আজ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা চলবে
Published: 6th, May 2025 GMT
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ঢাকা ফেরার সময় যে লোক সমাগম হবে, সেই জটিলতা সামলে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে মঙ্গলবার (৭ মে) ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলতে দেওয়া হবে।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাতা ও পরিচালনাকারী ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (এফডিইই) কোম্পানি লিমিটেডের অপারেশন অ্যান্ড মেনটেইন্যান্স বিভাগের ব্যবস্থাপক হাসিব হাসান খান সোমবার (৬ মে) এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “মঙ্গলবার সকালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লন্ডন থেকে ঢাকায় ফিরবেন। সেসময় বিমানবন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত প্রচুর মানুষের সমাগম হবে। তখন যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলতে দেওয়ার অনুরোধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।”
তিনি বলেন, “মানুষের দুর্ভোগ চিন্তা করে ঢাকা মহানগর পুলিশের অনুরোধে আমরা সম্মতি দিয়েছি। সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল ও অটোরিকশা চলতে দেওয়া হবে। আমাদের সবগুলো র্যাম্প ব্যবহার করে মোটরসাইকেল এবং অটোরিকশা ওঠানামা করতে পারবে। প্রতিবার উঠলে ২০ টাকা করে টোল দিতে হবে।”
ঢাকায় যানজট কমানোর উদ্যোগের অংশ হিসেবে কাওলা থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ শুরু হয় ২০২০ সালে।
২০২৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশে যান চলাচল উদ্বোধন করেন। যান চলাচল শুরু হয় পরদিন ৩ সেপ্টেম্বর।
এরপর ২০২৪ সালের ২০ মার্চ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কারওয়ানবাজার র্যাম্প খুলে দেওয়া হয়। এ এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে প্রতিদিন ৫০ হাজারের বেশি যানবাহন চলাচল করে।
চালুর পর থেকেই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে দুই এবং তিন চাকার যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ। তবে গত বছর ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানের সময় টোলপ্লাজায় ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের পর কয়েকদিন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে সব ধরনের যানবাহন চলাচল করেছিল।
ঢাকা/হাসান/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
টেকসই অর্থনীতি গড়ে তুলতে প্রধান উপদেষ্টার পাঁচ প্রস্তাব
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে আরও কার্যকর অর্থায়নের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “চলুন আমরা এমন একটি মর্যাদা, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার অর্থনীতি গড়ে তুলি, যেখানে কেউ পিছিয়ে থাকবে না।”
এ বিষয়ে তিনি পাঁচটি অগ্রাধিকার তুলে ধরে বলেন, এগুলো কার্যকর করলে বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য, বৈষম্য ও আর্থিক অস্থিরতার সমস্যা সমাধান সম্ভব হবে। অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, “আমাদের ওপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর শোনার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। বাংলাদেশে আমরা বিশ্বাস করি দারিদ্র্য একজনের স্বপ্নের পথে বাধা হতে পারে না।”
বাসস লিখেছে, প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্থিতিশীল বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রথম দ্বিবার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন: টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যে অর্থায়নের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন’ শিরোনামের অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়া তার জন্য গর্বের বিষয়, যেখানে সম্ভাবনা ও দায়িত্ব একসাথে রয়েছে। তিনি বলেন, চতুর্থ আন্তর্জাতিক অর্থায়ন সম্মেলনে নেওয়া অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের জন্য বছরে চার ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ ঘাটতি পূরণ করা চ্যালেঞ্জিং হলেও অপরিহার্য।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, "আমরা আমাদের ওপর নির্ভরশীল মানুষের কণ্ঠস্বর শোনার দায়িত্ব নিচ্ছি। বাংলাদেশে আমরা বিশ্বাস করি, দারিদ্র্য একজনের স্বপ্নের পথে বাধা হতে পারে না।”
তিনি বলেন, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও সম্পদের ন্যায্য প্রবেশাধিকার হলো ন্যায়বিচারের মূল। একজন নারী যখন ব্যবসা শুরু করে, যুবসমাজ যখন সৌর শক্তি ও তথ্যপ্রযুক্তি পায়, বস্তিবাসী শিশু যখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যায় এবং পুষ্টি ও স্বাস্থ্যসেবা পায়, তখন পরিবর্তন বাস্তব ও টেকসই হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেভিলে অঙ্গীকার একটি নতুন কাঠামো প্রদান করে, যা জোরদার করে দেশীয় সম্পদ উত্তোলন, অবৈধ অর্থ প্রবাহ প্রতিরোধ, উন্নয়ন ব্যাংকগুলোর ক্ষমতায়ন এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহি নিশ্চিত করে।
তিনি পাঁচটি অগ্রাধিকারের কথা তুলে ধরেন, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্থায়নকে শক্তিশালী করবে:
১. ন্যায্যভাবে দেশীয় সম্পদ উত্তোলনে আন্তর্জাতিক সহায়তার সমর্থন থাকা প্রয়োজন। কর ব্যবস্থা প্রগতিশীল, স্বচ্ছ ও বহুজাতিক করপোরেশনগুলোর ন্যায্য অংশ নিশ্চিত করতে হবে। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক কর সহযোগিতা কাঠামোর আলোচনায় এই বৈষম্য দূর করতে হবে।
২. নবীন অর্থায়ন ও সামাজিক ব্যবসা যৌক্তিক অর্থায়ন এবং এমন উদ্যোগ যারা লাভ পুনরায় সমস্যার সমাধানে বিনিয়োগ করে, চাকরি, অন্তর্ভুক্তি ও মর্যাদা নিশ্চিত করে।
৩. বিশ্ব আর্থিক কাঠামো ও ঋণ শাসন সংস্কার; উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আরো শক্তিশালী কণ্ঠস্বর নিশ্চিত করতে হবে। ঋণকে কঠোরতা নয়, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের হাতিয়ারে রূপান্তর করতে হবে।
৪. স্বচ্ছতা, অবৈধ অর্থায়ন প্রতিরোধ ও নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা; জনগণ, বিশেষ করে যুবসমাজ, জানতে হবে কীভাবে সম্পদ ব্যবহার হচ্ছে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
৫. সবচেয়ে দুর্বলদের জন্য বিনিয়োগের ত্বরান্বিতকরণ; স্থিতিশীল বাসস্থান, জলবায়ু-বান্ধব কৃষি, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান নিশ্চিত করতে হবে।
ঢাকা/রাসেল