মানুষ তুলনা পছন্দ করে। খেলাধুলায় আরও বেশি। কে কার চেয়ে ভালো, এ নিয়ে তর্ক-বিতর্কের শেষ নেই। লামিনে ইয়ামালের কথাই ধরুন। পরশু রাতে বার্সেলোনার হয়ে ১০০তম ম্যাচ খেলেছেন ১৭ বছর বয়সী এই উইঙ্গার। তখন থেকেই প্রশ্ন উঠছে, ১৭ বছর বয়সে ইয়ামাল যে উচ্চতায় পৌঁছেছেন, অতীতে আর কেউ সেখানে ছিলেন কি না?

স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মুন্দো দেপোর্তিভো উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে। তাঁদের বিশ্লেষণে বেরিয়ে এসেছে, ইয়ামাল এই বয়সে যতটুকু অর্জন করেছেন, তা পেলে ছাড়া আর কেউ ওই বয়সে পারেননি।

আরও পড়ুনলামিনে ‘মেসি’ ইয়ামাল: ৫০ বছরে একজন০১ মে ২০২৫

চ্যাম্পিয়নস লিগে পরশু রাতে সেমিফাইনাল প্রথম লেগে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে ৩-৩ গোলে ড্র করে বার্সেলোনা। এ ম্যাচে চোখধাঁধানো একটি গোল করেন ইয়ামাল। পাশাপাশি গোটা ম্যাচেই ইন্টারের ডিফেন্ডারদের তটস্থ রেখেছিলেন এই স্প্যানিশ তারকা।

বার্সার বয়সভিত্তিক দল থেকে ২০২৩ সালে মূল দলে জায়গা করে নেন ইয়ামাল। ট্রান্সফারমার্কেট জানাচ্ছে, বার্সার হয়ে এ পর্যন্ত ১০০ ম্যাচে ২২ গোল করার পাশাপাশি ৩৩টি গোল বানিয়েছেন ইয়ামাল। তাঁর ক্লাবের ১২৫ বছরের ইতিহাসেই সেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসি ১৭ বছর বয়স পর্যন্ত ৯ ম্যাচ খেলে ১ গোল করেছেন। গোলে সহায়তা নেই। একই বয়স পর্যন্ত আরেক কিংবদন্তি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ১৯ ম্যাচে ৫ গোল করার পাশাপাশি ৪ গোলে সহায়তা করেছেন।

ইন্টারের বিপক্ষে সেমিফাইনাল প্রথম লেগে দারুণ খেলেন ইয়ামাল.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ ল কর

এছাড়াও পড়ুন:

সঞ্চয়পত্র কেনায় ১০ পরামর্শ

মধ্যবিত্তদের জন্য সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ একটি ভালো উপায় হতে পারে। তবে বুঝেশুনে পরিকল্পনা করে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা উচিত। সুদের হার বেশি হলেই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা ঠিক নয়। সার্বিকভাবে নিজের প্রয়োজন, সময়, করহার ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা ভেবে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে হবে। এতে আপনার বিনিয়োগ হবে নিরাপদ।

মধ্যবিত্ত ও অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জন্য সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ যেমন নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য, তেমনি রাষ্ট্রীয় নিশ্চয়তাও আছে। তবে সঞ্চয়পত্র কেনার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ভালোভাবে বিবেচনা করা উচিত। এ জন্য ১০টি পরামর্শ বা টিপস দেওয়া হলো—

১. দ্রুত টাকা তুলতে চাইলে সঞ্চয়পত্র নয়

এখানে প্রথমেই আপনাকে ভাবতে হবে, আপনি কত দিনের জন্য টাকা বিনিয়োগ করতে চান? সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ সাধারণত ৩ থেকে ৫ বছরের জন্য হয়। যদি আপনি দ্রুত টাকা তুলতে চান, তবে সঞ্চয়পত্র উপযুক্ত নয়। কারণ, নির্দিষ্ট সময়ের আগে ভাঙালে মুনাফা কমে যায়।

২. সাড়ে সাত লাখ টাকার বেশি হলে মুনাফা কমে

বর্তমানে বাংলাদেশে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার বিনিয়োগ ও মেয়াদভেদে ১১ থেকে সাড়ে ১২ শতাংশের মধ্যে। সাড়ে সাত লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে ধাপে ধাপে সুদের হার কমে যেতে পারে। অন্যদিকে মুনাফার ওপর ১০ শতাংশ হারে উৎসে কর কাটা হয়। কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) না থাকলে এই হার ১৫ শতাংশ। পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত কোনো উৎসে কর কাটা হয় না।

৩. সঞ্চয়পত্রের মুনাফা খেয়ে ফেলতে পারে উচ্চ মূল্যস্ফীতি

বর্তমান দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজমান। এক বছর ধরে গড় মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের বেশি আছে। সঞ্চয়পত্র কিনে যে মুনাফা পাওয়া যাবে, তা এই উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে খুব বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব নয়। উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে সঞ্চয়পত্রের নির্দিষ্ট সুদের হার প্রকৃত অর্থে আপনার ক্রয়ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। তাই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্ত হলেও দীর্ঘ মেয়াদে সব সময় লাভজনক না–ও হতে পারে। তাই সঞ্চয়পত্র কেনার আগে মূল্যস্ফীতির বিষয়টি বিবেচনায় রাখুন।

৪. কত টাকা পর্যন্ত কেনা যাবে

আপনি চাইলে কোটি কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন না। একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন। যেমন পরিবার সঞ্চয়পত্র সর্বোচ্চ ৪৫ লাখ টাকা (নারীদের জন্য); ৫ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা এবং যৌথ নামে ৬০ লাখ টাকা; পেনশনার সঞ্চয়পত্র সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা (সরকারি অবসরপ্রাপ্তদের জন্য); তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা এবং যৌথ নামে ৬০ লাখ টাকা।

৫. কারা কিনতে পারবেন

বাংলাদেশি নাগরিক, অভিবাসী বাংলাদেশি এবং নির্দিষ্ট শর্তে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীরা। বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীরাও নির্ধারিত নিয়মে সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন। মনে রাখবেন, পরিবার সঞ্চয়পত্র শুধু নারীরা কিনতে পারেন।

৬. পাঁচ ধরনের কাগজপত্র প্রস্তুত রাখুন

সঞ্চয়পত্র কিনতে হলে পাঁচ ধরনের কাগজপত্র প্রয়োজন হয়। এগুলো হলো, জাতীয় পরিচয়পত্র; পাসপোর্ট সাইজ ছবি; ব্যাংক হিসাব নম্বর; টিআইএন সার্টিফিকেট (যদি থাকে); অর্থের উৎসের প্রমাণ (আয়কর বিবরণী বা বেতন স্লিপ)। তাই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের আগে এসব কাগজপত্র জোগাড় করুন।

৭. অনলাইন নিবন্ধন ছাড়া কেনা যাবে না

অনলাইন নিবন্ধন ছাড়া সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে না। তাই অনলাইন নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ২০২১ সাল থেকে অনলাইনে সঞ্চয়পত্র ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে (ডিএনএসএস) নিবন্ধন ছাড়া কেউ সঞ্চয়পত্র কিনতে পারছেন না।

৮. অগ্রিম পরিকল্পনা ছাড়া বিনিয়োগ নয়

আপনার জরুরি প্রয়োজনে টাকা প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু আপনার সব সঞ্চয় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা আছে। আপনি বিপাকে পড়বেন। কারণ, সঞ্চয়পত্র তাৎক্ষণিকভাবে ভাঙালে মুনাফা কমে যায়। তাই আপনার ভবিষ্যৎ প্রয়োজন বিবেচনা করে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করুন। তাই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের পর কিছু নগদ টাকা নিজের কাছে রাখতে পারেন।

৯. প্রতারণা এড়াতে অফিসে গিয়ে কিনুন

সঞ্চয়পত্র কিনতে দালাল বা ব্যক্তিপর্যায়ে লেনদেন একদম করবেন না। এটি করলে আপনার টাকা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। তাই ডাকঘর, বাংলাদেশ ব্যাংক বা নির্ধারিত বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে সঞ্চয়পত্র কিনুন।

১০. ব্যাংক হিসাব খুলে ঘরে বসেই মুনাফার টাকা নিন

সঞ্চয়পত্র কেনার আগে নিজের ব্যাংক হিসাব খুলে রাখুন। কারণ, সঞ্চয়পত্র কেনার সময়ই আপনাকে একটি ব্যাংক হিসাব নম্বর দিতে হয়। সেই হিসাবেই মুনাফার টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে জমা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ