সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ও অন্য কার্যক্রমের নগদ টাকার উপকারভোগীরা নিজেদের পছন্দের ব্যাংক বা এমএফএস হিসাবে নিতে পারবেন। মন্ত্রণালয় বা বিভাগ কোনো ভাতা বিতরণে কোনো ব্যাংক বা মোবাইল ব্যাংকিং সেবার (এমএফএস) সঙ্গে চুক্তি করতে পারবে না এবং নির্বাচন করে দিতে পারবে না। এর ফলে সরকারি ভাতা গ্রহণে উপকারভোগীর স্বাধীনতা আবার আসছে। ১ জুলাই থেকে সরকারি ভাতা বিতরণের নতুন এই নিয়ম কার্যকর হবে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এ–সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করেছে। সরকারের নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে উপকারভোগীরা তাঁদের পছন্দমতো হিসাবে সরকারি ভাতার টাকা নিতে পারবেন।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ২০২১ সালে একক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নগদ লিমিটেডকে ৭৫ শতাংশ ভাতা বিতরণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক সরকার থেকে ব্যক্তি (জি-টু-পি) পদ্ধতিতে ৪০টি জেলায় বসবাসরত বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রকল্পের উপকারভোগীরা ভাতা পেয়ে আসছেন নগদ–এর মাধ্যমে। বাকি ২৪টি জেলার উপকারভোগীরা ভাতা পাচ্ছেন অন্যান্য এমএফএস ও ব্যাংকের মাধ্যমে। এখন নতুন করে ভাতাভোগীর পছন্দমতো নিজের হিসাবে ভাতা গ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ফলে ভাতাভোগীদের নতুন করে কোনো হিসাব খুলতে হবে না।

অর্থ বিভাগের পরিপত্রে বলা হয়েছে, ভাতাভোগীরা নিজের সুবিধামতো এমএফএস প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংক নির্বাচন করতে পারবে। ভাতা বিতরণকারী মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর বা সংস্থা এখন থেকে তাদের পছন্দমতো কোনো মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে পারবে না।

ফলে সারা দেশের যেকোনো জায়গার ভাতাভোগীরা তাঁদের নিজেদের পছন্দের হিসাবে ভাতার টাকা গ্রহণ করতে পারবেন। আগে নির্দিষ্ট জেলার ভাতাভোগীরা সরকারের মনোনীত নির্দিষ্ট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের হিসাবে খুলে টাকা গ্রহণ করতে হতো। ফলে অনেককে বাধ্য হয়ে ওই নির্দিষ্ট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে নতুন হিসাব খুলতে হয়েছে। আবার কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে, কিছু এলাকায় সেই নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের এজেন্ট নেটওয়ার্ক দুর্বল। যে কারণে তাঁদের টাকা উত্তোলনেও ভোগান্তি পোহাতে হতো। সরকারের নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে উপকারভোগীদের এসব ভোগান্তি দূর হবে বলে মনে করছেন খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ র পছন দ সরক র র র নত ন গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ