চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ড ময়দানে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশ। মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা থেকে অন্তত ৫ লাখ তরুণের সমাগম ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করেছে দলটি। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে পৌঁছেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার (১০ মে) দুপুর ২টায় শুরু হওয়া এই সমাবেশ আয়োজন করেছে বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল এবং অঙ্গ সংগঠন যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল। তীব্র গমর উপেক্ষা করে নেতাকর্মীরা পলোগ্রাউন্ড ময়দানের সমাবেশে যোগ দিতে শুরু করেছেন। 

তারুণ্যের সমাবেশে যোগ দিতে আসা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা.

শাহাদাত হোসেন।

আরো পড়ুন:

এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার পথে খালেদা জিয়া

বিমান বাংলাদেশে নয়, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ফিরবেন খালেদা জিয়া

যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনে শরিক রাজনৈতিক দলগুলো ঘোষিত ৩১ দফা রূপরেখা বাস্তবায়নে তরুণ সমাজকে নীতি প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে এ কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। কর্মসূচির প্রতিটি আয়োজনেই গুরুত্ব পাবে বিষয়ভিত্তিক পলিসি ডায়লগ, যার মাঝে রয়েছে কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, পরিবেশ, প্রযুক্তি ও রাজনৈতিক অধিকারসহ নানা বিষয়ে তরুণদের ভাবনা। বিএনপি তারুণ্যনির্ভর দল হিসেবে সবসময় তরুণদের মূল্যায়ন করেছে। এই আয়োজন তারই বহিঃপ্রকাশ।

চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ বলেন, ‍“কয়েক সপ্তাহ ধরে যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল শহরের প্রত্যেক ওয়ার্ডে প্রচারণা চালিয়েছে। তরুণ-যুবকদের কাছ থেকে আমরা ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। পলোগ্রাউন্ড ময়দান থেকে লাখো তরুণ বিএনপির প্রতি তাদের সমর্থন জানাবেন।”

ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম র জ ফখর ল ইসল ম আলমগ র ব এনপ ব এনপ র য বদল

এছাড়াও পড়ুন:

খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ যত অভিযোগ লক্ষ্মীপুরে গ্রেপ্তার আলমগীরের বিরুদ্ধে

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ থানা–পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছেন জেলার তালিকাভুক্ত ‘সন্ত্রাসী’ আলমগীর হোসেন (৪০)। আজ সোমবার ভোরে চন্দ্রগঞ্জ থানার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের ইমাম উদ্দিন মিজি বাড়ির কাছ থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আলমগীর হোসেন উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের উত্তর মাগুরী এলাকার আবুল কালামের ছেলে। সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের আলোচিত সন্ত্রাসী আবুল কাশেম জিহাদীর সেকেন্ড ইন কমান্ড আলমগীর হোসেন।

চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফয়জুল আজীম নোমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে আলমগীরকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর বিরুদ্ধে চন্দ্রগঞ্জ থানায় চারটি অস্ত্র মামলা, একটি হত্যা ও দুটি মাদক মামলা এবং চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কার্যক্রম, অপহরণসহ মোট ১৬টি মামলা রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে আসছিলেন। তিনি লক্ষ্মীপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মধ্যে একজন।

আলমগীরের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

২০২৩ সালের ২৫ এপ্রিল রাতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের পোদ্দারবাজার এলাকায় জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিব ইমামকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

পুলিশ জানায়, নোমান ও রাকিব খুনের মামলায় অন্যতম আসামি আলমগীর হোসেন। ওই মামলায় তিনি ২০২৩ সালের ৯ মে গ্রেপ্তার হন। পরে উচ্চ আদালত থেকে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে জামিন নিয়ে বেরিয়ে আসেন। এরপর আর আদালতে হাজিরা দেননি।

আলমগীর ২০১৩ সালের দিকে সন্ত্রাসী মাসুম বিল্লাহ লাদেন বাহিনীর সদস্য ছিলেন বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে। তাঁর মৃত্যুর পর তিনি ২০১৫ সালের দিকে আবুল কাশেম জিহাদীর বাহিনীতে যোগ দেন। কাশেম জিহাদী চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন। নোমান ও রাকিব হত্যার ২৩ দিন পর জিহাদীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

আলমগীরের বিরুদ্ধে আজাদ হোসেন ওরফে বাবলু (২৫) নামের একজনকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। গত ২ জুন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় আজাদকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। মাদক বিক্রি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এলাকার একাধিক সূত্র জানায়, আলমগীর হোসেন দীর্ঘদিন ধরে সদর উপজেলার বশিকপুর, চাটখিল ও আশপাশের এলাকায় অপহরণ, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন। তাঁর বিরুদ্ধে স্থানীয় লোকজন ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে বহুবার প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করলেও তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবি

চাটখিল উপজেলার রামনারায়ণপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মোরশেদ আলম ভূঁইয়া আলমগীরের লোকজনের হাতে অপহরণের শিকার হন। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, গত ৩১ জুলাই তিনি ও তাঁর সহযোগী তারেক রহমানকে আলমগীর হোসেনের লোকজন অপহরণ করেন। রাত ১০টার দিকে শামসুল হুদা উচ্চবিদ্যালয়ের কাছ থেকে তাঁদের তুলে নিয়ে যান অপহরণকারীরা। এরপর অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে তাঁদের হাতে অস্ত্র ধরিয়ে ভিডিও ধারণ করা হয়, যা পরবর্তী সময় ভয় দেখিয়ে মুক্তিপণ আদায়ে ব্যবহার করা হয়।

মোরশেদ আলম আরও জানান, পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ নেওয়ার পর পরদিন বিকেলে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। অপহরণের সময় তাঁদের মারধর ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি।

আলমগীর হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর এলাকার মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেও তাঁরা তাঁর দ্রুত বিচার দাবি করেছেন। নয়তো জামিনে বেরিয়ে এসে তিনি আবারও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করবেন, এই আশঙ্কা তাঁদের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ যত অভিযোগ লক্ষ্মীপুরে গ্রেপ্তার আলমগীরের বিরুদ্ধে
  • তেজগাঁও স্টেশন রোডের বাড়িতে ‘নায়ক আলমগীর’কে আবিষ্কারের গল্প