বন্দরে চোর আখ্যা দিয়ে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে শহিদুল ইসলাম  রাহিম (২০) নামে এক পিকআপ চালক ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।  

এ ঘটনায় নিহতের মা রাশিদা বেগম বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার  (১লা মে ) রাতে ইকবালসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ্য করে আরো ১০/১২ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে বন্দর থানায় এ মামলা দায়ের করেন তিনি। যার মামলা নং- ১(৫)২৫ তাং- ১-৫-২০২৫ইং। 

এর আগে গত মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাতে বন্দর উপজেলার  মুছাপুর ইউনিয়নের দক্ষিন বারপাড়াস্থ  ইকবালের বাড়িতে নৃশংস এ  হত্যাকান্ডের ঘটে। নিহত পিকআপ চালক  রাহিম ওরফে রাইস (২৩) বন্দর উপজেলার বারপাড়া এলাকার শাহাবুদ্দিনের বাড়ির ভাড়াটিয়া হাবিবুর রহমানের ছেলে।

হত্যা মামলার আসামীরা হলো, বন্দর উপজেলার বারপাড়া এলাকার  মৃত রহম উদ্দিন মিয়ার ছেলে ইকবাল মুছাপুর এলাকার সোনা মিয়ার ছেলে সালাউদ্দিন তার স্ত্রী শিষ্টি বেগম, ছেলে হাসিব বন্দর উপজেলার বারপাড়া  এলাকার অহিদুল্লাহ মিয়ার ছেলে হিমেল একই এলাকার অলিউল্লাহ মিয়ার ছেলে  মাকসুদ একই এলাকার হযরত আলী মিয়ার ছেলে আমজাদ হোসেন, হযরত আলী মিয়ার ছেলে জামান, আবিল হোসেনের ছেলে রহমত আলী, কলিম উদ্দিন মিয়ার ছেলে হাবিব উল্ল্যাহ ও বাজুরবাগ এলাকার বাধন।

মামলার তথ্য সূত্রে জানা গেছে, বাদিনী ছেলে শহিদুল ইসলাম ওরফে রাহিম (২০) পেশায় একজন পিকআপ চালক। গত মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টায় বাদিনী  ছেলে পিকআপ চালক রাহিমকে তার নিজ ঘরে শুয়ে থাকা অবস্থায় দেখে বাদিনী তার  দোকানে চলে যাই।

রাত সাড়ে  ১০টায় বাদিনী কাজ শেষে দোকান বন্ধ করে বাসায় গিয়ে তার ছেলেকে না পেয়ে তার ছেলের মোবাইল নাম্বারে কল করিয়া ছেলেকে বাসায় আসার জন্য বলে। গত বুধবার (৩০ এপ্রিল)  রাত  ১২.

৪০ ঘটিকার সময় আমার ছেলে বাসায় ফিরিয়া না আসিলে বাদিনী তার ছেলের নাম্বারে কল করিলে সে কিছুক্ষনের মধ্যেই আসতেছে বলে জানায়।

পরবর্তীতে আমি ঘুমাইয়া গেলে রাত অনুমান ০১.৫০ ঘটিকার সময় বারপাড়া এলাকার শফিকের স্ত্রী তানিয়া আক্তার (২২) তাহার মোবাইল নাম্বার থেকে বাদিনীকে কল করিয়া জানায় যে, ইকবালের বাড়ীতে আপনার ছেলেকে মারপিট করিতেছে। আপনি দ্রুত চলিয়া আসেন।

উক্ত সংবাদ পাইয়া বাদিনী ও তার মেয়ে  উম্মে হাবিবা (১৬), আমার ছেলের স্ত্রী শাহানাজ (২৩) কে সাথে নিয়া রাত অনুমান ০২.১০ ঘটিকার সময় বন্দর থানাধীন বারপাড়া সাকিনস্থ ১ নং বিবাদী ইকবাল এর বাড়ীতে যাওয়ার পর এলাকার লোকজন জানায় যে, রাত অনুমান ০১.৩০ ঘটিকার সময় আমার ছেলে শহিদুল ইসলাম ওরফে রাহিম (২০), ১ নং বিবাদী ইকবাল হোসেন (২৫) এর ভাবি হাবিবা (২১) এর সহিত পরকিয়া করার সন্দেহে বিবাদীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে একই উদ্দেশ্যে আমার ছেলে শহিদুল ইসলাম ওরফে রাহিম (২০), কে আটক করিয়া মারপিট করিয়াছে।

আমি, আমার মেয়ে ও আমার ছেলের স্ত্রী ১ নং বিবাদী ইকবাল হোসেন (২৫) এর বাড়ীর উঠানে আসিয়া আমার ছেলেকে শরীরের বিভিন্নস্থানে গুরুতর জখম অবস্থায় মাটিতে পড়িয়া থাকা অবস্থায় দেখিতে পাই। তখন ২ নং বিবাদী আমার ছেলের মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য তাহার হাতে থাকা ইট দিয়া আমার ছেলের মাথায় ৮/৯ টি বারি মারিয়া গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে।

৩ নং বিবাদী শিষ্টি আক্তার আমার ছেলের পেটে লাথি মারিতে থাকে। আমার ছেলের মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য বিবাদী ১। মোঃ ইকবাল হোসেন (২৫), ২। সালাউদ্দিন (৪৫), ৩। শিষ্টি আক্তার (৩৮), ৪। হাসিব (২০), ৫। হিমেল (২১), ৬। মাকসুদ (২২), ৭। মোঃ আমজাদ হোসেন (২৫), ৮। মোঃ জামান (২৮), ৯। রহমত আলী (৪৫), ১০। হাবিব উল্লাহ (৩০), ১১। বাধন (২৫), সহ অজ্ঞাতনামা বিবাদীগন লাঠি দিয়া আমার ছেলের শরীরের বিভিন্নস্থানে বাইরাইতে থাকে।

আমি আমার ছেলেকে ছাড়িয়া দেওয়ার জন্য বিবাদীদের হাতে পায়ে ধরিয়া আকুতি মিনতি করিতে থাকি এবং আমার ছেলেকে চিকিৎসার জন্য দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করিতে থাকি।

একপর্যায়ে আমার মেয়ে এবং ছেলের স্ত্রী শাহানাজ এর সহায়তায় আমার ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে বিবাদীরা আমার ছেলেকে হাসপাতালে নিতে বাধা প্রদান করে এবং বলে যে, আমার ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হইলে সাদা কাগজে সই দিতে হইবে।

পরবর্তীতে থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসিয়া আমার ছেলেকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বন্দর, নারায়ণগঞ্জ নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার ছেলের অবস্থা আশংকাজনক দেখিয়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করিলে আমার ছেলেকে এম্বুলেন্সযোগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একই তারিখ সকাল অনুমান ১০.০০ ঘটিকার সময় আমার ছেলে মৃত্যুবরন করে।

এ ব্যাপারে বন্দর থানার ওসি তরিকুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।  আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যহত রয়েছে। 
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: হত য ন র য়ণগঞ জ আম র ছ ল র য় আম র ছ ল আম র ছ ল ক অবস থ য় অন ম ন র জন য এল ক র ইকব ল ম ওরফ

এছাড়াও পড়ুন:

৮ ঘণ্টা পর দুই বাংলাদেশিকে ফেরত দিল বিএসএফ

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার গাটিয়ারভিটা সীমান্ত থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া দুই বাংলাদেশিকে ফেতর দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

ফেরত দেওয়া বাংলাদেশিরা হলেন, বগুড়া জেলার মহাস্থান গড় বকুল তলা এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে সাজেদুল ইসলাম (২২) ও পাটগ্রাম উপজেলার পাটগ্রাম ইউনিয়নের রহমানপুর গাটিয়ারভিটা এলাকার মোস্তাফিজ হোসেনের ছেলে মাহফুজ ইসলাম ইমন (১৬)। তারা সম্পর্কে মামা-ভাগিনা।

শুক্রবার ৮ ঘণ্টা পর রাত দুইটার দিকে বুড়িমারী স্থলবন্দরের জিরো পয়েন্ট দিয়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের ফেরত দেওয়া হয়।

এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

বিজিবি জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় আন্তর্জাতিক সীমান্তের ৮২৫ নম্বর মেইন পিলারের ১ নম্বর সাবপিলার এলাকায় কাঁটাতারের বেড়ার এপাশে থাকা ভারতীয় চা বাগানে টিকটকের ভিডিও বানানোর সময় ওই দুই বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে যায় বিএসএফ। পরে বিজিবির আহ্বানে তাদের ফেরত দিতে সম্মত হয় বিএসএফ।

ইমন ও সাজেদুলের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিজিবি জানিয়েছে, বিএসএফ ওই দুজনের সঙ্গে কোনো দুর্ব্যবহার করেনি। দেশে আসার পর তাদের স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ