পুঁজিবাজারে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে তালিকাভুক্ত ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস ব্লেন্ডার্স লিমিটেডের শেয়ারের দাম ১৬ দিনে বেড়েছে ১ হাজার ২৪৬ টাকা বা ৯৩ শতাংশ। এ কোম্পানির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়া ও লেনদেনের মধ্যে কোনো কারসাজি আছে কি না, তা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি। এছাড়া, কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে যাতে সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন না হয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউজের অনুমোদিত প্রতিনিধি (এআর), কমপ্লায়েন্স অফিসার অথবা সিইওকে অবহিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে ডিএসইকে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন বিএসইসতে জমা দিতে বলা হয়েছে।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) বিএসইসির সার্ভেইল্যান্স বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি ডিএসইর চিফ রেগুলেটরি অফিসারকে (সিআরও) দেওয়া হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

এর আগে গত ২৪ মার্চ অস্বাভাবিক দাম বাড়া ও শেয়ারের লেনদেনের বিষয়ে ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস ব্লেন্ডার্স লিমিটেডের কাছে চিঠি দেয় ডিএসই কর্তৃপক্ষ। পরের দিন ২৫ এপ্রিল কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ওই চিঠির জবাবে জানায়, কোনো রকম অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই তাদের কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ছে।

ডিএসইর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস ব্লেন্ডার্স লিমিটেডের শেয়ারের দাম ছিল ১ হাজার ৩৩৭.

৬০ টাকা। গত ১৫ এপ্রিল তা বাড়তে বাড়তে ঠেকেছে ২ হাজার ৫৮৪.৫০ টাকায়। অর্থাৎ মাত্র ১৬ কার্যদিবসের ব্যবধানে ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস ব্লেন্ডার্স লিমিটেডের শেয়ারের দাম বেড়েছে ১ হাজার ২৪৬.৯০ টাকা বা ৯৩.২১ শতাংশ। রবিবার কোম্পানিটির শেয়ার ২ হাজার ২৯০.৭০ টাকায় লেনদেন হয়েছে। সোমবার দুপুর ১টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ডিএসইতে ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস ব্লেন্ডার্স লিমিটেডের শেয়ার ২ হাজার ২১৮.৭০ টাকায় লেনদেন হয়েছে।

বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সম্প্রতি ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস ব্লেন্ডার্স পিএলসির শেয়ারমূল্য ও লেনদেনের পরিমাণে উল্লেখযোগ্য এবং অস্বাভাবিক পরিবর্তন লক্ষ করা গেছে, যা সন্দেহজনক। ওই প্রেক্ষাপটে নির্দেশ দেওয়া হলো যে, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (স্টক ডিলার, স্টক ব্রোকার ও অনুমোদিত প্রতিনিধি) বিধিমালা, ২০০০-এর বিধি ১১ এবং দ্বিতীয় তফসিলের আচরণবিধি বিধি ৬ ও ৮ অনুসারে কোনো সন্দেহজনক লেনদেন সম্পাদনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অনুমোদিত প্রতিনিধি (এআর) বা কমপ্লায়েন্স অফিসার বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে (সিইও) অবহিত করতে বলা হলো। সেই সঙ্গে ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টসের শেয়ার লেনদেন বিষয়ে তদন্ত করে এই চিঠির তারিখ থেকে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে কমিশনে একটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হলো।

প্রসঙ্গত, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস ব্লেন্ডার্স পিএলসি রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। এ কোম্পানিতে রাষ্ট্রের মালিকানা ৫১ শতাংশ।

ঢাকা/এনটি/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল নদ ন র ব এসইস

এছাড়াও পড়ুন:

৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ

‎পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

আরো পড়ুন:

সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা

পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা

‎গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‎বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

‎সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি। 

এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর‍্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

‎ঢাকা/এনটি/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
  • সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা
  • ২২ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ দেবে বিএসইসি
  • পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা
  • বিএসইসির তদন্তের মুখে ভ্যানগার্ড ও ক্যাপিটেক অ্যাসেট
  • দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে পুঁজিবাজার ও বন্ডকে ব্যবহারের প্রস্তাব
  • ৫ কোম্পানির শেয়ার কারসাজি: ৩ জনকে দেড় কোটি টাকা অর্থদণ্ড