নিজের পছন্দের হিসাবে সরকারি ভাতার টাকা পাবেন উপকারভোগীরা
Published: 27th, April 2025 GMT
সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ও অন্য কার্যক্রমের নগদ টাকার উপকারভোগীরা নিজেদের পছন্দের ব্যাংক বা এমএফএস হিসাবে নিতে পারবেন। মন্ত্রণালয় বা বিভাগ কোনো ভাতা বিতরণে কোনো ব্যাংক বা মোবাইল ব্যাংকিং সেবার (এমএফএস) সঙ্গে চুক্তি করতে পারবে না এবং নির্বাচন করে দিতে পারবে না। এর ফলে সরকারি ভাতা গ্রহণে উপকারভোগীর স্বাধীনতা আবার আসছে। ১ জুলাই থেকে সরকারি ভাতা বিতরণের নতুন এই নিয়ম কার্যকর হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এ–সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করেছে। সরকারের নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে উপকারভোগীরা তাঁদের পছন্দমতো হিসাবে সরকারি ভাতার টাকা নিতে পারবেন।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ২০২১ সালে একক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নগদ লিমিটেডকে ৭৫ শতাংশ ভাতা বিতরণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক সরকার থেকে ব্যক্তি (জি-টু-পি) পদ্ধতিতে ৪০টি জেলায় বসবাসরত বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রকল্পের উপকারভোগীরা ভাতা পেয়ে আসছেন নগদ–এর মাধ্যমে। বাকি ২৪টি জেলার উপকারভোগীরা ভাতা পাচ্ছেন অন্যান্য এমএফএস ও ব্যাংকের মাধ্যমে। এখন নতুন করে ভাতাভোগীর পছন্দমতো নিজের হিসাবে ভাতা গ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ফলে ভাতাভোগীদের নতুন করে কোনো হিসাব খুলতে হবে না।
অর্থ বিভাগের পরিপত্রে বলা হয়েছে, ভাতাভোগীরা নিজের সুবিধামতো এমএফএস প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংক নির্বাচন করতে পারবে। ভাতা বিতরণকারী মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর বা সংস্থা এখন থেকে তাদের পছন্দমতো কোনো মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে পারবে না।
ফলে সারা দেশের যেকোনো জায়গার ভাতাভোগীরা তাঁদের নিজেদের পছন্দের হিসাবে ভাতার টাকা গ্রহণ করতে পারবেন। আগে নির্দিষ্ট জেলার ভাতাভোগীরা সরকারের মনোনীত নির্দিষ্ট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের হিসাবে খুলে টাকা গ্রহণ করতে হতো। ফলে অনেককে বাধ্য হয়ে ওই নির্দিষ্ট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে নতুন হিসাব খুলতে হয়েছে। আবার কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে, কিছু এলাকায় সেই নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের এজেন্ট নেটওয়ার্ক দুর্বল। যে কারণে তাঁদের টাকা উত্তোলনেও ভোগান্তি পোহাতে হতো। সরকারের নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে উপকারভোগীদের এসব ভোগান্তি দূর হবে বলে মনে করছেন খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ র পছন দ সরক র র র নত ন গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে ইরানের নতুন হামলায় নিহত বেড়ে ৫, আহত ২৯
ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে অন্তত চার জায়গায় হামলা চালিয়েছে ইরান। এ হামলায় তিনজন নিহত হয় বলে জানায় জেরুজালেম পোস্ট। বিবিসি আরও দুইজন নিহতের খবর দেয়। এরপর আরেকজনের ফলে নতুন হামলায় ইসরায়েলে নিহত বেড়ে পাঁচজনে পৌঁছাল।
আজ সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স ও ব্লাড ব্যাংক সংস্থাগুলো বলছে, এসব হামলায় ২৯ জন আহত হয়েছেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়, ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম জানান, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী, একজন পুরুষ।
এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হামলায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সেখান আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।
এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।
সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।
ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।
সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’
তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।
এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।