দুই নারী ও এক শিশুকে ভারতে পাচারের চেষ্টা করার সময় শংকর অধিকারী (৩৯) নামে এক ভারতীয় নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে বিজিবি। বৃহস্পতিবার (১ মে) বিকেল ৫টার দিকে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শুক্রবার (২ মে) সকালে মহেশপুর ৫৮ বিজিবি ব্যাটেলিয়নের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার শংকর অধিকারী ভারতের দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাগদা থানার পূর্বহুদা গ্রামের নুকুল অধিকারীর ছেলে।

আরো পড়ুন:

আখাউড়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে যুবক আহত

ট্রেনে বিজিবির অভিযান, কোটি টাকার হেরোইন জব্দ

বিজ্ঞপ্তিতে বিজিবি জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে মহেশপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী বাঘাডাঙ্গা বিওপির নায়েক আবু হানিফ ভারতীয় নাগরিক শংকর অধিকারীকে গ্রেপ্তার করেন। সীমান্ত পিলার-৬০/৩৩ সংলগ্ন বাংলাদেশের ১ কিলোমিটার ভেতরে কাঞ্চনপুর গ্রামের ব্রিজের ওপর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গ্রেপ্তার শংকর অধিকারী দুই নারী ও এক শিশুকে সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের চেষ্টা করছিলেন। বিজিবির টহল দল তাকে গ্রেপ্তার করে। এসময় তার কাছ থেকে ৫০ হাজার ১১০ টাকা, ৮৫০ ভারতীয় রুপী এবং ৭ ওমানি রিয়েল জব্দ হয়েছে।

গ্রেপ্তারের পর শংকর অধিকারী ও দুই নারীর দেওয়া তথ্য যাচাই বাছাই শুরু করে বিজিবি। বেরিয়ে আসে নারী ও শিশু পাচারের চাঞ্চল্যকর কৌশলের অজানা তথ্য।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির বরাতে বিজিবি জানায়, গত বছরের ১১ নভেম্বর ৬ মাসের ভিসা নিয়ে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন শংকর অধিকারী। এরপর তিনি মাদারীপুরে রাজৈর থানার বড়খোলা গ্রামে তার আত্মীয়ের বাসায় অবস্থান নেন। সেখানে তিনি কৌশলে এক কিশোরীকে (১৩) বিয়ে করে ভারতে ফিরে যান। গত ১৭ এপ্রিল আবারো বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আসেন শংকর অধিকারী। এরপর বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে নিজের কথিত কিশোরী স্ত্রী, প্রতিবেশী যুথিকা বালা (২৯) ও তার ছেলে বাধন বৈদ্যকে নিয়ে মহেশপুর সীমান্তে আসেন শংকর অধিকারী। একপর্যায়ে দালালদের মাধ্যমে দুই নারী ও এক শিশুকে ভারতে পাচারের চেষ্টাকালে বিজিবির জালে আটকা পড়েন তিনি। 

শংকরের কথিত কিশোরী স্ত্রী ও অপর নারী যুথিকা হালদারের বরাতে বিজিবি জানায়, ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে পাচারের জন্য দুই নারী ও এক শিশুকে সীমান্ত এলাকায় নিয়ে আসেন শংকর অধিকারী। সীমান্ত এলাকায় পৌঁছানোর আগে পর্যন্ত ভিকটিম নারী ও শিশু শংকর অধিকারীর আসল উদ্দেশ্য বুঝতেও পারেননি। ভিকটিম নারী ও শিশু ভারতে প্রবেশের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না বলে তারা বিজিবির কাছে দাবি করেছেন।

শংকর অধিকারী বিজিবির কাছে জানিয়েছেন, কথিত স্ত্রীসহ দুজন নারী এবং এক শিশুকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে নিয়ে যাওয়ার জন্য  জনৈক দালাল আনোয়ারের সঙ্গে ৪৭ হাজার টাকার চুক্তি করেন। চুক্তি অনুযায়ী ওই দুই নারী ও শিশুকে ভারতে অনুপ্রবেশ করানোর পরে কথিত দালাল আনোয়ারকে টাকা দেওয়ার কথা ছিল শংকরের।

বিজিবি বলছে, আটক মানব পাচারকারী চক্রের হোতা শংকর অধিকারী কৌশলে নিজের টাকা ব্যয় করে ওই তিনজনকে ভারতে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। ভারতে নেয়ার পরে ওই তিনজনকে বিক্রি করে দিয়ে নিজের টাকা উসুল করার পরিকল্পনা ছিল পাচারকারীর। মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন নানা কৌশলে বাংলাদেশ থেকে ভারতে নারী ও শিশু পাচারের চেষ্টা করছে। গ্রেপ্তার শংকর অধিকারীকে মহেশপুর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। 

মহেশপুর থানার ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‍“গ্রেপ্তার পাচারকারী চক্রের হোতা ভারতীয় নাগরিক শংকর অধিকারীর বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে মামলা করা হয়েছে। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। নারী শিশুসহ তিন বাংলাদেশিকে যশোরের জাস্টিস এন্ড কেয়ার সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।”

ঢাকা/শাহরিয়ার/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উদ ধ র আটক গ র প ত র কর এক শ শ ক

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় চালান পৌঁছে প্রতি মাসে পান ৬ লাখ টাকা

আট বছর ধরে গাড়ি চালানোর পেশায় আছেন মো. শাহীন। প্রথমে চালাতেন ট্রাক, এখন যাত্রীবাহী বাস। তবে এটা তার মূল কারবারের আড়াল মাত্র। বাস চালানোর আড়ালে তিনি কক্সবাজার থেকে ঢাকায় আনেন ইয়াবার বড় চালান। প্রতি চালানে ১০–২০ হাজার পিস ইয়াবা থাকে। এগুলো পৌঁছানোর বিনিময়ে তিনি পান মোটা অঙ্কের টাকা। প্রতি মাসে গড়ে ছয়টি চালান এনে তিনি অন্তত ছয় লাখ টাকা পান। ফলে লাভজনক এ কারবারে তিনি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছেন।

সম্প্রতি রাজধানীর পূর্ব রামপুরা এলাকা থেকে বাসচালক শাহীন ও সুপারভাইজার সঞ্জিত রাজবংশীকে গ্রেপ্তার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। ওই সময় বাসটিতে তল্লাশি চালিয়ে ১৫ হাজার ৬০০ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। এই চালানটি ঢাকার গাবতলী এলাকায় পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল বলে জানা গেছে।

ডিএনসি ঢাকা মহানগর উত্তরের উপপরিচালক শামীম আহম্মেদ জানান, আন্তঃজেলা বাসের চালক–হেলপারদের একটি অংশ মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়েছে। এ কারণে বিভিন্ন রুটের পরিবহনকর্মীদের মাদকসংশ্লিষ্টতার তথ্য পেতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। এরপর গোপন তথ্যের ভিত্তিতে কক্সবাজার থেকে আসা শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস পূর্ব রামপুরার মোল্লা টাওয়ারের সামনে থামানো হয়। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদে চালক ও সুপারভাইজার স্বীকার করেন, তাদের কাছে মাদকদ্রব্য আছে। এরপর তাদের দেখানো অনুযায়ী চালকের আসনের নিচ থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছেন ডিএনসি ধানমন্ডি সার্কেলের পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল মামুন।

ডিএনসি ঢাকা মহানগর উত্তরের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, শাহীনের ভাষ্য অনুযায়ী, দুই বছর ধরে তিনি বাসে মাদক পরিবহনের কাজ করেন। এর আগে ট্রাক চালানোর সময় অন্য চালকদের মাধ্যমে এ কারবারের বিষয়ে জানতে পারেন। পরে টেকনাফের মাদক কারবারিদের সঙ্গে তার যোগাযোগ ও সখ্য গড়ে ওঠে। তিনি প্রতি ১০ হাজার পিস ইয়াবা ঢাকায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য আনুমানিক এক লাখ টাকা করে পান। এবারের চালানের জন্য পেতেন দেড় লাখের কিছু বেশি। তবে পৌঁছানোর আগেই তিনি ও তার সহযোগী ধরা পড়েন।

অভিযান সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইয়াবার চালানের প্রেরক ও প্রাপকসহ আরও কয়েকজনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। তাদের গ্রেপ্তার করা গেলে পুরো চক্রটিকে শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পেলে রোববার দেশে ফিরতে পারেন খালেদা জিয়া
  • ‘বাচ্চাটি যাবে না, ম্যাডাম’: ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে ৯ মাসের সন্তানের সঙ্গে মায়ের বিচ্ছেদ
  • প্রযোজক তার সঙ্গে রাত কাটাতে বলেন: অঞ্জনা
  • বৈষম্যবিরোধীদের তোপের মুখে যশোর মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ
  • শ্রীলঙ্কার মাটিতে ঘুরে দাঁড়িয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ
  • মিরাজ বীরত্বে দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখলো বাংলাদেশ
  • সেঞ্চুরির পর ৫ উইকেট, মিরাজ ধন্যবাদ দিলেন ৬ জনকে
  • পেশায় বাসচালক, আড়ালে করেন ইয়াবার কারবার
  • ঢাকায় চালান পৌঁছে প্রতি মাসে পান ৬ লাখ টাকা