আওয়ামী লীগ বা তার কোনো কোনো অঙ্গসংগঠনকে নিষিদ্ধ করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ বা তার কোনো কোনো অঙ্গসংগঠনকে নিষিদ্ধ করার সম্ভাবনা রয়েছে। নিষিদ্ধ করার মতো প্রয়োজনীয় আইনও দেশে রয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করা মো.

আবদুল হামিদ গতকাল বুধবার রাতে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে থাইল্যান্ডের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়েন। এ খবর প্রকাশের পর আজ দুপুর থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট দিতে শুরু করেন নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা।

আবদুল হামিদের দেশত্যাগের ঘটনায় সরকারের কড়া সমালোচনা করেন এনসিপি নেতারা। আরও একাধিক দল ও সংগঠন এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে কর্মসূচি পালন করেছে। এমন পরিস্থিতিতে সন্ধ্যায় এক ফেসবুক পোস্টে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের প্রভিশন যুক্ত করা হবে (আইনে)। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের বিচার হবেই। বিচারের কাজ ত্বরান্বিত করতে ট্রাইব্যুনাল-২ গঠিত হচ্ছে। পরে সন্ধ্যায় এই ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি সমাজে প্রবলভাবে রয়েছে। গণ–অভ্যুত্থানকালে গণহত্যার পরও তাদের মধ্যে অপরাধবোধের অনুপস্থিতি, ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন হীন কর্মকাণ্ড ও পলাতক শেখ হাসিনার চরম উসকানিমূলক বক্তব্য দেখার পর এই দাবি সমাজে আরও সোচ্চারভাবে উচ্চারিত হচ্ছে। তাই আওয়ামী লীগ বা এর কোনো কোনো অঙ্গসংগঠনকে নিষিদ্ধ করার সম্ভাবনা রয়েছে।’

দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের কথা উল্লেখ করে আসিফ নজরুল আরও বলেন, অনেকগুলো মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে। অচিরেই কিছু মামলার বিচার কার্য শুরু হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ষ দ ধ কর র সরক র র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

স্বজন ভেবে লাশ নিয়ে এলেন, গোসল করালেন, এরপর যা ঘটল

সিলেটের জকিগঞ্জে ভুল করে এক ব্যক্তিকে নিজেদের স্বজন মনে করে দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল পরিবার। তবে দাফনের আগে খবর আসে—যাকে মৃত মনে করা হচ্ছিল, তিনি জীবিত। পরে জানা যায়, ভুলে অন্য একজনের মরদেহকে নিজেদের স্বজন হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল। পুলিশি অনুমতি নিয়ে পরে ওই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির দাফন সম্পন্ন হয়। গতকাল রোববার জকিগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি। পরে তাঁর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্রাহ্মণগ্রামের বাসিন্দা বাবুল আহমদ মরদেহ দেখে সেটিকে তাঁর ভাই সাবু আহমদ (৫৫) বলে শনাক্ত করেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশটি তাঁর কাছে হস্তান্তর করা হয়।

শনিবার রাতে বাবুল আহমদ ও তাঁদের মামাতো ভাই উজির উদ্দিন মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসেন। গতকাল সকালে দাফনের প্রস্তুতির সময় গোসলের ঠিক পরপরই গঙ্গাজল এলাকা থেকে এক ব্যক্তি ফোন দিয়ে জানান, সাবু আহমদ জীবিত এবং তিনি গঙ্গাজল বাজারে অবস্থান করছেন। বিষয়টি জানার পর উজির উদ্দিন গঙ্গাজল বাজারে গিয়ে সত্যি তাঁর ভাই সাবুকে জীবিত দেখতে পান।

উজির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, শুধু তাঁদের পরিবার নয়, যাঁরা লাশটি দেখেছেন, সবাই বলেছিলেন, এটা সাবু আহমদ। কিন্তু মূলত তাঁদের ভাই বেঁচে ছিলেন। তিনি ভবঘুরে অবস্থায় ঘোরাফেরা করতে করতে গঙ্গাজল এলাকায় গিয়েছিলেন। এরপর তাঁকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। পরে নিহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে ফিরিয়ে দিতে গেলে সেটি আর নিতে চাননি। এরপর দুপুরে স্থানীয় এতিছানগর কবরস্থানে তাঁরাই নিহত ব্যক্তির লাশ দাফনের ব্যবস্থা করেছেন। তিনি বলেন, তাঁদের ভাই সাবু আহমদ গতকাল রাতেও বাড়িতে ছিলেন। আজ সোমবার সকালে আবার বাড়ি থেকে বের হয়েছেন।

সুলতানপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শামীম আহমদ বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ওই ব্যক্তির লাশকে ভুল করে সাবু আহমদ ভেবে বাড়িতে আনা হয়েছিল। পরে দেখা যায়, সাবু আহমদ বেঁচে আছেন। বিষয়টি এলাকায় বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির দাফনের ব্যবস্থাও তাঁরাই করেছেন।

জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির মরদেহ ছিল, এমন তথ্য পুলিশকে জানানো হয়েছিল। তবে পুলিশ নিহত ব্যক্তির মরদেহ নিতে গেলে জানানো হয়, পরিচয় শনাক্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন শোনা যাচ্ছে, যাঁরা লাশটি শনাক্ত করেছিলেন, তাঁদের সেই স্বজন বেঁচে আছেন। এরপর অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির মরদেহ তাঁরাই দাফনের ব্যবস্থা করেছেন। তবে এ নিয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ