লন্ডনে উন্নত চিকিৎসা শেষে প্রায় চার মাস পর ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে খালেদা জিয়াকে বহন করা কাতারের আমিরের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়।

আজ রাত ৯টা ৪০ মিনিটে এ তথ্য নিশ্চিত করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান।

এর আগে সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ১০ মিনিটে খালেদা জিয়া দেশে ফেরার উদ্দেশে ছেলে তারেক রহমানের লন্ডনের বাসা থেকে বের হন। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এছাড়া বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিএনপি মিডিয়া সেলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

ডা.

এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়া ঢাকার উদ্দেশে লন্ডনের বাসা থেকে বের হয়েছেন। তার ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজে গাড়ি চালিয়ে মাকে বিমানবন্দর নিয়ে যাচ্ছেন। 

তিনি বলেন, গাড়িতে সামনের আসনে আছেন খালেদা জিয়া। আর পেছনের সিটে আছেন দুই পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমান।

জানা যায়, লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে কাতারের আমিরের দেওয়া বিশেষ উড়োজাহাজে করে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে রওনা করবেন তিনি। আগামীকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পোঁছানোর কথা রয়েছে বেগম খালেদা জিয়ার। তার সঙ্গে দুই পুত্রবধূ ও মেডিকেল বোর্ডের সদস্যসহ মোট ৯ জন আসছেন।

লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ নানা রোগের উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৮ জানুয়ারি কাতারের আমিরের পাঠানো রয়্যাল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনে যান বিএনপি চেয়ারপারসন।

লন্ডন ক্লিনিকে টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন খালেদা জিয়া। পরে ২৫ জানুয়ারি থেকে তিনি তার ছেলে তারেক রহমানের বাসায় লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ত র ক রহম ন ব এনপ রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

চলমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাজেট ব্যর্থ

জুলাই অভ্যুত্থানের পর একটা বড় প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল। তবে দেশের চলমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট। কিছু রাজস্ব পদক্ষেপ বাজেটের মূল প্রতিপাদ‍্যের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। বাজেটে ভৌত অবকাঠামোর পরিবর্তে মানুষের উপর অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, এসব লক্ষ্যকে বাস্তবায়নে যথাযথ বরাদ্দ বা পদক্ষেপ নেই। তবে বাজেটে কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ রয়েছে। এগুলো হলো কর ছাড়, বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ ও প্রণোদনা এবং ক্ষতিকর কার্যক্রমে উচ্চ কর আরোপ।

আজ রোববার রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) সংলাপে এসব কথা বলা হয়। অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। বক্তব্য রাখেন সংস্থাটির বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান।

ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জুলাই বিপ্লবের পর সবার মধ্যে একটা বড় পরিবর্তনের প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিলো। তবে অন্তবর্তী সরকারের বাজেট তা পূরণ হয়নি। বাজেটের মূল দর্শন যাদের বেশি আয় তাদের থেকে বেশি কর নিয়ে তুলনামূলক পিছিয়ে পড়াদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য নিরাপত্তায় ব্যয় হবে। তবে আমাদের বাজেটের তিন ভাগের দুই ভাগই পরোক্ষ কর।
 
মূল প্রবন্ধে ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক ও কাঠামোগত সংস্কার ছাড়া রাজস্ব বাড়বে না। সংস্কারের ক্ষেত্রে একটা সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দরকার। তিনি বলেন, ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেট আকারে ব্যতিক্রম। এটি চলতি অর্থবছরের বাজেটের তুলনায় ছোট। বাজেটে প্রবৃদ্ধির পরিবর্তে সামগ্রিক উন্নয়নে এবং ভৌত অবকাঠামোর পরিবর্তে মানুষের উপর অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, এসব লক্ষ্যকে বাস্তবায়নের জন্য যথাযথ বাজেট বরাদ্দ বা পদক্ষেপ নেই। বাজেটে কিছু ইতিবাচক উদ্যোগ প্রস্তাব করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে কর ছাড়, বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ ও প্রণোদনা এবং ক্ষতিকর কার্যক্রমে উচ্চ কর আরোপ। তবে, প্রস্তাবিত বাজেট সামগ্রিকভাবে চলমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলোর মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই চ‍্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে পারলে জনগণ ও ব্যবসায়ীদের জন্য স্বস্তি আনতে পারত। অন‍্যদিকে কিছু রাজস্ব পদক্ষেপ বাজেটের মূল প্রতিপাদ্য– ‘একটি সমতাভিত্তিক ও টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গঠন’ – এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক। যেহেতু ২০২৬ অর্থবছরের বাজেট অনুমোদনের পথে।

তিনি বলেন, সিপিডি বাজেট বাস্তবায়নকে দক্ষতার সঙ্গে সম্পাদনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করছে। এই প্রেক্ষাপটে, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধির জন্য বাজেট বাস্তবায়নের মধ্যমেয়াদি পর্যালোচনা এবং প্রয়োজনীয় সংশোধনের ব্যবস্থা থাকা দরকার।

ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাস্তবতার নিরিখে এই বাজেট বড়। তবে অর্থনৈতিক প্রয়োজনের তুলনায় একেবারে অপ্রতুল। এছাড়াও বাজেটে পরোক্ষ করের উপর নির্ভরশীল। এটি বাজেটের মূলদর্শনের সঙ্গে সাংর্ঘষিক। কারণ, বাজেটের লক্ষ‍্য সম্পদ পূর্ণবন্টন। অর্থাৎ ধনীদের কাছ থেকে কর নিয়ে গবিবদের দেওয়া হবে। কিন্তু পরোক্ষ কর বাড়লে দরিদ্রদের ওপর করের বোঝা চাপে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ