যে শিশুদের আত্মারা তাড়িয়ে বেড়াবে ইসরায়েলকে
Published: 24th, May 2025 GMT
একজন আবু সাঈদের আত্মা তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে বাংলাদেশের অন্যতম শক্তিশালী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে। তাঁর সঙ্গে অন্য আত্মারা মিলে তাদের বিতাড়িত করেছে দেড় দশকের মসনদ থেকে।
২০১০ সালের ১৭ ডিসেম্বর তিউনিসিয়ায় আগুনে আত্মাহুতি দেওয়া ক্ষুদ্র বিক্রেতা তরুণ মোহাম্মদ বুয়াজিজির আত্মা কাঁপিয়ে দিয়েছে গোটা আরবকে। সূচনা করে আরব বসন্তের। সরকারের পতন হয় তিউনিসিয়া, মিসর, লিবিয়া ও ইয়েমেনে। আন্দোলনের বড় ধাক্কা লাগে বাহরাইনে; আলজেরিয়া, জর্ডান, মরক্কো, কুয়েত ও ওমানও বাদ যায়নি এই বসন্তের ছোঁয়া থেকে। সিরিয়া বয়ে বেড়িয়েছে দেড় দশকের গৃহযুদ্ধ। নিষ্পত্তি হয়, বাশার সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে।
এই ভূমিকার উদ্দেশ্য হলো, আত্মারা যে লোকচক্ষুর অন্তরালের বিষয় নয়, তারা যে অনেক বেশি শক্তিশালী, তা বোঝানো। অর্থাৎ নিপীড়নের মাধ্যমে কোনো আত্মাকে দেহ থেকে তাড়িয়ে দিলেও তা জায়গা করে নেয় জীবন্ত অনেক আত্মার মধ্যে। সুপ্ত থাকে ইতিহাসের পাতায়। আলোচনা হয় পাঠচক্রে, আদর্শবাদীদের সভায়। এভাবে লোকান্তরের আত্মারা আবার রসদ হয়ে জীবন্ত হয়ে ওঠে বিদ্রোহে-বিপ্লবে।
আসুন ফিলিস্তিনের গাজার শিশুদের আত্মাদের নিয়ে একটু কথা বলি। গাজার আকাশে যখন ইসরায়েলের বোমার শব্দ প্রতিধ্বনিত হয়, তখন সেখানকার শিশুদের কান্না সেই শব্দকে ছাপিয়ে যায়। শিশুর চোখে যখন ভয়, ক্ষুধা ও ব্যথার ছাপ স্পষ্ট হয়, তখন মানবতার মুখে কলঙ্ক লাগে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় এ পর্যন্ত ১৬ হাজারের বেশি শিশু নিহত হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ১০০টি শিশু নিহত বা আহত হচ্ছে। এই সংখ্যা শুধু পরিসংখ্যান নয়; প্রতিটি সংখ্যা একটি জীবন্ত স্বপ্নের অপমৃত্যু। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত কয়েক মাসে ২৯ শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি খাদ্যাভাবে মারা গেছে। অন্যদিকে ২৩ মে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তার আগের দুই দিনে গাজায় অনাহারে মারা গেছেন ২৯ শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি। এর থেকে অনুমান করা যায়, গাজায় খাদ্যাভাবে-অনাহারে মারা যাওয়া শিশুর সংখ্যা অনেক। ধারণা করতে পারেন, যে গ্রহে প্রতিদিন টনে টনে রান্না করা খাবার অপচয় হচ্ছে, সেই গ্রহে একটি শিশু ঘণ্টার পর ঘণ্টা খাদ্য-পানির অভাবে ছটফট করতে করতে মারা যাচ্ছে!
গাজার আকাশে যখন ইসরায়েলের বোমার শব্দ প্রতিধ্বনিত হয়, তখন সেখানকার শিশুদের কান্না সেই শব্দকে ছাপিয়ে যায়। শিশুর চোখে যখন ভয়, ক্ষুধা ও ব্যথার ছাপ স্পষ্ট হয়, তখন মানবতার মুখে কলঙ্ক লাগে।খাদ্য ও ওষুধের সংকটে গাজার শিশুরা মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে। নথিবদ্ধ হিসাবমতে, সেখানে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ৫৭টি শিশু অপুষ্টির কারণে মারা গেছে। জাতিসংঘের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী বছর নাগাদ সেখানে ৭১ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত হতে পারে। বিভিন্ন স্থিরচিত্র ও ভিডিওতে প্রকাশিত শিশুদের ছবি দেখে বোঝার উপায় নেই, তারা যে বেঁচে আছে। কঙ্কালসার বাচ্চাগুলোকে দেখলে মনে হয়, প্লাস্টিকের এলিয়েনের বাচ্চারূপী কোনো পুতুল বিছানায় পড়ে আছে!
গাজায় আহত শিশুদের মধ্যে অনেকেই চিরস্থায়ী প্রতিবন্ধিতার শিকার। ২০২৪ সালের এক হিসাবে দেখা গেছে, সেখানে প্রতিদিন গড়ে ১৫টি শিশু বিস্ফোরক অস্ত্রের কারণে গুরুতর আঘাত পেয়েছে। ফলে তাদের দীর্ঘমেয়াদি পুনর্বাসনের প্রয়োজন। এই শিশুদের অনেকেই হাত বা পা হারিয়েছে, কেউ কেউ দৃষ্টিশক্তি বা শ্রবণশক্তি হারিয়েছে।
চলতি বছরের শুরুর দিকের হিসাব, ইসরায়েলি নিষ্ঠুরতার ফলে গাজায় কমপক্ষে ৩৮ হাজার শিশু এতিম হয়েছে। তাদের কেউ মায়ের কোল হারিয়েছে, কেউ বাবার স্নেহ; কেউ আবার উভয়কেই। এই শিশুরা এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছে, যেখানে নেই নিরাপত্তা, নেই ভালোবাসা।
গাজায় ইসরায়েল যা করছে তা হলো, ‘মৃত্যুর রাজনীতি’ বা থানাটোপলিটিকস। এটি মিশেল ফুকোর বায়ো-পাওয়ার বা ‘জীবনশক্তির রাজনীতি’র বিকাশধর্মী রূপ। গাজার শিশুদের জীবন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্যে দখলদার আরেকটি ‘রাষ্ট্র’ দিয়ে উপেক্ষিত, প্রান্তিক ও লয়প্রাপ্ত। সেখানে চলছে নেক্রোপলিটিকস। অর্থাৎ সেখানে দখলদার রাষ্ট্র সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কে বাঁচবে আর কে মরবে। গাজার ক্ষেত্রে ক্যামেরুনীয় রাজনৈতিক তাত্ত্বিক জোসেফ-অ্যাচিল এমবেম্বের নেক্রোপলিটিকসের আলোচনা আরও বিশদভাবে প্রযোজ্য হচ্ছে। এমবেম্বে আফ্রিকান প্রেক্ষাপটে নেক্রোপলিটিকসের যে ধারণা দিয়েছিলেন, তা গাজায় আরও উগ্রভাবে দেখা যাচ্ছে। গাজার শিশুরা এমন এক জনগোষ্ঠী, যাদের অস্তিত্বই ইসরায়েলের দৃষ্টিতে হুমকি। অর্থাৎ তারা গাজার একেকটি শিশুর মধ্যে একেকজন ইয়াহিয়া সিনওয়ার বা মোহাম্মদ দেইফকে দেখতে পাচ্ছে।
ইসরায়েলি রাষ্ট্র ও পশ্চিমা মিডিয়া গাজার শিশুদের মৃত্যু ও যন্ত্রণাকে ‘নতুন স্বাভাবিকতা’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। এই দৃষ্টিভঙ্গি আসলে একধরনের মতাদর্শিক হেজিমনি, যেখানে নির্যাতিতের দিকটা চাপা পড়ে যায়। নির্যাতিত ব্যক্তি বা গোষ্ঠী একটি সংখ্যায় রূপ নেয় মাত্র। গাজার শিশুরা এই আধিপত্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গির বলি, তাদের মৃত্যু যেন ‘শোকহীন জীবন’ বা আনগ্রিয়েভেবল লাইভস’। এটি মার্কিন দার্শনিক জুডিথ পামেলা বাটলারের গ্রিয়েভেবিলিটি ধারণার সঙ্গে প্রাসঙ্গিক। বাটলার মনে করেন, সব মৃত্যু সমানভাবে শোকযোগ্য বা গ্রিয়েভেবল নয়। কারণ, আমাদের সমাজে কোন জীবনকে মূল্যবান ধরা হয় আর কোনটিকে ধরা হয় না, তার ওপর ভিত্তি করে শোক প্রকাশিত হয়।
ফরাসি আলজেরীয় দার্শনিক জ্যাক দেরিদার মতে, প্রতিটি বিপ্লবের পেছনে অতীতে অবিচারের শিকার মানুষের আত্মা থাকে, যারা ন্যায্যতার দাবি রেখে যায়। যারা বর্তমানকে প্রভাবিত করে ও ভবিষ্যতের ন্যায়বিচারের দাবি তোলে। জুডিথ বাটলার বলেন, আনগ্রিয়েভেবল লাইভস—যাদের জন্য আমরা শোক করি না, তারা মৃত্যুর পরও রাজনৈতিকভাবে জীবিত থাকে। কারণ, তাদের মৃত্যু রাষ্ট্র বা সমাজের ওপর অভিযোগপত্র হয়ে থাকে। জার্মান দার্শনিক ওয়াল্টার বেঞ্জামিন বলেন, ইতিহাসের প্রতিটি দমনকৃত মানুষ বিচারের দাবি রেখে যায় ভবিষ্যতের ওপর। অর্থাৎ গাজার হতাহত মানুষেরা ভবিষ্যতে যে ইসরায়েলের জন্য যম হয়ে আসবে, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। পশ্চিমা পুরো শক্তি নিয়েও দখলদার ইসরায়েল গত ১৯ মাসে সেখানে যুদ্ধনীতিতে জয়ী হতে পারেনি। ধুলায় মিশিয়ে দেওয়া কংক্রিটের ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে এখনো তাদের প্রতিরোধ করে যাচ্ছেন স্বাধিকার আন্দোলনের যোদ্ধারা।
গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ‘যদি পৃথিবীতে কোনো নরক থাকে, তবে তা গাজার শিশুদের জীবন। এই মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক আদালতে জবাবদিহি করতে হবে।’ আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরায়েলকে কতটা জবাবদিহি করতে হবে বা এই জবাবদিহিতে কী লাভ হবে, তা আমাদের জানা নেই। তবে গাজার হাজার হাজার শিশুর আত্মা যে আগামী দিনগুলোতে ইসরায়েলকে তাড়িয়ে বেড়াবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একটা কথা বলাই যায়, নিরস্ত্র মানুষের তাড়া বড় ভয়ংকর। এই তাড়া শোষকের ঘুম ও ঘাম দুটোই কেড়ে নেয়।
মো.
ছানাউল্লাহ প্রথম আলোর সহসম্পাদক
[email protected]
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র র জন ত অর থ ৎ
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশি সাংবাদিকদের উচিত ফিলিস্তিনি সহকর্মীদের পাশে থাকা
৫ মে ইসরায়েল স্থায়ীভাবে পুনরায় গাজা দখলের ইচ্ছা ঘোষণা করতে গিয়ে কেবল সামরিক আগ্রাসনের একটি নতুন ধাপের কথা জানায়নি, বরং সম্প্রসারণবাদী রাষ্ট্রটি তাদের নির্মূলকরণ ও পদ্ধতিগতভাবে নিশ্চিহ্নকরণের অভিযান তীব্রতর করার ইঙ্গিতও দিয়েছিল। এই পদক্ষেপ বিশ্বজুড়ে প্রতিটি সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকের জন্য একটি উদ্বেগজনক বার্তা হওয়া উচিত। এটি কেবল একটি আঞ্চলিক দখলদারিত্ব নয়, বরং সত্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে ফিলিস্তিনি সাংবাদিকরা প্রথম লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হন।
গাজায় নিহত গণমাধ্যমকর্মীর বিস্ময়কর সংখ্যা এ ব্যাপারে যথেষ্ট নজির রাখে। সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুটি বিশ্বযুদ্ধ, আফগানিস্তান এবং প্রাক্তন যুগোস্লাভিয়া ও ভিয়েতনাম যুদ্ধে সর্বমোট যে সংখ্যক সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, গাজায় তার চেয়ে বেশি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এটি পেশাদার সংবাদমাধ্যমকর্মীদের ক্ষেত্রে জানা তথ্য অনুসারে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাত। গাজার সরকারি সংবাদমাধ্যমগুলোর অফিসিয়াল রেকর্ড বলছে, যুদ্ধে ২২২ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।
ইনস্টিটিউট ফর মিডল ইস্ট আন্ডারস্ট্যান্ডিং (আইএমইইউ) এই শোচনীয় পরিস্থিতির সারসংক্ষেপ করে বলেছে, ‘ইসরায়েল আধুনিক ইতিহাসে সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় হত্যাকারী।’ এটি কেবল যুদ্ধের পরিণতি নয়। এটি মূলত রক্তপাত ও সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে জবরদস্তিমূলক সংবাদমাধ্যগুলো নিশ্চিহ্ন করার একটি কৌশল।
গত রোববার ছিল সাম্প্রতিক মাসগুলোর মধ্যে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী দিনগুলোর একটি। ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী দেইর এল-বালাহে দম্পতি সাংবাদিক খালেদ আবু সাইফ ও নুর কান্দিলকে তাদের ছোট মেয়েসহ হত্যা করেছে। উত্তর গাজায় আলোকচিত্রী আজিজ আল-হাজ্জার ও তাঁর স্ত্রী- সন্তানদের এবং দক্ষিণ গাজায় সাংবাদিক আব্দুল রহমান আল-আবাদালাহকেও একই সময়ে হত্যা করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিক হাসান সামুর ও আহমেদ আল-হালু ইসরায়েলি দুটি হামলায় নিহত হন। এই সপ্তাহে খান ইউনিসের সবেমাত্র অকার্যকর নাসার মেডিকেল কমপ্লেক্সে সাংবাদিক হাসান এসলাইহকে লক্ষ্য করে একটি ইসরায়েলি ড্রোন হামলা চালানো হয়। ৭ এপ্রিল আইওএফ একটি মিডিয়া তাঁবুতে বোমা হামলা চালালে এসলাইহ আহত হয়ে সেরে উঠলেও তাঁর সহকর্মী হিলমি আল-ফাকাওয়ি দগ্ধ হয়ে মারা যান।
এ গণহত্যাকালের একজন খ্যাতনামা আলোকচিত্রশিল্পী সাংবাদিক ফাতিমা হাসোনা, যার জীবন নিয়ে একটি তথ্যচিত্রও নির্মিত হয়েছে, ১৭ এপ্রিল ইসরায়েলি সেনারা তাঁর পরিবারের ১০ সদস্যের সঙ্গে নিজ বাড়িতে হত্যা করে। তার এক দিন আগে তিনি জানতে পারেন, প্রামাণ্যচিত্রটি কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হবে। ৭ মেতে ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হন, যাদের মধ্যে আছেন সাংবাদিক ইয়েহিয়া সুবেইহ ও নূর আল-দিন আবদু।
গাজায় সংবাদমাধ্যম নিশ্চিহ্নকরণের চেষ্টায় ইসরায়েল যে অসংখ্য হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, এগুলো তার মধ্যে কয়েকটি মাত্র। আরও অনেক সাংবাদিক আছেন, যারা বেঁচে গেছেন। কিন্তু সেই আঘাত তাদের নীরব করে দিয়েছে।
ইসরায়েল সাংবাদিকদের গাজা থেকে স্বাধীনভাবে রিপোর্ট করার অনুমতি দিচ্ছে না। এ ব্যাপারে বিদেশি সাংবাদিকরা আর চুপ করে থাকতে পারেন না। সাংবাদিকদের উচিত ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর সঙ্গে বিযুক্ত হওয়া এবং মিডিয়া যা দেখাতে চায় কেবল তার অংশ হতে সরাসরি অস্বীকার করা। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রবেশাধিকার ছাড়া গাজা যুদ্ধ বধ্যরঙ্গমঞ্চ হয়ে থাকবে। এটি এমন এক জায়গা যেখানে অপরাধ অদৃশ্যভাবে চলতে পারে। গাজায় ক্যামেরার অনুপস্থিতি যুক্তরাষ্ট্র থেকে রপ্তানি করা বোমার মতোই ভয়াবহ হবে।
এখনই সময় সাংবাদিক, সম্পাদক ও সংবাদ সংস্থাগুলোর প্রবেশাধিকার দাবি করার। কেবল পেশাদারিত্বের অধিকার হিসাবে নয়, বরং একটি নৈতিক বাধ্যবাধকতা হিসেবেও এ দাবি তুলতে হবে। যতক্ষণ তা দেওয়া হবে না, ততক্ষণ সংবাদপত্র ও নিউজ নেটওয়ার্কগুলোর নিয়মিত পাঠক ও দর্শকদের মনে করিয়ে দেওয়া উচিত যে, তাদের সাংবাদিকদের ইসরায়েলে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
এটি কেবল ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশের ব্যাপার নয়, বরং সাক্ষ্য দেওয়ার অধিকার, ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিরা যেসব গল্প গোপন রাখতে চান, সেগুলো নথিভুক্ত করার অধিকারের বিষয়।
এখনই গাজায় প্রবেশের সময়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে অবশ্যই সে পদক্ষেপ নিতে হবে। হত্যাকাণ্ড বন্ধ বা ইসরায়েলের অনুমতির অপেক্ষা নয়, এখনই ঢুকে পড়তে হবে।
ড. ঘাদা এজিল: কানাডার আলবার্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক