দেশে ফিরলেন খালেদা জিয়া, সঙ্গে ২ পুত্রবধূ
Published: 6th, May 2025 GMT
দীর্ঘ চার মাস পর যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে আজ মঙ্গলবার (৬ মে) দেশে ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তাঁর সঙ্গে দেশে ফিরেছেন দুই পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমান।
খালেদা জিয়াকে বহনকারী কাতারের রাজপরিবারের বিশেষ বিমান (এয়ার অ্যাম্বুলেন্স) আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিমানবন্দর থেকে গুলশানের খালেদা জিয়ার বাসভবন ‘ফিরোজা’ পর্যন্ত পুরো পথে তাকে অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা। দলীয় চেয়ারপারসনকে একনজর দেখতে এবং তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা ছুটে আসেন বিমানবন্দর সড়কে।
বিমানবন্দর থেকে গুলশানের ফিরোজা পর্যন্ত বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে দলীয় নেতাকর্মীরা ফুটপাতে অবস্থান নেন। অনেকেই হাতে ফুল, ব্যানার-প্ল্যাকার্ড ও খালেদা জিয়ার ছবি নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁদের স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে বিমানবন্দর সড়ক ও আশপাশের এলাকা।
বিমানবন্দর থেকে সরাসরি গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় যাবেন খালেদা জিয়া। পথে যাতে ভিড়ের কারণে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা না ঘটে, সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন রয়েছে পুরো রুটজুড়ে।
বাংলাদেশ সময় গতকাল সোমবার রাতে লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দর ত্যাগ করে। পথে কাতারের রাজধানী দোহায় যাত্রাবিরতি হয়।
লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গতকাল বিদায় জানান বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বাসা থেকে মাকে বিমানবন্দরে নিয়ে যান।
প্রসঙ্গত, গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যান বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তাঁর শারীরিক অসুস্থতার কথা জেনে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছিলেন। সেটিতেই তিনি লন্ডনে যান। কাতারের আমিরের দেওয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সেই আবার লন্ডন থেকে দেশে ফিরলেন তিনি।
লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। টানা ১৭ দিন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি ২৫ জানুয়ারি থেকে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় ছিলেন।
ঢাকা/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ব এনপ রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
মিথ্যা ইতিহাসের ওপর জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছে: গণ অধিকার পরিষদ
মিথ্যা ইতিহাসের ওপর জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার পর জুলাই ঘোষণাপত্র ও নির্বাচনের পথনকশার (রোডম্যাপ) প্রতিক্রিয়া জানাতে দলটির আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তা জানানো হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে রাশেদ খান বলেন, ‘২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হয় ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে। ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে বাতিল হওয়া কোটার অংশবিশেষ (৩০ শতাংশ) হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে ফিরে না এলে নতুনভাবে আন্দোলনের সূচনা হতো না। এখানে দুর্নীতি প্রতিরোধ বা অন্য কোনো দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়নি। অর্থাৎ গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট কোটা সংস্কার আন্দোলন। কিন্তু এই আন্দোলনের ইতিহাস বাদ দিয়ে মিথ্যা ইতিহাসের ওপর জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছে।’
রাশেদ খান বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে আমরা মনে করি, গণ অধিকার পরিষদ ও ছাত্র অধিকার পরিষদের ২০১৮ থেকে ২৪ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিক লড়াই-সংগ্রামের ইতিহাস বাদ দিতে পরিকল্পিতভাবে জুলাই ঘোষণাপত্রে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। ইতিহাস বিকৃতি বড় ধরনের অপরাধ। জুলাই ঘোষণাপত্রের এই ইতিহাস আগামী প্রজন্মকে মিথ্যা শেখাবে। ঠিক ৭১ নিয়ে যেভাবে আমাদের মিথ্যা শেখানো হয়েছে। তাহলে আওয়ামী লীগের তৈরি ইতিহাস ও অন্তর্বর্তী সরকারের তৈরি ইতিহাসের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?’
গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র থেকে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, ভ্যাটবিরোধী আন্দোলন, শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ড, নরেন্দ্র মোদির আগমনবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ড, পরিকল্পিত বিডিআর বিদ্রোহের নামে ৫৭ জন সেনা অফিসারের হত্যাকাণ্ড, আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড ইত্যাদি স্থান পায়নি। এসব ঘটনা এ প্রজন্মের মস্তিষ্ক ও মনস্তত্ত্বে বিপ্লবের বীজ বপন করে ও তারুণ্যকে বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত করেছে। কিন্তু কেন ও কোন উদ্দেশ্যে তারুণ্যের এই সংগ্রামকে জুলাই ঘোষণাপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হলো না?’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গতকালের ভাষণে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন উল্লেখ করে রাশেদ খান বলেন, ‘এতে ১/১১ সৃষ্টির ধোঁয়াশা কেটে গেছে। কিন্তু নির্বাচনের আগে ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির জন্য উদ্যোগ নিতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হকও বক্তব্য দেন। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির সিনিয়র সহসভাপতি ফারুক হাসান, উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, সরকার নূরে এরশাদ সিদ্দিকী প্রমুখ।
আরও পড়ুনঅংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা ও স্বীকৃতি ছাড়া জুলাই ঘোষণাপত্র প্রত্যাখ্যান করবে গণ অধিকার পরিষদ০৩ আগস্ট ২০২৫