নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পুলিশ সপ্তাহ শুরু হচ্ছে আজ। পুলিশ সপ্তাহে সাইবার ইউনিট গঠন, হেফাজতে মৃত্যু আইন বাতিলসহ উত্থাপন করা হবে বেশ কিছু দাবি-দাওয়া। চার দিনব্যাপী এবারের পুলিশ সপ্তাহের মূল প্রতিপাদ্য– ‘আমার পুলিশ আমার দেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ’। 

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সকাল সাড়ে ১০টায় রাজারবাগ পুলিশ অডিটরিয়ামে পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে ভাষণ ও পদক প্রদানের মধ্য দিয়ে এবারের পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন। এরপর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বসবেন পুলিশ কর্মকর্তারা। পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) স্টলের উদ্বোধন ও পরিদর্শন করবেন তারা। 
অন্যান্য বছর প্যারেডের মাধ্যমে পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধন হলেও এবার তা থাকছে না। কমিয়ে আনা হয়েছে সময়সীমাও। এ ছাড়া প্রথমবারের মতো এবার পুলিশ সপ্তাহে নানা শ্রেণি-পেশার নাগরিকদের সঙ্গে বাহিনীর নীতিনির্ধারকদের মতবিনিয়ম সভা অনুষ্ঠিত হবে। 

পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে গতকাল সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে আইজিপি ড.

বাহারুল আলম বলেন, অন্যবারের মতো এবার এতো আড়ম্বরপূর্ণভাবে পুলিশ সপ্তাহ পালন করা হবে না। ৬২ জন পুলিশ সদস্যকে পুলিশ পদক দেওয়া হবে। ৫ আগস্টের পর অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়ে পুলিশকে নতুন করে যাত্রা শুরু করতে হয়েছে। পুলিশ পুরোপুরি কর্মক্ষম বা পূর্ণ সেবা দেওয়ার মতো অবস্থায় গেছে এটা বলার সুযোগ নেই। তবে কয়েক মাসে প্রতি মুহূর্তে আমাদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে। 

তিনি বলেন, দেশে জঙ্গি নেই–এই নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারবে না। এর আগে অনেকে জঙ্গিবাদের অভিযোগে কারাভোগ করেছেন। জেএমবির বিষয় আমরা জানি। এ মুহূর্তে পুলিশ বিভাগ সজাগ আছে। বর্তমান জঙ্গি মোকাবিলার মতো সক্ষমতা পুলিশ বিভাগের আছে। 

পুলিশের বদলি, পদোন্নতি ও ছাড়পত্রের মতো বিভিন্ন অন্যায় আবদারে জর্জরিত হতে হচ্ছে বলে জানান আইজিপি। বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের মতো পুলিশ সংস্কার কমিশনের কাজ কতদূর অগ্রসর হয়েছে সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে কিছু সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ যেন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, সেটি পুলিশ বাহিনী চায়। এই পুরো বিষয়টি এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেখছে। 
মব ভায়োলেন্স সম্পর্কে পুলিশপ্রধান বলেন, এ বিষয়ে পুলিশ তৎপর আছে। এমনকি এ ক্ষেত্রে কোনো পুলিশ সদস্যের গাফিলতি থাকলেও সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ২৬৮ কর্মকর্তা ও সদস্য পাচ্ছেন আইজিপি’স এক্সেমপ্ল্যারি গুড সার্ভিসেস ব্যাজ বা আইজি’জ ব্যাজ। পুলিশ সপ্তাহের তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার রাজারবাগ মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্সে তাদের এ ব্যাজ পরিয়ে দেবেন পুলিশ মহাপরিদর্শক। 

এবারের পুলিশ সপ্তাহে থাকছে নতুন কিছু ইভেন্ট। প্রথম দিন এসবি এবং পরের দিন সিআইডি, র‌্যাব, পিবিআইসহ সব ইউনিট তাদের কর্মকাণ্ড ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা উপস্থাপন শেষে উপদেষ্টা ও সচিবদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বসবেন পুলিশ কর্মকর্তারা। পুলিশ সপ্তাহের তৃতীয় দিন ব্যাচ প্রদানের পর ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক সম্মেলনে যোগ দেবেন আইজিপি। পরে নাগরিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগ দেবেন তারা। 
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের মতামতকে গুরুত্ব দিতে চায় পুলিশ। বিশিষ্ট নাগরিক ও সংবাদকর্মীদের মতামতও শুনতে চায় বাহিনী। এ জন্য প্রথমবারের মতো নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের মতো অনুষ্ঠান রাখা হয়েছে।

দাবি-দাওয়ার মধ্যে যা থাকছে
পুলিশে ক্ষতিপূরণ ভাতা চালু, যানবাহন ক্রয়, কর্মীদের দাফন বা সৎকারের জন্য আর্থিক সহায়তা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, স্বাধীন সাইবার ইউনিট গঠন, জনবল বৃদ্ধি, বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালগুলোর চিকিৎসাসেবা উন্নতকরণ, পুলিশ মেডিকেল কলেজ স্থাপন, নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ তৈরি এবং ভূমি বিরোধ ও পরিবেশ আইন বাস্তবায়নসংক্রান্ত অতিরিক্ত কাজের জন্য নীতিমালা প্রণয়ন। এছাড়া পুলিশের পুরোনো দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন বাতিল, ডিআইজি পদ সংখ্যা বৃদ্ধি এবং এভিয়েশন ইউনিট চালু করা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর মকর ত র র মত আইন ব ইউন ট আইজ প সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

রাজকীয় ভোজে ট্রাম্প–মেলানিয়াকে কী কী খাওয়ালেন রাজা চার্লস

জমকালো সাজে সেজেছে যুক্তরাজ্যের উইন্ডসর ক্যাসলের সেন্ট জর্জেস হল। উপলক্ষটাও অনন্য, রাজকীয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সস্ত্রীক যুক্তরাজ্য সফর উপলক্ষে এখানে রাজকীয় নৈশ্যভোজ আয়োজন করেন রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানি ক্যামিলা।

বুধবার রাতের রাজকীয় এ আয়োজনে কূটনীতি, খাবার, ঐতিহ্য, সংগীত আর আভিজাত্য একসুতোয় বাঁধা পড়েছিল। ট্রাম্প–মেলানিয়াসহ রাজার অতিথি হয়েছিলেন বিশ্বের ১৬০ জন গণমান্য ব্যক্তি।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্মানে রাজা তৃতীয় চার্লসের আয়োজন করা রাজকীয় ভোজের টেবিল। যুক্তরাজ্যের উইন্ডসর ক্যাসলের সেন্ট জর্জেস হল, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ