ভারত থেকে আসার পথে কুড়িগ্রাম সীমান্তে ৩৬ ‘রোহিঙ্গা’সহ ৪৪ জন আটক
Published: 7th, May 2025 GMT
কুড়িগ্রামের রৌমারী ও ভূরুঙ্গামারী সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় ৪৪ জনকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। আজ বুধবার ভোরে রৌমারী উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ৩০ জন এবং ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ভাওয়ালকুরি সীমান্ত থেকে ১৪ জনকে আটক করা হয়।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আটক ব্যক্তিরা সীমান্ত এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টি টের পেয়ে বিজিবিকে খবর দেন। পরে বিজিবি গিয়ে তাঁদের আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ৮ বাংলাদেশি ও ৩৬ রোহিঙ্গা বলে জানা গেছে। পুলিশ জানিয়েছে, এ বিষয়ে যাচাই–বাছাই চলছে।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলার ভাওয়ালকুরি সীমান্ত এলাকা থেকে আটক ব্যক্তিরা তিনটি পরিবারের সদস্য এবং তাঁরা প্রায় তিন কিলোমিটার ভেতরে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে অবস্থান করছিলেন। তাঁদের মধ্যে আটজন নারী ও ছয়জন পুরুষ রয়েছেন।
রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লুৎফর রহমান জানান, আজ ভোরে সীমান্ত পেরিয়ে আসা ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৮ জন সিলেট ও যশোর জেলার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। অন্য ২২ জন রোহিঙ্গা বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাঁদের পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম ২২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক মতিউর রহমান বলেন, ‘ভাওয়ালকুরি সীমান্ত থেকে আটক ১৪ জনের মধ্যে ৮ জন নারী ও ৬ জন পুরুষ রয়েছেন। তাঁদের ভারত থেকে ঠেলে পাঠানো হয়েছে কি না, তা জানার চেষ্টা চলছে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শুভ মহালয়া আজ, এবার দুর্গাপূজার মণ্ডপ বাড়ছে
বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গাপূজার পুণ্যলগ্ন শুভ মহালয়া আজ রোববার। এর মধ্য দিয়ে দেবীপক্ষ শুরু হলো।
শ্রীশ্রী চণ্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার আবাহনই মহালয়া হিসেবে পরিচিত। এই ‘চণ্ডী’তেই রয়েছে দেবী দুর্গার সৃষ্টির বর্ণনা এবং দেবীর প্রশস্তি।
দেশের অন্যান্য পূজামণ্ডপের মতো ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে মহালয়ার অনুষ্ঠান হবে আজ। মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি জানিয়েছে, দেবীপক্ষের সূচনালগ্নে আজ সকাল ছয়টা থেকে সাতটা পর্যন্ত ঢাকেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া অনুষ্ঠিত হবে। এরপর সকাল সাড়ে সাতটায় হবে পূর্বপুরুষের আত্মার শান্তি কামনায় তিল-তর্পণ অনুষ্ঠান। আর সকাল সাড়ে আটটায় মহালয়ার ঘট স্থাপন ও বিশেষ পূজা হবে।
এবার দেবী দুর্গার আসার বাহন হবে গজে (হাতি), যা শুভ লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত হয়। আর বিদায় হবে দোলায় (পালকি), যা অশুভ লক্ষণ হিসেবে পরিচিত।ঢাকেশ্বরী দুর্গাপূজা মণ্ডপের পুরোহিত বরুণ চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, মহালয়ার মাধ্যমে দুর্গোৎসবের ক্ষণগণনা শুরু হয়। মহালয়ায় দেবী দুর্গার ঘট বসানো হয়। ঘট বসানোর মাধ্যমে দেবী দুর্গা বেলতলায় অবস্থান নেন। অর্থাৎ কৈলাস (স্বর্গলোক) থেকে মর্ত্যে (বেলতলায়) আসবেন দেবী দুর্গা।
এবার দেবী দুর্গার আসার বাহন হবে গজে (হাতি), যা শুভ লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত হয়। আর বিদায় হবে দোলায় (পালকি), যা অশুভ লক্ষণ হিসেবে পরিচিত।
২৮ সেপ্টেম্বর দুর্গাষষ্ঠীমহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি জানায়, মহালয়ার ছয় দিন পর ২৮ সেপ্টেম্বর (আগামী রোববার) শ্রীশ্রী দুর্গাষষ্ঠী। এর মাধ্যমেই মূলত আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্গাপূজা শুরু হবে। সেদিন দেবী দুর্গার ষষ্ঠাদি কল্পনারম্ভ ও ষষ্ঠীবিহিত পূজা হবে। সেই সঙ্গে হবে দেবী দুর্গার আমন্ত্রণ ও অধিবাস। দুর্গোৎসবে ২৯ সেপ্টেম্বর হবে মহাসপ্তমী, ৩০ সেপ্টেম্বর মহাঅষ্টমী, ১ অক্টোবর মহানবমী এবং ২ অক্টোবর বিজয়া দশমী।
দুর্গাপূজা মণ্ডপের সংখ্যা বাড়ছেবাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির তথ্য অনুযায়ী, গত বছর সারা দেশে ৩১ হাজার ৪৬১টি মণ্ডপ ও মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। আর ঢাকা মহানগর এলাকায় গত বছর ২৫২টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজা হয়েছিল।
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে জানান, এ বছর সারা দেশে ৩৩ হাজার ৩৫৫টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজা আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীর ২৫৮টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজা আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
দুর্গাপূজায় সরকারের অনুদান ৫ কোটি টাকাঅন্তর্বর্তী সরকার দুর্গাপূজার জন্য এবার সব মিলিয়ে ৫ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে। এই তথ্য গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে জানিয়েছেন হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, প্রতি মণ্ডপে ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। তবে সব মণ্ডপে হয়তো বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হবে না। এ ছাড়া যেসব মন্দিরের নামে ব্যাংক হিসাব নেই, সেখানে বরাদ্দ দেওয়া যাচ্ছে না।
প্রতিমায় রঙের কাজ চলছেঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির প্রাঙ্গণে দুর্গাপূজার জন্য প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে। গতকাল বিকেলে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, পর্দা দিয়ে ঢেকে প্রতিমা তৈরির কাজ করা হচ্ছে। ঢাকেশ্বরী দুর্গাপূজা মণ্ডপের পুরোহিত বরুণ চক্রবর্তী বলেন, দুর্গাপ্রতিমায় মাটির কাজ করা হয়ে গেছে। রং ও সাজসজ্জার কাজ বাকি আছে।