বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান খুব শিগগির দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় পৌঁছানোর পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা আশা করছি, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই দেশে ফিরবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ব্রিটেনে থেকে যে নেতৃত্ব তিনি দিচ্ছেন, অর্থাৎ শুধু বিএনপির নয়, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার নেতৃত্ব দিতে অল্প কিছুদিনের মধ্যে তিনি দেশে চলে আসবেন। ইনশাআল্লাহ, সেদিন আর বেশি দূরে নয়, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানও এই মাঠে এসে নেতৃত্ব দেবেন।’ 

দীর্ঘ চার মাস চিকিৎসা শেষে লন্ডন থেকে দেশে ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে খালেদা জিয়াকে বহনকারী কাতারের আমিরের দেওয়া বিশেষ এয়ার এম্বুলেন্স ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। আনুষ্ঠানিকতা সেরে এগারোটার কিছু পর খালেদা জিয়ার গাড়িবহর বিমানবন্দর থেকে গুলশানের উদ্দেশে রওনা হয়। বিমানবন্দর থেকে গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবন ফিরোজা পর্যন্ত পথে পথে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান লাখো নেতাকর্মী। সড়কের দুই ধারে বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বসিত নেতাকর্মীদের ভিড় ঠেলে আড়াই ঘণ্টা পর গুলশানের বাসায় পৌঁছায় খালেদা জিয়ার গাড়ি বহর। সেখানে দুই পুত্রবধূর সহায়তা গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে বাসায় প্রবেশ করেন তিনি।

খালেদা জিয়া বাসায় পৌঁছানোর পর এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি নেতা ডা.

এ জেড এম জাহিদ হোসেন আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, লন্ডনে চিকিৎসার পর শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেকটা সুস্থ আছেন খালেদা জিয়া। তবে ১৪ ঘণ্টার বিমানযাত্রার কারণে উনি শারীরিকভাবে একটু অবসন্ন। তারপরও মানসিকভাবে উনার অবস্থা অত্যন্ত স্থিতিশীল। খালেদা জিয়ার এই সুস্থতা যাতে অব্যাহত থাকে সেজন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চান অধ্যাপক জাহিদ।

কাতার সরকারের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বিএনপি নেতা ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, কাতার সরকার শুধু এয়ার অ্যাম্বুলেন্সই দেয়নি, বরং বিমানের খরচ, ওষুধ এবং চিকিৎসাসেবার সবকিছু নিশ্চিত করেছে। এই সহায়তার জন্য খালেদা জিয়া কাতার সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, যিনি খালেদা জিয়াকে তাচ্ছিল্য করেছিলেন, তিনিই আজ পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। পক্ষান্তরে খালেদা জিয়া আজ জাতির নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত।

ডা. জোবাইদা রহমান কতদিন দেশে থাকবেন জানতে চাইলে ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘১৭ বছর পর তিনি এসেছেন। এটা কেবল শুরু না। তারা তাদের দেশে আসবেন এটাই স্বাভাবিক। তবে তার স্বামী-সন্তান এখনও বিদেশে। তিনি এখন দেশনেত্রীর সঙ্গে এসেছেন। সময় বলে দেবে তিনি কত দিন দেশে থাকবেন। তবে আবার লন্ডনে ফিরে স্বামী ও মেয়েকে নিয়ে দেশে প্রত্যাবর্তন করবেন ডা. জোবাইদা রহমান।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ত র ক রহম ন ত র ক রহম ন ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

কখন-কোন পথে ফিরছেন খালেদা জিয়া, নেতাকর্মীদের জন্য যে নির্দেশনা

চিকিৎসা শেষে চার মাস পর লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। স্থানীয় সময় সোমবার (৫ মে) লন্ডন থেকে রওনা হয়ে পরদিন মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় (বাংলাদেশ সময়) তার ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। বিমানবন্দর থেকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় উঠবেন বিএনপিনেত্রী। তাকে অভ্যর্থনা জানাতে দলের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে প্রস্তুতি।

গতকাল রোববার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানান দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। দলীয় প্রধানকে অভ্যর্থনা জানানোর ক্ষেত্রে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে কারা কোথায় অবস্থান নেবেন, তারা কী করতে পারবেন, কী পারবেন না, সে বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, শৃঙ্খলার সঙ্গে রাস্তার এক পাশে দাঁড়িয়ে একহাতে জাতীয় পতাকা এবং আরেক হাতে দলীয় পতাকা নিয়ে চেয়ারপারসনকে অভ্যর্থনা জানাতে পারবেন নেতাকর্মীরা। তবে বিমানবন্দর ও চেয়ারপারসনের বাসভবনে কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না। এছাড়া চেয়ারপারসনের গাড়ির সঙ্গে মোটরসাইকেল এবং হাঁটা সম্পূর্ণরূপে নিষেধ।

এদিকে বিএনপির চেয়ারপার্সনের মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, কাতারের আমিরের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া। লন্ডন থেকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে আসছেন তার দুই পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শর্মিলা রহমান। এছাড়া সফরসঙ্গী থাকবেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ড. মোহাম্মদ এনামুল হক চৌধুরী, গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম ও লন্ডনে সফরে থাকা বিএনপি নেতা তাবিথ আউয়াল। হিথরো বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে বিদায় জানাবেন তার জ্যেষ্ঠ সন্তান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

অভ্যর্থনা জানানোর জন্য বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের অবস্থান

* মহানগর উত্তর বিএনপি, বিমানবন্দর থেকে লা মেরিডিয়ান হোটেল পর্যন্ত।

* ছাত্রদল, লা মেরিডিয়ান হোটেল থেকে খিলক্ষেত।

* যুবদল, খিলক্ষেত থেকে হোটেল রেডিসন।

* মহানগর দক্ষিণ বিএনপি, হোটেল রেডিসন থেকে আর্মি স্টেডিয়াম।

* স্বেচ্ছাসেবক দল, আর্মি স্টেডিয়াম থেকে বনানী কবরস্থান।

* কৃষক দল, বনানী কবরস্থান থেকে কাকলী মোড়।

* শ্রমিক দল, কাকলী মোড় থেকে বনানী শেরাটন হোটেল।

* ওলামা দল, তাঁতী দল, জাসাস, মৎস্যজীবী দল, বনানী শেরাটন হোটেল থেকে বনানী কাঁচাবাজার।

* মুক্তিযোদ্ধা দল ও সব পেশাজীবী সংগঠন, বনানী কাঁচাবাজার থেকে গুলশান-২।

* মহিলা দল, গুলশান-২ গোলচত্বর থেকে গুলশান অ্যাভিনিউ রোড।

* বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির নেতারা, গুলশান-২ গোলচত্বর থেকে গুলশান অ্যাভিনিউ রোড পর্যন্ত।

* বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতাকর্মী, যার যার সুবিধামতো স্থানে অবস্থান করবেন।

এর আগে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার দিন তাকে অভ্যর্থনা দেওয়া হবে বলে জানান। সাধারণের চলাচলের জন্য ওইদিন বিমানবন্দর থেকে কাকলী পর্যন্ত মূল সড়ক এড়িয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের অনুরোধ জানান বিএনপি মহাসচিব।

প্রসঙ্গত, গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে লন্ডন ক্লিনিকে টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। পরে ২৫ জানুয়ারির থেকে তিনি (খালেদা জিয়া) তার ছেলে তারেক রহমানের বাসায় লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খালেদা জিয়া অনেকটা সুস্থ, মানসিকভাবেও ‘স্ট্যাবল’: ডা. জাহিদ হোসেন
  • হেঁটে বাসায় ঢুকলেন খালেদা জিয়া
  • খালেদা জিয়ার বাসভবনের সামনে জড়ো হয়েছেন হাজারো নেতাকর্মী
  • খালেদা জিয়ার বাসভবনের সামনে নেতাকর্মীদের ঢল
  • স্লোগানে মুখর বিমানবন্দর থেকে ‘ফিরোজা’
  • দেশে ফিরলেন খালেদা জিয়া, সঙ্গে ২ পুত্রবধূ
  • খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দর এলাকায় নেতা–কর্মীর ঢল
  • খালেদা জিয়ার জন্য প্রস্তুত ‘ফিরোজা’, বেড়েছে নিরাপত্তা, আসছেন নেতা–কর্মীরা
  • কখন-কোন পথে ফিরছেন খালেদা জিয়া, নেতাকর্মীদের জন্য যে নির্দেশনা