বৈরী আবহাওয়ার কারণে কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এতে সেন্টমার্টিন দ্বীপে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। দ্বীপবাসী দুর্ভোগে পড়েছেন। 

সোমবার (২৬ মে) থেকে তিন দিন ধরে সমুদ্র উত্তাল থাকায় যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রলার চলাচল বন্ধ রয়েছে। দ্বীপজুড়ে বইছে ঝোড়ো হাওয়া, সঙ্গে রয়েছে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি। মাছ ধরার ট্রলারগুলোও নিরাপত্তার স্বার্থে টেকনাফে ফিরে এসেছে।

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটের সার্ভিস বোট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রশিদ আহমদ বুধবার (২৮ মে) দুপুরে জানান, দুর্ঘটনার আশঙ্কায় গত তিন দিন নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে মালামাল আনা-নেওয়া পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। দ্বীপবাসী কর্মহীন অবস্থায় দুর্বিষহ সময় পার করছেন। 

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল রয়েছে। কক্সবাজারসহ দেশের চারটি সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত জারি করা হয়েছে। টেকনাফ উপকূলেও ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।

পানির উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে টেকনাফ সীমান্তের শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়া এলাকায় নাফ নদের তীরে জোয়ারের ঢেউয়ে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সেন্টমার্টিনের স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর হোসেন আকাশ বলেন, ‘‘সকাল থেকে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে নদীর পানি বেড়ে বেড়িবাঁধে আঘাত করছে। এতে অন্তত অর্ধশতাধিক পরিবার ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।’’ 

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়জুল ইসলাম বলেন, ‘‘তিন দিন ধরে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বাজারে পণ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। দ্বীপবাসীর দিনকাল খুব খারাপ যাচ্ছে।’’ 

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘‘বৈরী আবহাওয়ার কারণে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে আগে থেকে সেন্টমার্টিনে আড়াই হাজার মানুষের জন্য ত্রাণ সহায়তা পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার নৌযান চালু হবে।’’ 

শাহপরীর দ্বীপের ভাঙনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি। 
 

ঢাকা/তারেকুর/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ন টম র ট ন

এছাড়াও পড়ুন:

দ. এশিয়ায় বাংলাদেশে জিডিপির সবচেয়ে কম বরাদ্দ স্বাস্থ্য খাতে

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশে জিডিপির সবচেয়ে কম শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়। শিশুর সার্বিক উন্নতিতে বরাদ্দ বাড়ানো জরুরি বলে মনে করছেন বিশিষ্টজন। এ ছাড়া অন্যান্য খাতের বাজেট কমিয়ে এ খাতে কিভাবে বরাদ্দ দিতে হবে তার রোডম্যাপ করাও জরুরি বলে মনে করেন তারা।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের ইউনিসেফ বাংলাদেশ কার্যালয়ে এক মিডিয়া ওরিয়েন্টেশনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। ‘২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট : শিশুদের দৃষ্টিকোণ থেকে বর্তমান প্রবণতা এবং তাৎক্ষণিক অগ্রাধিকার’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের শিশু-সম্পর্কিত সমস্যা এবং শিশুর বিকাশের ওপর বাজেট বরাদ্দের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।

এতে ইউনিসেফ, বাংলাদেশের সোশ্যাল পলিসি অ্যান্ড ইকোনমিক স্পেশালিস্ট মো. আশিক ইকবাল তাঁর মূল প্রবন্ধে বলেন, ‘ইউনিসেফ মূলত শিশুদের নিয়ে কাজ করে। শিশু অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আমাদের মূলত প্রয়োজন বাজেট। বাজেট বরাদ্দ ছাড়া আমরা তা করতে পারব না। এবার কোনো রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় না থাকায় আশা করা যায়, বাজেটে কিছুটা ভিন্নতা থাকবে। বাজেট তৈরির ক্ষেত্রে শিশুদের নিয়ে যারা কাজ করে, তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয় না। সেই সুযোগটি এবার তৈরি হয়েছিল। অন্যান্য দেশ স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে যেভাবে বরাদ্দ দেয়, সেখান থেকেও আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। 

প্রবন্ধে বলা হয়, সোশ্যাল খাতে আমাদের যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়, সেগুলো গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ডের তুলনায় অনেক কম। গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী, জিডিপির ৪ থেকে ৬ শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ দেওয়া উচিত। আমাদের দেশে বাজেটের মাত্র ১২ শতাংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়। গত বছর শিক্ষা খাতে জিডিপির ১ দশমিক ৬ শতাংশ বিনিয়োগ করা হয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ