কাগজ আমদানিতে শুল্ক কর ৫ শতাংশ করার দাবি
Published: 27th, April 2025 GMT
প্রকাশনা, মোড়কজাত ও ওষুধ শিল্পের প্রধান কাঁচামাল পেপার ও পেপার বোর্ড আমদানিতে প্লাস্টিক শিল্পের অনুরূপ শুল্ক কর (সিডি) ৫ শতাংশ বা তার ও কম করার দাবি জানিয়েছে এ খাতের চারটি সংগঠন। তারা বলছে, এতে ব্যবসায় শৃঙ্খলা ফিরবে, কর ফাঁকি ও দুর্নীতি কমবে। ফলে রোধে শুল্ক হার কমালে রাজস্ব আয় বাড়বে।
রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এ খাতের চার সংগঠন যৌভাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানিয়েছে। সংগঠনগুলো হলো- বাংলাদেশ পেপার ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিপিআইএ), বাংলাদেশ পেপার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমএ), মেট্রোপলিটন প্রেস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ এবং চট্টগ্রাম কাগজ ও সেলোফিন ব্যবসায়ী গ্রুপ।
এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিপিআইএর সভাপতি শফিকুল ইসলাম ভরসা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম কাগজ ও সেলোফিন ব্যবসায়ী গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বেলাল, বিপিআইএর সহ সভাপতি খোরশেদ আলম, বিপিএমএর সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল আজিম প্রমুখ।
শফিকুল ইসলাম ভরসা বলেন, ব্যক্তিগত বা কোম্পানি আয়করের ওপর অডিট আপত্তির বিপরীতে আপিল ট্রাইবুনালে আপিল দায়ের করতে হলে আপত্তিকৃত মোট টাকার ওপর ১০ শতাংশ সরকারি কোষাগারে জমা করার বিধান রয়েছে। উচ্চ আদালতে আপিল দায়ের করার ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ অর্থ জমা দিতে হয়। এছাড়া ভ্যাট কমিশনারের দাবি করা মূসকের বিপরীতে ট্রাইব্যুনালে আপিল দায়ের করতে গেলে বিধিবদ্ধ জমা ১০ শতাংশ ও উচ্চ আদালতে আয়কর রেফারেন্সের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ করে জমা দিতে হয়।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাগজ ও সেলোফিন ব্যবসায়ী গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বেলাল সমকালকে বলেন, কিছু অসাধু কর্মকর্তা অনৈতিক সুবিধা আদায়ের উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে আয়করের ওপর অযাচিত অডিট আপত্তি দিয়ে থাকেন। মূলত ব্যবসায়ীদের হয়রানি করতে এটাকে মূল অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেন এনবিআরের কর্মকর্তারা।
ব্যবসায়ীদের হয়রানি থেকে মুক্তি দেওয়ার অনুরোধ করে এনবিআরের উদ্দেশে তিনি বলেন, এসব ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ করে অর্থ জমা দেওয়ার বিধান চালু করলে অসাধু কর্মকর্তাদের দৌরাত্ম্য কিছুটা কমে আসবে। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীরাও উপকৃত হবে।
লিখিত বক্তব্যে শফিকুল ইসলাম ভরসা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ গত ২০ ফেব্রুয়ারি একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর অভ্যন্তরে এবং কমলাপুর আইসিডিতে আমদানি করা এফসিএল কন্টেইনারের কমন ল্যান্ডিং ডেট এর অষ্টম দিন থেকে প্রযোজ্য স্ল্যাবের চারগুণ হারে স্টোর রেন্ট আরোপ করেছে। ঈদের ছুটির দুই-এক দিন আগে থেকে আসা কনটেইনার এবং ঈদের ছুটির মধ্যে বন্দরে আসা কনটেইনার নির্ধারিত ৪ দিনের মধ্যে খালাস করা সম্ভব ছিল না। এ ছাড়াও বন্দর বা আইসিডি থেকে মালামাল খালাসে বন্দর কর্তৃপক্ষ ছাড়াও আরও অন্যান্য এজেন্সির সম্পৃক্ততা থাকে এবং এসব ডকুমেন্টেশন প্রসেসিংয়ে অনেক সময় লেগে যায়।
আমদানিকারকদের ওপর এরূপ অযৌক্তিক উচ্চহারে স্টোররেন্ট আরোপের ফলে শিল্প উৎপাদন বা অভ্যন্তরীণ ব্যবহার উভয় ক্ষেত্রে পণ্যের মূল্য বেড়ে যাবে। এতে ব্যবসায়ীরা অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। এমতাবস্থায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃক স্টোর রেন্ট আরোপের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান তিনি।
এ সময় ব্যবসায়ীরা বাণিজ্যিকভাবে আমদানি করা ডুপ্লেক্স বোর্ড ও আর্টকার্ডের মূল্য বিশ্ববাজারে কমে যাওয়ায় প্রকৃত বিনিময় মূল্যে শুল্কায়নের অনুরোধ জানান।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবস য় র ওপর আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
আসামির কাঠগড়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের ৪৫ মিনিট
সকালে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে একটি প্রিজন ভ্যানে করে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে আদালতে আনা হয়। সকাল ৯টার দিকে তাঁকে রাখা হয় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায়। এর প্রায় আধা ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে নয়টার আগে হাজতখানার ভেতর থেকে এ বি এম খায়রুল হককে বের করা হয়। এ সময় তাঁর মাথায় ছিল পুলিশের হেলমেট, বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট।
হাজতখানার ভেতর থেকে হাঁটিয়ে আদালতের ভেতরের একটি সরু রাস্তা দিয়ে খায়রুল হককে নিচতলায় সিঁড়ির সামনে আনা হয়। পরে দুজন পুলিশ কনস্টেবল সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের হাত ধরে রাখেন। তিনি হেঁটে হেঁটে নিচতলা থেকে দোতলায় ওঠেন। পরে দোতলা থেকে আবার হেঁটে হেঁটে তিনতলায় ওঠেন। পরে তাঁকে নেওয়া হয় আসামির কাঠগড়ায়। তখন সময় সকাল ৯টা ৩৫ মিনিট। নিজের দুই হাত পেছনে রেখে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক। তখনো বিচারক আদালতকক্ষে আসেননি। তবে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা আদালতকক্ষে উপস্থিত ছিলেন। তখন দেখা যায়, সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক মাথা উঁচু করে সামনের দিকে তাকাতে থাকেন। কিছুক্ষণ দেখার পর আবার মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন।
সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে আদালতকক্ষে আসেন ঢাকার সিএমএম আদালতের অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (এসিএমএম) মো. ছানাউল্লাহ। এ সময় একজন পুলিশ কর্মকর্তা এ বি এম খায়রুল হকের নাম ধরে ডাকেন।
তখন রায় জালিয়াতির অভিযোগে করা শাহবাগ থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খালেক মিয়া সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। এসআই খালেক মিয়া আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, ত্রয়োদশ সংশোধনীর রায় বাতিল করে ২০১১ সালের ১০ মে একটি সংক্ষিপ্ত রায় দেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ। সেই সংক্ষিপ্ত রায়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক মতপ্রকাশ করেন যে পরবর্তী ১০ম ও ১১তম সংসদ নির্বাচন দুটি সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর অধীনে অনুষ্ঠিত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সাবেক প্রধান বিচারপতি বা আপিল বিভাগের বিচারপতিদের নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে না বলেও সংবিধান সংশোধনের জন্য মত দেন। ওই সংক্ষিপ্ত আদেশটি সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে দেওয়া হয়। সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আদেশের পক্ষে বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি), সুরেন্দ্র কুমার সিনহা (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি) ও সৈয়দ মাহমুদ হোসেন (পরবর্তী সময়ে প্রধান বিচারপতি) মত দেন। তবে আপিল বিভাগের বিচারপতি আব্দুল ওয়াহাব মিয়া, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা রায়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। অর্থাৎ আপিল বিভাগের এই তিন বিচারপতি ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ মর্মে ঘোষণার বিপক্ষে মত দেন।’
প্রিজন ভ্যানে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। আজ বুধবার ঢাকার আদালত এলাকায়