দাউদকান্দিতে একদিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত আরও ৬১ জন
Published: 10th, July 2025 GMT
কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল বুধবার সকাল ১০টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত) উপজেলায় নতুন করে ৬১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।
এ সময়ের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ৩৩৩ জন রোগীর রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ১৪ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় চারজনকে গতকাল দিবাগত রাত ১২টার মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ১৮ জুন থেকে ১০ জুলাই সকাল ১০টা পর্যন্ত মোট ১০ হাজার ৩৯১ জনের রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৯৩৫ জন। গুরুতর অবস্থায় ৩৭ জন রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁদের মধ্যে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছে না, যা নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, দাউদকান্দি পৌরসভার দোনারচর গ্রাম থেকেই উপজেলায় ডেঙ্গুর সূচনা হয়। ওই গ্রামের এক বাসিন্দা প্রথম ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এর পর থেকে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
গোমতীর চরে ১১ হাজার হেক্টর সবজিক্ষেত পানির নিচে
হঠাৎ ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের পানিতে তলিয়ে গেছে নদীর দুই পাশের চরের ফসলি জমি। এর মধ্যে রয়েছে চরের বিস্তীর্ণ এলাকার সবজির ক্ষেত। কৃষকরা বলছেন, গত বছরের বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে না উঠতেই এবার হঠাৎ বন্যায় ডুবছে তাদের ফসল। কষ্টের ফসল হারিয়ে যাওয়ায় কাঁদছেন চরের কৃষকরা। অনেককেই ডুবন্ত জমি থেকে নানা জাতের সবজি তুলে নিতে দেখা গেছে।
কৃষি বিভাগ বলছে, হঠাৎ গোমতীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরের প্রায় ১১ হাজার হেক্টর জমির সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার আমতলী ও কাচিয়াতলীসহ কয়েকটি এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, চরের যেসব জমিতে করলা, মুলা, লাউসহ বিভিন্ন সবজির চাষ হয়েছিল, তা এখন পানিতে ডুবে আছে। কৃষকের অনেকেই মাথায় হাত দিয়ে নদীর কিনারায় বসে আছেন। কৃষকরা বলছেন, আর মাত্র দুই দিন সময় পেলেই এসব সবজি বাজারে তোলা যেত।
আমতলী এলাকার কৃষক সুজন মিয়া জানান, গোমতী নদীর এ চরে প্রায় ৩ একর জমিতে নানা জাতের সবজি চাষ করেছেন। আর দুই দিন পরই এসব ফসল বাজারে বিক্রি করা যেত। কিন্তু গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতে সব ফসল তলিয়ে গেছে। তার ভাষ্য, তিনি ব্যাংক ঋণ ও কিস্তি নিয়ে দুই বছর আগে কৃষিকাজ শুরু করেছেন। তার প্রায় ১২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। কীভাবে ঋণ পরিশোধ করবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তাঁর।
কাচিয়াতলী এলাকার কৃষক মনির হোসেন বলেন, ‘গত বছরের বন্যায় আমরা কোনো ক্ষতিপূরণ পাইনি। এবারের বন্যায় আমাদের সব ফসল পানিতে ডুবে গেল। পানিতে নেমে কিছু করলা সংগ্রহ করেছি, বাকি সব নষ্ট হয়ে গেছে।’ বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া ও দেবীদ্বারের বেশ কিছু এলাকার চিত্র একই।
পাঁচথুবী এলাকার কৃষক আবদুল কাদের ও আবদুস সালাম জানান, ৩-৪ দিন সময় পেলেই সবজি বিক্রি করতে পারতেন তারা। কিন্তু পানিতে সব ফসল ডুবে গেছে। মাচায় কিছু করলা আছে, সেগুলো নৌকায় করে গিয়ে সংগ্রহ করছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, গোমতী নদীর চরে চলতি বন্যায় প্রায় ১১ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার পানি কমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে। সব উপজেলা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সরকার যদি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য বরাদ্দ দেয় তাহলে তারা পাবেন।
কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান জানান, গোমতী নদীর বিপৎসীমার সর্বোচ্চ পরিমাপ ১১ দশমিক ৩০ মিটার হলেও পানির উচ্চতা ৬ থেকে ৮ মিটার হলেই চরের অনেক কৃষিজমি ডুবে যায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় এই নদীর পানি ৯ দশমিক ৪৮ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছিল।