ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থী সূর্য আলী। সদ্য প্রাথমিকের গন্ডি পেরিয়ে নতুন উচ্ছাস নিয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। বই ও ক্লাস পায়নি সময় মতো। ভর্তি হওয়ার পর ফেব্রুয়ারি মাসের ২৫ তারিখে বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার তিনটি ইভেন্টে অংশগ্রহণ করে সূর্য আলী। সব ইভেন্টে প্রথম স্থান অধিকার করলেও পুরষ্কার পায়নি একটিতেও। তাই বাধ্য হয়ে পুরস্কার চেয়ে প্রধান শিক্ষক বরাবর আবেদন করেছে সূর্য।

এ ঘটনা ঘটেছে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পিয়ারপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত আমদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। শিক্ষার্থী সূর্য পুরাতন আমদহ গ্রামের ছাবদেল আলীর ছেলে। 

জানা গেছে, প্রতিযোগিতা শেষে প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার বাসায় নিয়ে গিয়েছেন। পরে সেগুলো আর বিদ্যালয়ে ফেরত আনেননি। এ ঘটনায় এলাকায় নানা আলোচনা চলছে।

প্রধান শিক্ষক বরাবর আবেদনে সূর্য লিখেছে, বিষয়: বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার দেওয়ার জন্য আবেদন। জনাব, আমি গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ‘সি’ গ্রুপ থেকে ১০০ মিটার দৌড়, মোরগ লড়াই, দীর্ঘ লাফ এই তিনটি ইভেন্টে অংশগ্রহণ করি। সবগুলোতেই প্রথম স্থান অধিকার করেছি। কিন্তু খেলা শেষে বিকেল ৩টার পর আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ি। এমতাবস্থায় ওইদিন বিকেলে পুরস্কার বিতরণীর সময় উপস্থিত হতে পারিনি। এমতাবস্থায় উপরোক্ত বিষয় বিবেচনা করে আমাকে পুরস্কার দিতে আপনার দরদি আত্মা মর্জি হয়। ইতি মো.

সূর্য আলী, ষষ্ঠ শ্রেণি, রোল-৫।

বিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, প্রতিটি ইভেন্টের জন্য পুরস্কার কেনা হয়েছে। প্রতিযোগিতা শেষে পুরস্কার বিতরণের সময় যারা উপস্থিত ছিল; তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়েছে। যারা উপস্থিত ছিল না তাদের পুরস্কার বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। পরে বিতরণ না হওয়া পুরস্কারগুলো প্রধান শিক্ষককের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় চলাকালীন সময় সেগুলো বিতরণ করবেন বলে সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু তিনি কেন পুরস্কারগুলো বিতরণ করেননি; তা তাদের জানা নেই।

শিক্ষার্থী সূর্য জানায়, রোজার ছুটির পর স্কুল চালুর পর প্রধান শিক্ষকের কাছে একাধিকবার যাওয়ার পরও তিনি কোনো পুরস্কার দেননি। পরে লিখিত আবেদন করেছি।

আমদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার বলেন, যেসব শিক্ষার্থী পুরস্কার পায়নি তারা কেউ আমার কাছে আসেনি। পুরস্কার চেয়ে করা আবেদনের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি একটি দরখাস্ত পেয়েছি। এ বিষয়ে পরবর্তিতে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রস ক র ব তরণ

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবনের মধুসহ ২৪ পণ্য পেল জিআই সনদ

মণিপুরি শাড়ি, গামছা, লিচু, আম, মধুসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ২৪টি পণ্যকে জিআই (ভৌগোলিক নির্দেশক) নিবন্ধন সনদ দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সভায় এই সনদ দেওয়া হয়। শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। 

সভায় শিল্প সচিব ওবায়দুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচক ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। মেধাসম্পদ দিবসের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিল্পী, অভিনেত্রী ও সংগীত পরিচালক আরমিন মুসা। 

সভায় শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, দেশের প্রথম পণ্য হিসেবে জিআই স্বীকৃতি পেয়েছে জামদানি শাড়ি। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৫টি পণ্য জিআই স্বীকৃতি পেল। জিআই পণ্য দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে লালন করে। এই পণ্যের বাজারজাতকারীদের ন্যায্য স্বীকৃতি এবং পারিশ্রমিক নিশ্চিত করতে হবে। ফলে স্থানীয় উদ্যোক্তা বা উৎপাদনকারীদের ক্ষমতায়ন হবে।

এ সময় তিনি জিআই পণ্যের তালিকা সমৃদ্ধ করার পর সেগুলো বাণিজ্যিকভাবে বিকশিত করার আহ্বান জানান। 

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক উৎসব গান। এ দেশের মানুষ গানের মাধ্যমে ভাব প্রকাশ করে, যা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে আছে। সংগীত নিয়ে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় বড় প্রকল্পের কাজ করছে। দেশের মানুষ কিছু দিনের মধ্যে তা দেখতে পাবে। সংগীতের কপিরাইট নিশ্চিত করতে হবে। 

নিবন্ধন সনদপ্রাপ্ত ২৪টি ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হলো– নরসিংদীর লটকন, মধুপুরের আনারস, ভোলার মহিষের দুধের কাঁচা দই, মাগুরার হাজরাপুরী লিচু, সিরাজগঞ্জের গামছা, সিলেটের মণিপুরি শাড়ি, মিরপুরের কাতান শাড়ি, ঢাকাই ফুটি কার্পাস তুলা, কুমিল্লার খাদি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী মিষ্টি, গোপালগঞ্জের ব্রোঞ্জের গয়না, সুন্দরবনের মধু, শেরপুরের ছানার পায়েস, সিরাজগঞ্জের লুঙ্গি, গাজীপুরের কাঁঠাল, কিশোরগঞ্জের রাতাবোরো ধান, অষ্টগ্রামের পনির, বরিশালের আমড়া, কুমারখালীর বেডশিট, দিনাজপুরের বেদানা লিচু, মুন্সীগঞ্জের পাতক্ষীর, নওগাঁর নাকফজলি আম, টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের জামুর্কির সন্দেশ এবং ঢাকাই ফুটিকার্পাস তুলার বীজ ও গাছ। 

সভায় এসব জিআই সনদ বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড, সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক ও নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার নাকফজলি আমচাষি সমবায় সমিতির কাছে হস্তান্তর করা হয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ