পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ৭০ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। প্রতিবেদনে তাদেরকে সন্ত্রাসী বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

বুধবার সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে ভারতের এই সংবাদমাধ্যমটি। তবে সুনির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা সূত্রগুলোর স্পষ্ট করেনি গণমাধ্যমটি।

এনডিটিভি বলছে, সরকারি সূত্র জানিয়েছে- পেহেলগামে হামলার প্রতিশোধ নিতে ভারত পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি স্থানে হামলা চালায়। হামলায় ব্যবহার করা হয় ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র। এর মাধ্যমে ৭০ জনকে হত্যা করা হয়েছে।

অপারেশন সিঁদুর নামে এই হামলায় মুজাফফরাবাদ, কোটলি, বাহাওয়ালপুর, রাওয়ালকোট, চকস্বরী, ভিম্বার, নীলম ভ্যালি, ঝিলাম এবং চকওয়াল এই নয়টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা হয়। এতে আরও অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়, এই স্থানগুলোকে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে ভারতের সরকারি সূত্র। লস্কর-ই-তৈয়বা এবং জইশ-ই-মোহাম্মদের সাথে সম্পর্কিত শিবিরগুলোতে লক্ষ্য করে নিখুঁত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়।

তবে পাকিস্তানের দাবি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে ভারত। হামলায় লক্ষ্যবস্তু করা হয় দুটি মসজিদকেও। পাকিস্তান ভূখণ্ডে ভারতের এসব ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তান। নিহতদের মধ্যে তিন বছরের এক শিশু এবং একাধিক নারী রয়েছেন বলেও জানায় ইসলামাবাদ।

এই হামলার জবাবে পাল্টা আক্রমণ চালিয়েছে পাকিস্তানও। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফের দাবি ভারতের মিসাইল হামলার জবাবে পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে তাদের সেনাবাহিনী। এ ছাড়া ভারতের ভূখণ্ডে পাক বাহিনীর হামলায় তিনজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন হত

এছাড়াও পড়ুন:

শুভ মহালয়া আজ, এবার দুর্গাপূজার মণ্ডপ বাড়ছে

বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গাপূজার পুণ্যলগ্ন শুভ মহালয়া আজ রোববার। এর মধ্য দিয়ে দেবীপক্ষ শুরু হলো।

শ্রীশ্রী চণ্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার আবাহনই মহালয়া হিসেবে পরিচিত। এই ‘চণ্ডী’তেই রয়েছে দেবী দুর্গার সৃষ্টির বর্ণনা এবং দেবীর প্রশস্তি।

দেশের অন্যান্য পূজামণ্ডপের মতো ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে মহালয়ার অনুষ্ঠান হবে আজ। মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি জানিয়েছে, দেবীপক্ষের সূচনালগ্নে আজ সকাল ছয়টা থেকে সাতটা পর্যন্ত ঢাকেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া অনুষ্ঠিত হবে। এরপর সকাল সাড়ে সাতটায় হবে পূর্বপুরুষের আত্মার শান্তি কামনায় তিল-তর্পণ অনুষ্ঠান। আর সকাল সাড়ে আটটায় মহালয়ার ঘট স্থাপন ও বিশেষ পূজা হবে।

এবার দেবী দুর্গার আসার বাহন হবে গজে (হাতি), যা শুভ লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত হয়। আর বিদায় হবে দোলায় (পালকি), যা অশুভ লক্ষণ হিসেবে পরিচিত।

ঢাকেশ্বরী দুর্গাপূজা মণ্ডপের পুরোহিত বরুণ চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, মহালয়ার মাধ্যমে দুর্গোৎসবের ক্ষণগণনা শুরু হয়। মহালয়ায় দেবী দুর্গার ঘট বসানো হয়। ঘট বসানোর মাধ্যমে দেবী দুর্গা বেলতলায় অবস্থান নেন। অর্থাৎ কৈলাস (স্বর্গলোক) থেকে মর্ত্যে (বেলতলায়) আসবেন দেবী দুর্গা।

এবার দেবী দুর্গার আসার বাহন হবে গজে (হাতি), যা শুভ লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত হয়। আর বিদায় হবে দোলায় (পালকি), যা অশুভ লক্ষণ হিসেবে পরিচিত।

২৮ সেপ্টেম্বর দুর্গাষষ্ঠী

মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি জানায়, মহালয়ার ছয় দিন পর ২৮ সেপ্টেম্বর (আগামী রোববার) শ্রীশ্রী দুর্গাষষ্ঠী। এর মাধ্যমেই মূলত আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্গাপূজা শুরু হবে। সেদিন দেবী দুর্গার ষষ্ঠাদি কল্পনারম্ভ ও ষষ্ঠীবিহিত পূজা হবে। সেই সঙ্গে হবে দেবী দুর্গার আমন্ত্রণ ও অধিবাস। দুর্গোৎসবে ২৯ সেপ্টেম্বর হবে মহাসপ্তমী, ৩০ সেপ্টেম্বর মহাঅষ্টমী, ১ অক্টোবর মহানবমী এবং ২ অক্টোবর বিজয়া দশমী।

দুর্গাপূজা মণ্ডপের সংখ্যা বাড়ছে

বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির তথ্য অনুযায়ী, গত বছর সারা দেশে ৩১ হাজার ৪৬১টি মণ্ডপ ও মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। আর ঢাকা মহানগর এলাকায় গত বছর ২৫২টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজা হয়েছিল।

বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে জানান, এ বছর সারা দেশে ৩৩ হাজার ৩৫৫টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজা আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীর ২৫৮টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজা আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

দুর্গাপূজায় সরকারের অনুদান ৫ কোটি টাকা

অন্তর্বর্তী সরকার দুর্গাপূজার জন্য এবার সব মিলিয়ে ৫ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে। এই তথ্য গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে জানিয়েছেন হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, প্রতি মণ্ডপে ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। তবে সব মণ্ডপে হয়তো বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হবে না। এ ছাড়া যেসব মন্দিরের নামে ব্যাংক হিসাব নেই, সেখানে বরাদ্দ দেওয়া যাচ্ছে না।

প্রতিমায় রঙের কাজ চলছে

ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির প্রাঙ্গণে দুর্গাপূজার জন্য প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে। গতকাল বিকেলে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, পর্দা দিয়ে ঢেকে প্রতিমা তৈরির কাজ করা হচ্ছে। ঢাকেশ্বরী দুর্গাপূজা মণ্ডপের পুরোহিত বরুণ চক্রবর্তী বলেন, দুর্গাপ্রতিমায় মাটির কাজ করা হয়ে গেছে। রং ও সাজসজ্জার কাজ বাকি আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ