চোট আর নিষেধাজ্ঞায় ডিফেন্ডার সংকটে রিয়াল মাদ্রিদ
Published: 30th, April 2025 GMT
রক্ষণভাগে একের পর এক ধাক্কা খাচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ। কোপা ডেল রে’র ফাইনালে অখেলোয়াড়সুলভ আচরণের দায়ে ছয় ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন আন্তোনিও রুডিগার। একইসঙ্গে লেফটব্যাক ফারল্যান্ড মেন্ডি ও সেন্টারব্যাক ডেভিড আলাবার চোটে বেশ বেকায়দায় পড়েছে কার্লো আনচেলত্তির দল।
স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের (আরএফইএফ) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রুডিগার ছয় ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন। যদিও তার হাঁটুর ইনজুরির কারণে সম্প্রতি অস্ত্রোপচার করানো হয়েছে। রিয়াল জানিয়েছে, পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শেষ করতে যে সময় লাগবে, তা নিষেধাজ্ঞার সময়সীমার সঙ্গেই মিলে যেতে পারে।
তবে বড় ধাক্কা এসেছে ফারল্যান্ড মেন্ডির ইনজুরিতে। কোপা ডেল রে’র ফাইনালের মাত্র ১১ মিনিটেই মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ধরা পড়ে, তার ডান উরুর মাংসপেশি ছিঁড়ে গেছে। ফলে অন্তত ১০ থেকে ১২ সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকতে হবে এই ফরাসি লেফটব্যাককে। মৌসুম শুরুর আগেই ফিরতে পারবেন কি না, সেটাও অনিশ্চিত।
এরপর আসে ডেভিড আলাবার খারাপ খবর। বাঁ-হাঁটুর চোটে পড়া এই অস্ট্রিয়ান সেন্টারব্যাককে মাঠের বাইরে থাকতে হতে পারে ছয় থেকে আট সপ্তাহ। যদি ছয় সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠেন, তবে ক্লাব বিশ্বকাপে পাওয়া যেতে পারে তাকে। তবে সময় বেশি লাগলে সেই সম্ভাবনাও ঝুঁকির মুখে পড়বে।
এই পরিস্থিতিতে রক্ষণভাগে আনচেলত্তির হাতে আছেন কেবল ফ্রাঙ্ক গার্সিয়া ও জেসুস ভাল্লেয়ো। তবে ভাল্লেয়ো পুরো মৌসুমে লিগে মাত্র একটি ম্যাচ খেলেছেন। ফলে বিকল্প হিসেবে দেখা যেতে পারে মিডফিল্ডার চুয়ামেনি ও কামাভিঙ্গাকে, যারা অতীতে রক্ষণে খেলেছেন। তবে তারাও ক্লান্তি ও ইনজুরির ঝুঁকিতে রয়েছেন। সঙ্গত কারণেই আনচেলত্তির পরিকল্পনায় ধাক্কা লাগছে।
উল্লেখ্য, কোপা ডেল রে’র ফাইনালে রুডিগারের সঙ্গে লাল কার্ড দেখেছিলেন লুকাস ভাসকুয়েজ ও জুড বেলিংহ্যামও। তবে প্রমাণের অভাবে বেলিংহ্যামের লাল কার্ড বাতিল করা হয়েছে, আর ভাসকুয়েজ কোপায় দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছেন।
চলতি মৌসুমে ইতোমধ্যেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নিয়েছে রিয়াল। হাতছাড়া হয়েছে স্প্যানিশ সুপার কাপ ও কোপা ডেল রে শিরোপাও। এখন কেবল লা লিগা জয়ের লড়াইয়ে আছে তারা, যেখানে বার্সেলোনার চেয়ে চার পয়েন্ট পেছনে অবস্থান করছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পাল্টাপাল্টি হামলার তীব্রতা বাড়ল
ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা ঘিরে আরও অশান্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হামলার তীব্রতা বাড়াচ্ছে দুই দেশ। ইসরায়েলে গত শনিবার রাতভর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। একই রাতে ইরানের গ্যাসক্ষেত্র ও তেল শোধনাগারে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ হামলায় ইরানের কতজন নিহত হয়েছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি।
গতকাল রোববার ছিল দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলার তৃতীয় দিন। শনিবার রাতের পর রোববার দিনের বেলায়ও পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল ও ইরান। এদিন ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা জানিয়েছে ইয়েমেনের সশস্ত্র
গোষ্ঠী হুতি। চলমান সংঘাতে এই প্রথম ইরানপন্থী কোনো গোষ্ঠী যোগ দিল। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশকে শান্ত করার জন্য প্রচেষ্টা শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ।
গতকাল রাত একটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছিল। এ রাতেও তেহরানের নিয়াভারান, ভালিয়াসর ও হাফতে তির স্কয়ার এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ইরানের পূর্বাঞ্চলে মাশহাদ বিমানবন্দরে একটি ‘রিফুয়েলিং’ উড়োজাহাজে আঘাত হানার কথা জানায় ইসরায়েলি বাহিনী। এই উড়োজাহাজগুলো আকাশে থাকা অবস্থায় অন্য উড়োজাহাজে জ্বালানি সরবরাহ করতে সক্ষম। ইরান থেকেও ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার খবর পাওয়া গেছে।
ইসরায়েলে ব্যাপক হামলা ইরানেরইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি ঠেকানোর কথা বলে গত বৃহস্পতিবার রাতে দেশটিতে প্রথমে হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই রাতে ইসরায়েলের দুই শতাধিক যুদ্ধবিমান ইরানের ‘পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র’ স্থাপনায় আঘাত হানে। শুক্র ও শনিবারও ইরানে হামলা চলে। পাল্টা জবাব দিচ্ছে তেহরানও। তবে ইসরায়েলে শনিবার রাতভর ইরান যে হামলা চালিয়েছে, তা ছিল সবচেয়ে ব্যাপক।
ইসরায়েলে শনিবার প্রথম দফায় ইরানের হামলা শুরু হয় রাত ১১টার পরপর। এ সময় ইসরায়েলের জেরুজালেম ও হাইফা শহরে বেজে ওঠে সাইরেন। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাইফায় অবস্থিত তেল শোধনাগার। পরে রাত আড়াইটার দিকে দ্বিতীয় দফায় হামলা শুরু করে ইরান। তখন তেল আবিব ও জেরুজালেমে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শনিবার রাতে দুই দফায় ৭৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। প্রথম দফায় ছোড়া হয় ৪০টি। এতে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের তামরা শহরে চারজন নিহত হন। দ্বিতীয় দফায় ছোড়া হয় ৩৫টি ক্ষেপণাস্ত্র। এর একটি আঘাত হানে তেল আবিবের কাছে বাত ইয়াম এলাকায়। এতে অন্তত ছয়জন নিহত ও প্রায় ২০০ জন আহত হন। এ ছাড়া রেহভোত শহরে আহত হয়েছেন ৪০ জন।
ইসরায়েলি হামলায় জ্বলছে ইরানের শাহরান তেলের ডিপো। গতকাল দেশটির রাজধানী তেহরানের কাছে।