সেন্টমার্টিনের সঙ্গে নৌযান চলাচল বন্ধ, দ্বীপে নিত্যপণ্যের সংকট
Published: 28th, May 2025 GMT
বৈরী আবহাওয়ার কারণে কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এতে সেন্টমার্টিন দ্বীপে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। দ্বীপবাসী দুর্ভোগে পড়েছেন।
সোমবার (২৬ মে) থেকে তিন দিন ধরে সমুদ্র উত্তাল থাকায় যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রলার চলাচল বন্ধ রয়েছে। দ্বীপজুড়ে বইছে ঝোড়ো হাওয়া, সঙ্গে রয়েছে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি। মাছ ধরার ট্রলারগুলোও নিরাপত্তার স্বার্থে টেকনাফে ফিরে এসেছে।
টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটের সার্ভিস বোট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রশিদ আহমদ বুধবার (২৮ মে) দুপুরে জানান, দুর্ঘটনার আশঙ্কায় গত তিন দিন নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে মালামাল আনা-নেওয়া পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। দ্বীপবাসী কর্মহীন অবস্থায় দুর্বিষহ সময় পার করছেন।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল রয়েছে। কক্সবাজারসহ দেশের চারটি সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত জারি করা হয়েছে। টেকনাফ উপকূলেও ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।
পানির উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে টেকনাফ সীমান্তের শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়া এলাকায় নাফ নদের তীরে জোয়ারের ঢেউয়ে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সেন্টমার্টিনের স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর হোসেন আকাশ বলেন, ‘‘সকাল থেকে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে নদীর পানি বেড়ে বেড়িবাঁধে আঘাত করছে। এতে অন্তত অর্ধশতাধিক পরিবার ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।’’
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়জুল ইসলাম বলেন, ‘‘তিন দিন ধরে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বাজারে পণ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। দ্বীপবাসীর দিনকাল খুব খারাপ যাচ্ছে।’’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘‘বৈরী আবহাওয়ার কারণে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে আগে থেকে সেন্টমার্টিনে আড়াই হাজার মানুষের জন্য ত্রাণ সহায়তা পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার নৌযান চালু হবে।’’
শাহপরীর দ্বীপের ভাঙনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
ঢাকা/তারেকুর/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন টম র ট ন
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্নীতির মামলায় শেখ হাসিনার পরিবারের ৭ সদস্যের বিচার শুরু, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের পৃথক ছয়টি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন ও ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম ও সুলতান মাহমুদ।
আগামী ১১ ও ১৩ আগস্ট মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের ঠিক করা হয়েছে।
মামলায় অভিযুক্ত শেখ হাসিনা পরিবারের সদস্যরা হলেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক (ববি)।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের পৃথক ছয়টি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুদকের পক্ষ থেকে অভিযোগ গঠনের পক্ষে আদালতে যুক্তি তুলে ধরা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন আদালত।
এর আগে গত ২০ জুলাই পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের মামলায় শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে করা মামলাটি এই আদালতে বদলি হয়।
দুদকের পিপি মীর আহমেদ আলী সালাম প্রথম আলোকে বলেন, সম্প্রতি প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের ছয়টি মামলায় শেখ হাসিনাসহ অন্যদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পরে মামলাগুলো বিচারের জন্য অন্য আদালতে বদলির আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত।
প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক তিন মামলায় গত এপ্রিলে শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক তিনটি মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। তিনটি মামলায় তাঁদের ছাড়াও সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদসহ ১৬ জন অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি।
২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের নামে বরাদ্দ নেওয়া প্লটের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা করে দুদক।
পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ছয়টি মামলায় শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে গত ১০ মার্চ অভিযোগপত্রের অনুমোদন দেয় দুদক।