কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার জবাব দিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কখন, কোথায়, কীভাবে হামলা চালানো হবে তা ঠিক করতে সশস্ত্র বাহিনীকে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। 

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী মোদি নিজ বাসভবনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহান-সহ তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন। সেখানেই মোদি স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছেন যে, যখন খুশি, যেখানে খুশি পেহেলগামে হামলার বদলা নিতে পারে ভারতীয় সেনা, বিমান ও নৌ-বাহিনী। কীভাবে হামলা চালানো হবে, কীভাবে পরিকল্পনা করা হবে- সে সব সিদ্ধান্তও স্বাধীনভাবেই নেবে এই তিন বাহিনী। 

যেমনভাবে মনে হবে, সেরকমভাবেই অভিযান চালানোর জন্য তাদের স্বাধীনতা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আর সেই ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে তিন বাহিনীর ওপরই পূর্ণ আস্থা রেখেছেন তিনি।

ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিং এবং নৌ বাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশকুমার ত্রিপাঠীর সামনেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রতিক্রিয়া কী হবে, কীভাবে সেই পদক্ষেপ নেওয়া হবে, লক্ষ্যবস্তু কী হবে এবং কখন ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা নির্ধারণ করার পূর্ণ স্বাধীনতা আছে।

বৈঠক চলে মোট ৯০ মিনিট। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং গত সপ্তাহেই পাকিস্তানকে ‘কঠোর জবাব’ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। একই সুর ছিল প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কণ্ঠেও।

সেই আবহেই ভারতে একের পর এক জরুরি বৈঠক চলছে। যার ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে উচ্চপর্যায়ের ওই বৈঠক হয়।

এর ঠিক এক সপ্তাহ আগের মঙ্গলবারেই জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে বৈসরন উপত্যকায় সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হন। তাদের অধিকাংশই পর্যটক ছিলেন।

পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বার ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজিট্যান্স ফ্রন্ট’ এই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তারপর থেকেই কূটনৈতিক দিক থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে ভারত।

বন্ধ করা হয়েছে সিন্ধু পানিচুক্তি। নেওয়া হয়েছে আরও একাধিক পদক্ষেপ। জঙ্গি-নিধন অভিযানও চালাচ্ছে ভারত। পেহেলগামে হামলায় যে জঙ্গিরা জড়িত আছে বলে ধারনা করা হচ্ছে, তাদেরকে এখনও ধরা না গেলেও সন্ত্রাসবাদী নিধন অভিযান চলছে। খুঁজে-খুঁজে বের করা হচ্ছে জঙ্গিদের। খবর এনডিটিভি

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ব ধ নত মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় ১০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচি ঘিরে হামলা ও সংঘর্ষের জেরে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) বাসভবনে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সদর থানার সহকারী উপপরিদর্শক ফারুক হোসেন বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি করেন।

মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৪১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ পৌর পার্ক, লঞ্চঘাট, কাঁচাবাজার এলাকাসহ সড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে জনগণের মনে ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে যান চলাচল ব্যাহত করা হয়। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের পক্ষে মিছিল করা হয়। আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে ও এনসিপির পথসভা নস্যাৎ করতে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ সরকারি সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করতে জনসাধারণের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করেন। এ সময় জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।

এ নিয়ে গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা ও ককটেল নিক্ষেপ, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, জেলা কারাগারে হামলা, জেলা প্রশাসকের বাসভবনে হামলা, রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়ানোর অভিযোগে ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মোট ১৪টি‌ মামলা করা হলো। সদর, কাশিয়ানী, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া থানায় মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে। ১৪টি মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১ হাজার ১৭৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ১৪ হাজার ৫৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় ১৬ জুলাই থেকে গত সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

১৬ জুলাই এনসিপির কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা হামলা চালান। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেদিন প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। রাতেই কারফিউ জারি করা হয়। পরে কারফিউর মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। পরে ২০ জুলাই রাত আটটায় কারফিউ ও ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় মামলা
  • গোপালগঞ্জে ডিসির বাসভবনে হামলার ঘটনায় ১০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা