আমলাদের ক্ষমতার লড়াই থেকেই কারিগরি শিক্ষায় অবহেলা: ড. দেবপ্রিয়
Published: 29th, April 2025 GMT
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার জন্য নাগরিক প্ল্যাটফর্ম (এসডিজি) এর আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, শিক্ষা খাতে প্রয়োজনীয় সংস্কারে গতি আনতে পারেনি অন্তর্বর্তী সরকার। যে কারণে ছাত্র আন্দোলন আরও জোরদার হচ্ছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) অফিসে ‘বাংলাদেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা: বর্তমান পরিস্থিতি এবং সংস্কার চিন্তাভাবনা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, শ্বেতপত্র ও টাস্কফোর্সের সুপারিশ আমলে না নেওয়াটা কষ্টদায়ক। এ সময় কারিগরি শিক্ষায় অবহেলার জন্য আমলাদের দায়ী করা হয়।
সরকারকে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রতি যথাযথ মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান ড.
তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের বাজেটে পুরো শিক্ষাখাতে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ হয়, তার মাত্র ৪ দশমিক ৬ শতাংশ কারিগরি শিক্ষা জন্য। আবার সেখানেও অগ্রাধিকার পাচ্ছে অবকাঠামোগত উন্নয়ন। ফলে মানসম্মত শিক্ষার অভাব বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশে বৈষম্য বৃদ্ধির সূতিকাগার প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা। অথচ ছাত্র আন্দোলনে ক্ষমতায় আসা এই সরকার এখন পর্যন্ত একটি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে পারেনি যা বড় ব্যর্থতা বলে উল্লেখ করেন তিনি।
‘কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রতি বৈষম্যমূলক নীতির পরিবর্তন করা উচিত। এই ক্ষেত্রগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। এর পাশাপাশি, আমাদের মানব সম্পদের বিকাশ করতে হবে।’, বলেন তিনি।
সিপিডি ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, সংস্কার আসলে কতটুকু হচ্ছে তারচেয়ে বড় ব্যাপার হলো আগামীর রাজনৈতিক ইশতেহারে কারিগরি শিক্ষার ব্যাপারে স্পষ্ট আলাপ থাকতে হবে। শুধু শিক্ষাক্ষেত্রে মোট জিডিপির ৩ থেকে ৫ শতাংশ বরাদ্দ থাকবে এমন নয়। কারিগরি শিক্ষার বৃত্তি, যন্ত্রাংশ ক্রয় ও অবকাঠামো উন্নয়নে কত টাকা ব্যয় করা হবে সেটি স্পষ্টভাবে জানাতে হবে।
তিনি বলেন, পাঠ্যসূচি থেকে শুরু করে শিক্ষকদের আধুনিকায়ন করতে হবে। প্রয়োজনে নতুন শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। পুরোনো শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০৩০ সালের মধ্যে মানসম্পন্ন কারিগরি শিক্ষা ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণে বৃহত্তর এবং অধিক ন্যায়সঙ্গত প্রবেশাধিকার সুনিশ্চিত করা টেকসই উন্নয়নের আওতায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সূচক। কিন্তু এক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিপিডির সম্মানিত ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান, তারান্নুম জিনান, সিপিডির গবেষণা সহযোগী শৌর্য তালুকদার ও নাইমা জাহান তৃষা, সংলাপ সহযোগী রিফাত বিন আওলাদ এবং রিসার্চ ইন্টার্ন মালিহা রহমান।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ও ব ত ত ম লক
এছাড়াও পড়ুন:
টানা বর্ষণে বেহাল বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক, খানাখন্দে ভোগান্তি
টানা বর্ষণে পটুয়াখালী থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের প্রায় ৭১ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এতে ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট যাত্রীদের। মহাসড়কটির একাধিক বাঁকে খানাখন্দের কারণে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ছে।
মহাসড়কটিতে চলাচলকারী বাস মালিক সমিতি ও সওজের সূত্র জানা যায়, এই মহাসড়কে প্রতিদিন অন্তত দুই হাজার যানবাহন চলাচল করে। বিশেষ করে পদ্মা সেতু চালুর পর পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে কুয়াকাটাগামী যানবাহনের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়েছে। তবে বর্তমানে সড়কটির বেহাল দশার কারণে প্রতিদিনই ভোগান্তি বাড়ছে।
সংশ্লিষ্ট রুটের একাধিক চালক ও যাত্রী বলেন, ভারী বর্ষণে সড়কের পিচ নরম হয়ে গাড়ির চাপে উঠে যাচ্ছে। ফলে নতুন নতুন গর্ত তৈরি হচ্ছে। পটুয়াখালীর কয়েকটি এলাকাসহ কুয়াকাটাগামী মানুষের যাতায়াতের প্রধান সড়কটির এমন বেহাল দশায় অতিষ্ঠ তাঁরা।
শ্যামলী এনআর পরিবহনের চালক কেরামত আলী বলেন, সড়কটিতে এত গর্ত যে স্টিয়ারিং নিয়ন্ত্রণ করতে সমস্যা হচ্ছে। যাত্রীদেরও দুর্ঘটনার আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে। তুহিন পরিবহন নামে আরেকটি বাসের চালক কাওসার হাওলাদার বলেন, দ্রুত এই সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ না নিলে সড়কটি আরও বেহাল হয়ে পড়বে।
সম্প্রতি মহাসড়কটি ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রতি ৫০ গজ পরপরই খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে আমতলী চৌরাস্তা, মানিকঝুড়ি, শাখারিয়া, সাহেববাড়ি, আমড়াগাছিয়া, পাটুখালী, বান্দ্রা ও পখিয়া এলাকায় এসব গর্তের পরিমাণ বেশি।
বরিশাল থেকে পটুয়াখালী পর্যন্ত ভালোয় ভালোয় এসেছেন জানিয়ে কুয়াকাটাগামী যাত্রী আল আমিন, পটুয়াখালীর পর আর যেন বাস চলছে না। কিছুক্ষণ পর পর ব্রেক কষতে হচ্ছে। সড়কের অবস্থা বেহাল হওয়ায় একদিকে ঝাঁকুনি, অন্যদিকে সময়ও লাগছে বেশি। আর ঝুঁকিও অনেক বেশি।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০০০ সালে নির্মিত এই সড়কে পদ্মা সেতু চালুর পর যানবাহনের সংখ্যা বাড়ানো হলেও অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি। মহাসড়কের এই অংশ দেখভাল করে বরগুনা ও পটুয়াখালী দুই জেলার সওজ।
এ ব্যাপারে বরগুনা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী কমারেশ বিশ্বাস বলেন, এবার দক্ষিণাঞ্চলে বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে সড়কের পিচ আলগা হয়ে যায় এবং যানবাহনের চাকায় তা সরে গিয়ে দ্রুত খানাখন্দ তৈরি হয়। প্রাথমিকভাবে ভ্রাম্যমাণ দল দিয়ে জরুরি সংস্কারের কাজ চলছে। চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ পেলে পূর্ণাঙ্গ সংস্কার কার্যক্রম শুরু করা হবে।
সওজের পটুয়াখালী অঞ্চলে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাসুদ করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি।’