বিসিবিতে নিয়ে এসেছিলেন ফারুক আহমেদ। বিসিবির টাকায় তাঁকে র‍্যাডিসন হোটেলেও রাখা হয়েছিল। গত অক্টোবরে ফারুক-রানাকে প্রকাশ্যে মেলামেশা করতে দেখা গেছে। ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরই সমালোচনার মুখে পড়েন বিসিবি সভাপতি। বিপিএলে স্পট ফিক্সিং ইস্যু, রাজশাহী ও চট্টগ্রামে বিতর্কিত ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়োগ, মধুমতি ও মেঘনা ব্যাংকে অস্বাভাবিকভাবে ১১৮ কোটি টাকার এফডিআর করা এবং সম্প্রতি তাওহিদ হৃদয়ের নিষেধাজ্ঞা ও তামিম ইকবালের চাপ প্রয়োগের ইস্যুতে নতজানু হওয়ার ঘটনায় বিতর্কিত হচ্ছেন ফারুক।

জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক বিসিবির প্রথম ক্রিকেটার সভাপতি। তাঁর কাছে তাই প্রত্যাশাও বেশি ছিল ক্রীড়ামোদীদের। অথচ কিছু বিতর্কিত ঘটনায় জড়িয়ে পড়া এবং একরোখা স্বভাবের কারণে আট মাসেই অজনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন তিনি। বেশির ভাগ পরিচালকের অভিযোগ, রেগে গেলে সভাপতির আচরণ শালীন থাকে না। তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীরা মনে করেন, মেজাজ হারিয়ে দিন দিন শত্রুতা বাড়াচ্ছেন ফারুক। তাঁর সাংগঠনিক ক্যারিয়ারকে যেটা প্রভাবিত করতে পারে বলে মনে করেন ক্রিকেট-সংশ্লিষ্টরা। 

গত ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে ফারুকের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়ান যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার প্রেস সচিব মাহফুজুল আলম। মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিসিবি সভাপতি ফারুকের সঙ্গে কয়েকজন বিতর্কিত লোকের ওঠাবসার কারণে ঝামেলার সূত্রপাত। বিশেষ করে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানো রানাকে বিসিবিতে সম্পৃক্ত করা, আওয়ামী লীগ সম্পৃক্ত জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার খন্দকার সাইদুর রহমান এফিকে নিরাপত্তার দায়িত্বে রাখায় ক্ষুব্ধ ছিল মন্ত্রণালয়। এ দু’জনের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ফারুক কয়েক মাস আগে বলেছিলেন, ‘রানার সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততা ছিল নারায়ণগঞ্জের ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে। সে যে আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়েছে, তা জানা ছিল না। এ ব্যাপারে অবগত হওয়ার পরই বাদ দেওয়া হয়েছে। খন্দকার সাইদুর রহমান এফি জাতীয় দলের ক্রিকেটার হিসেবে বিসিবিতে এসেছে। যখন জেনেছি তার ব্যাপারে আপত্তি আছে, তাকেও বাদ দিয়েছি।’

বিসিবি সভাপতি হওয়ার পর ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংক থেকে এফডিআর সরিয়ে নিরাপদ ব্যাংকে নেওয়ার কথা বলেছিলেন ফারুক। গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে বিসিবি জানায়, ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংক থেকে ২৫০ কোটি টাকা উত্তোলন করে সবুজ ও হলুদ তালিকাভুক্ত ১৩টি ব্যাংক– মধুমতি ব্যাংক (হলুদ), ইস্টার্ন ব্যাংক (সবুজ), ব্র্যাক ব্যাংক (হলুদ), মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক (হলুদ), প্রাইম ব্যাংক (সবুজ), সিটি ব্যাংক (সবুজ), মেঘনা ব্যাংক (সবুজ), পূবালী ব্যাংক (হলুদ), অগ্রণী ব্যাংক (লাল), বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক (হলুদ) ও সিটিজেন ব্যাংকে (হলুদ) ২৩৮ কোটি টাকা নতুন করে এফডিআর করা হয়েছে। এই ব্যাংকগুলো থেকে ২ থেকে ৫ শতাংশ বাড়তি মুনাফা পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। এফডিআর করার ফলে অংশীদার ব্যাংক থেকে ১২ কোটি টাকা স্পন্সর পাওয়া নিশ্চিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। মধুমতি ব্যাংক ও মেঘনা ব্যাংক ঢাকা ও জাতীয় লিগের স্পন্সর ছিল। নতুন করে এফডিআর করায় সভাপতিকে কেউ দোষারোপ করছে না। সমস্যা হয়েছে, মধুমতি (৬৬ কোটি টাকা) ও মেঘনা (৫২ কোটি টাকা) ব্যাংকে ১১৮ কোটি টাকা এফডিআর করা নিয়ে। ১১টি ব্যাংকে রাখা হয়েছে ১২২ কোটি টাকা, কিন্তু দুই ব্যাংকে কেন প্রায় অর্ধেক টাকার এফডিআর? একজন পরিচালকের কাছে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে নাম গোপন রাখার শর্তে তিনি বলেন, ‘সাধারণত মোটা অঙ্কের টাকা এফডিআর করা হলে কমিশন পাওয়া যায়। এই কমিশন বৈধ। সভাপতি সেটি নিয়েছেন কিনা, জানি না। তবে যেটুকু শুনেছি, মধুমতি ও মেঘনা ব্যাংকে সভাপতির বন্ধু আছেন। সে কারণে সেখানে দেওয়া হয়ে থাকতে পারে।’ বিপিএল ও আন্তর্জাতিক সিরিজের টিকিট বিক্রির পার্টনারও মধুমতি ব্যাংক। এ বিষয়ে ফারুকের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘পুরোপুরি স্বচ্ছতার ভিত্তিতে কাজগুলো করেছি। সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দিয়েছিলাম, ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংক থেকে এফডিআর নিরাপদ ব্যাংকে নেওয়া হবে। বোর্ড সভায় অনুমোদন নিয়ে কাজটি করা হয়েছে। এ ছাড়া ফিন্যান্স ও লজিস্টিক কমিটির চেয়ারম্যানরা স্বাক্ষর করেছেন। মূলত আমার ইমেজ ক্ষুণ্ন করতে এ ধরনের কাজ করা হচ্ছে।’ তবে বিসিবি পরিচালক মাহবুবুল আনাম বলেছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাক্ষর করি কোনো কিছু অনুমোদন করার পর। তখন ফিন্যান্স কমিটির সভাপতি ছিলেন সভাপতি নিজে। নিজস্ব ক্ষমতাবলে এফডিআর ১৩টি ব্যাংকে নিয়েছেন। তিনি সেটি পারেনও। যে ব্যাংকগুলোতে নেওয়া হয়েছে, সেখান থেকে বিসিবি আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। এ কারণে নেওয়া হয়েছে।’

কে এই এসএম রানা
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, গত ১৯ জুলাই নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সামনে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালানোর সময় আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান ও তাঁর সহযোগীদের সঙ্গে ছিলেন এসএম রানা। এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় করা মামলার আসামি রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তিনি জামিন পেয়েছেন। এ ছাড়া ফতুল্লা থানায়ও ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা আছে। 

অভিযোগ রয়েছে, শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর আহমেদ টিটু, বিসিবির বর্তমান চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন, নগরীর নিতাইগঞ্জ বাপ্পী চত্বর এলাকার এসএম রানা মিলে ভূমিদস্যু সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিলেন। এই সিন্ডিকেট জমি দখলসহ নানা অপকর্মে জড়িত ছিল। শামীম ওসমান পরিবারের সহযোগিতায় রানা নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সহসভাপতি ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যকরী সদস্য হন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত র জনত র ওপর ন র য়ণগঞ জ ও ম ঘন

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত

নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বন্দর প্রেসক্লাবের ২০২৫-২৭ মেয়াদের নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। 

বন্দর প্রেসক্লাবের নবাগত সভাপতি আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল আলম জাহিদের সঞ্চালনায় নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম। 

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকন। প্রধান আলোচক ছিলেন বন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সিআইডি) হারুন অর  রশিদ,  নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন পন্টি, বন্দর থানার ওসি লিয়াকত আলী, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আনিসুর রহমান, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন মিয়া সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন সিদ্দিকী প্রমুখ।

উদ্বোধকের বক্তব্যে সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম বলেন, বন্দর প্রেসক্লাবের নবাগত কমিটির সকলকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানায়। আজকে তিন বিষয়ে আজকে গুরুত্ব বহন করে। এক. পেশাগত নিয়ে তাদের সম্মান নিয়ে কথাটা, দুই. সাংবাদিকদের প্রশিক্ষিণের ব্যাপারটা, তিন. হলো আমাদের বিষয় নিয়ে।

সেটা হলো, বেগম খালেদা জিয়া সরকার মেয়াদকালে একটি সমানজ্জল্য পালন করতে পেরেছিলাম। আমাদের তখন স্বার্থক ছিলো বন্দর প্রেসক্লাবকে একটি জমি দিতে সক্ষম হয়েছিলাম। আজকের বন্দর প্রেসক্লাব সেটা স্বীকার করে নিলো সেটা কৃর্তত্ব আমার নয়, এটার কৃর্তত্ব বেগম খালেদা জিয়া। তিনি দিয়েছিলেন বলে আমাদের স্বার্থকতা পেলাম।

তিনি আরো বলেন, একটা কথা বিরাজমান, হলুদ সাংবাদিকতা। এই শব্দটা এখন ডেঙ্গু’র মত অবস্থা। এটা আমার কাছে দুঃখজনক অবস্থা যারা সৎ সাংবাদিকতা হিসেবে পেশাকে গ্রহণ করেছেন, করেন তাদের জন্য কষ্টকর বিষয়। আশা করবো, আপনাদের ঘর আপনাদের ঠিক রাখতে হবে। সংবাদ প্রকাশ করার আগে অবশ্যই যাচাই বাছাই করা উচিত।

সংবাদে বিশেষ বিশ্লেষণ করে প্রকাশ করা ভালো। একটি দুসময় আমরা পাড় হয়ে এসেছি। চার সংবাদপত্র ছাড়া বাকি বিলুপ্ত করা হয়েছিলো। এখন সাংবাদিক পেশা মহান হিসেবে ধরে রাখতে হবে। রাজনীতিবিদ সাথে সাংবাদিক সম্পর্ক পারিবারিকভাবে হয়ে যায়। আমাদের কর্মদক্ষতা সাংবাদিকরা লিখনী মাধ্যমে প্রকাশ করেন।

সাংবাদিকদের দক্ষতা কারণে আমাদের কাজের গতি বৃদ্ধি পায়। এই পেশা কারথে আমাদের উৎসাহ করে কাজ করার। বন্দর প্রেসক্লাব ও নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের এখানে সাধারণ সম্পাদক আছেন, দুই প্রেসক্লাবই আমার নির্বাচনী এলাকার ভিতরে। আমার ব্যক্তিভাবে কোন প্রয়োজন হয়, তাহলে সকল কিছুতে প্রস্তুত।

প্রধান অতিথি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও পিআইডি সদস্য আবু সালেহ আকন বলেছেন, মফস্বল সাংবাদিক আর কেন্দ্রীয় সাংবাদিক বলে কিছু নেই। আমরা সবাই গণমাধ্যম কর্মী সবাই সাংবাদিক। তবে স্থানীয়ভাবে যারা পত্রিকাগুলোতে কাজ করেন তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কাজ করেন।

কিন্তু ঠিকমতো তারা বেতন ভাতা পান না। ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী তাদের বেতন ভাতা পরিশোধ করা হয় না। স্থানীয় সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ড অনুযায়ী বেতন ভাতা পরিশোধ করা উচিত। যে সমস্ত পত্রিকা ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের ব্যর্থ  সেগুলোকে বন্ধ করে দেওয়া উচিত।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • “শিক্ষার্থীদের উপর হামলা, ইন্ধন থাকতে পারে তৃতীয় পক্ষের”
  • শিক্ষার্থীদের উপর অটো চালকদের হামলা, আহত ২০ (ভিডিও)
  • শিক্ষার্থীদের উপর অটো চালকদের হামলা, আহত ২০
  • ফতুল্লায় পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানে কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন
  • সোনারগাঁয়ের সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে সিদ্ধিরগঞ্জ বিএনপির চিঠি
  • নারায়ণগঞ্জে বিদেশি পিস্তল-গুলিসহ গ্রেপ্তার ৩
  • সড়ক দুর্ঘটনায় যুবদল নেতা রিয়াদের দুই মেয়ে গুরুতর আহত : দোয়া প্রার্থনা 
  • টাঙ্গাইলে বিএনপি নেতাকে না পেয়ে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা
  • আড়াইহাজারের সেপটি ট্যাংকির ঝুঁকি ও করণীয় নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা
  • বন্দর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত