তিন বছরের চুক্তিতে রিয়ালের কোচ আলোনসো
Published: 12th, May 2025 GMT
রিয়াল মাদ্রিদের পরবর্তী কোচ হচ্ছেন জাবি আলোনসো। তার সঙ্গে ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত চুক্তি করছে লস ব্লাঙ্কোসরা। ফুটবল দলবদল বিশেষজ্ঞ সাংবাদিক ফ্যাবরিজিও রোমানো দাবি করেছেন, দুই পক্ষের মধ্যে চুক্তি হয়ে গেছে।
তবে রিয়াল মাদ্রিদের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। ওই ঘোষণা আসতে সময় লাগতে পারে আরও এক থেকে দুই সপ্তাহ। তবে বায়ার লেভারকুসেনের পোস্ট ও জাবি আলোনসোর বার্তা থেকে পরিষ্কার চুক্তি নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।
গতকাল ঘরের মাঠে মৌসুমের শেষ ম্যাচ খেলেছে লেভারকুসেন। বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে ৪-২ গোলে ম্যাচটি হেরেছে তারা। ম্যাচ শেষে জাবির ছবি দিয়ে লেভারকুসেন তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। সঙ্গে নতুন অধ্যায়ের জন্য শুভকামনা জানিয়েছে।
পরবর্তী গন্তব্য কোথায় এমন প্রশ্নে আলোনসো বলেন, ‘আমার পরবর্তী ক্লাব? আমি সেখানে খুশী থাকতে চাই। সুতরাং এখন কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।’
ফ্যাবরিজিও জানিয়েছেন, আলোনসো জুনের ক্লাব বিশ্বকাপ থেকেই রিয়াল মাদ্রিদের ডাগ আউটে দাঁড়াতে সম্মত হয়েছেন। চলতি লা লিগা মৌসুম শেষে তাকে কোচ হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবে রিয়াল। আগামী সপ্তাহে কার্লো আনচেলত্তিকেও বিশেষ সম্মাননার দেবে ব্লাঙ্কোস বোর্ড।
জাবি আলোনসো রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক মিডফিল্ডার। তিনি ২০০৯-১৪ পর্যন্ত লস ব্লাঙ্কোসদের জার্সিতে খেলেছেন। এছাড়া লিভারপুল ও বায়ার্ন মিউনিখে খেলেছেন। কিংবদন্তি কোচ হোসে মরিনহো, পেপ গার্দিওলা, রাফায়েল বেনিতেজের অধীনে খেলেছেন তিনি। তার বাবা স্পেন জাতীয় দলের খেলোয়াড় ছিলেন। খেলেছেন বার্সা ও রিয়াল সোসিয়েদাদে। সোসিয়েদাদের কোচও ছিলেন। স্পেনের বিশ্বকাপ জয়ী দলের এই সদস্য ২০১৭ সালে অবসরের পর ২০১৯ সালে রিয়াল সোসিয়েদাদ ‘বি’ দলে কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করেন।
২০২২ সালে বায়ার লেভারকুসেনের কোচ হয়ে ১১৯ বছরের ইতিহাসে ক্লাবকে প্রথম শিরোপা জেতান। এরপরই তাকে কোচ করতে লিভারপুল, বায়ার্ন মিউনিখ ও রিয়াল মাদ্রিদ নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করে। অবশেষে প্রাণের ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ দিয়ে নিজেকে প্রমাণের নতুন চ্যালেঞ্জ নিলেন তিনি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা
মানবেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) লারমাই দেশে প্রথম আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি প্রথম দেশে কাঠামোগতভাবে আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে স্পষ্ট করেন। একটি বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন তিনি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এন লারমার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
‘বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬ম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটি’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।
আলোচনা সভায় লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, ১৯৫৫-৬৫ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া ‘বাইনারি বিভাজন’ পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশে সরকার। ‘বাইনারি’ মনস্তত্ত্বকে এখনো এই দেশে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এম এন লারমা ‘বাঙালি হেজিমনি’র বিরুদ্ধে আত্মপরিচয়ের বয়ান বাঁচিয়ে রাখতে তৎকালে জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন।
জেএসএসের কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, কাপ্তাই বাঁধ না করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়েই ছাত্র এম এন লারমার প্রতিবাদী জীবন শুরু হয়। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পর যে বৈষম্যহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে, এম এন লারমা ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নকালেই এসব বিষয় নিয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন।
দীপায়ন খীসা বলেন, ‘সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন বা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কখনো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে সংলাপ করেনি। আমরাও এই দেশের অংশ। তাহলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের কেন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানো হলো না?’ তিনি বলেন, চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদেরও অংশীদারত্ব আছে। কিন্তু অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে তাদেরই ভুলে গেল এই সরকার।
সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন বলেন, ‘বাঙালি হয়ে যাও’ কথাটার পেছনে বাঙালি মুসলিমদের জাত্যভিমানের ব্যাপারটি রয়েছে। এম এন লারমা বাংলাদেশের মধ্যে থেকে নিজেদের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীকালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তিময় চাকমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ সম্পাদক মেইনথিন প্রমীলা, সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অং শোয়ে সিং মারমা।
অনুষ্ঠানটি শুরু হয় এম এন লারমাকে সম্মান জানিয়ে কবিতা পাঠের মাধ্যমে। কবিতা পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেই চাকমা ও লাল নিকিম বম। কবিতা আবৃত্তির পর এম এন লারমার জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়া চাকমা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক হিরণ মিত্র চাকমা, জেএসএসের কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য অনন্ত বিকাশ ধামাই, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা, পিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জগদীশ চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা।