কৃষিসচিব মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেছেন, উন্নত কৃষিচর্চার মাধ্যমে উৎপাদিত আম স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ। আম উৎপাদনে উত্তম কৃষিচর্চা সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। তিনি বলেছেন, গত বছর ১ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন আম বিদেশে রপ্তানি হয়েছে। আমরা আম রপ্তানি ৫০ হাজার টনে উন্নীত করতে পারি। এর জন্য আম আমদানিকারক দেশের বিধিবিধান মেনে উৎপাদন ও বাজারজাত করতে হবে।

উত্তম কৃষিচর্চা অনুসরণ করে উৎপাদিত নিরাপদ আম বাজারজাতকরণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কৃষিসচিব। আজ শুক্রবার রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে কৃষকের বাজারে এ অনুষ্ঠান হয়।

কৃষিসচিব এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, ‘দেশে উৎপাদিত আম সুস্বাদু ও গুণগত মানসম্পন্ন হওয়ায় সারা বিশ্বে চাহিদা রয়েছে। আমাদের সীমাবদ্ধতার কারণে সেগুলো পৌঁছাতে পারি না। উন্নত কৃষিচর্চার মাধ্যমে গ্যাপ পূরণ করে আমরা রপ্তানি বাড়াতে চাই। বাংলাদেশের আম ৩৮টি দেশে রপ্তানি হয়। এ বছর নতুন করে চীন যোগ হয়েছে।

সচিব বলেন, ‘আমের রং ও মৌসুম বাড়াতে বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন। আমাদের দেশের আম বেশ সুস্বাদু। কিন্তু আমের কালার (রং) নিয়ে বিদেশে কনফিউশন রয়েছে। সব ধরনের নিরাপত্তা বজায় রেখে কীভাবে আমের রং ও মৌসুম বাড়ানো যায়, তার জন্য আমাদের বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন।’

কৃষিসচিব বলেন, ‘আমকে যথাযথভাবে উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে আমরা কাজ করছি। এ জন্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে একাধিক প্রকল্পও রয়েছে।’

রপ্তানি বাধা কাটিয়ে উঠতে আন্তমন্ত্রণালয় সভা হয়েছে জানিয়ে এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, ‘রপ্তানির সময় যে সমস্যাগুলো হয়, সেটা দেখব। কাস্টমসসহ যে বিষয়গুলোতে দীর্ঘসূত্রতা রয়েছে, তা সমাধানে আন্তমন্ত্রণালয় সভা হয়েছে।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) মহাপরিচালক মো.

ছাইফুল আলম, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক নার্গীস আক্তার, প্রোগ্রাম অন অ্যাগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন, এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ প্রকল্পের প্রোগ্রাম কো–অর্ডিনেটর আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

এর আগে সচিব উত্তম কৃষিচর্চা অনুসরণ করে উৎপাদিত নিরাপদ আম বাজারজাতকরণ উদ্বোধন করেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ষ চর চ উৎপ দ ত

এছাড়াও পড়ুন:

ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ অবহিতকরণ ও বাজার পরিস্থিতি নিয়ে ক্যাবের সেমিনার

কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ অবহিতকরণ ও বাজার পরিস্থিতি’ বিষয়ক সেমিনার বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাস্টিজের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ক্যাব, নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি মাজাহার হোসেন মাজুমের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক বিল্লাল হোসেন রবিনের সঞ্চালনায় সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হৃদয় রঞ্জন বনিক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের কৃষি বিপণন কর্মকর্তা ইবনুল ইসলাম, ক্যাব, নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী দলিল উদ্দিন দুলাল, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাষ্টিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান, নিতাইগঞ্জ পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ি মালিক সমিতির সভাপতি শংকর সাহা, নারায়ণগঞ্জ জেলা চাউল আড়ৎদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: শফিকুল ইসলাম লিটন, এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক আব্দুর রহমান গাফ্ফারী, দিগুবাজার মুদি দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো: শাহাদাৎ হোসেন, নারায়ণগঞ্জ বেকারী মালিক সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি রুহুল আমিন, সহসভাপতি মাহমুদুল হাসান আহাদ, ক্যাব জেলা কমিটির প্রচার সম্পাদক আবু সাঈদ পাটোয়ারী রাসেল, ক্যাব সদর উপজেলার সভাপতি ডা. গাজীখায়রুজ্জামান, সফুরা খাতুন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: রফিকুল ইসলাম, বি এম জালাল উদ্দিন স্কুলের পরিচালক মো: আল মামুন, আদমজী উম্মুল ক্বোরা হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হাকীম জয়নুল আবেদীন, বিজয় হাইস্কুলের পরিচালক এস এম বিজয়, নারী কল্যান সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও ক্যাব সদস্য রাহিমা আক্তার লিজা, ব্যবসায়ি শাহিন মিয়া, ক্যাব সদস্য মো: সফিকুল ইসলাম, ক্যাব সদস্য দিদার এলাহী ইকবাল, নারী কল্যান সংস্থার সদস্য জুলী সিকদার প্রমুখ।

সেমিনারে ব্যবস্যায়িদের জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এবং কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর কার্যক্রম অবহিত করা হয়।

ব্যবসায়িরা তাদের বক্তব্যে বলেন, নিজে খেতে পারবো না এমন খাদ্য পণ্য তৈরী করবো না। আমরা সচেতন হলে ভোক্তা প্রতারিত হবে না। যদিও জরিমানা কোন সমাধান নয়। তবে অসৎ ব্যবসায়িদের একাধিকবার সতর্ক ও জরিমানার পর সংশোধন না হলে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে।

প্রয়োজেনে জেল দিতে হবে। তাতেও সংশোধন না হলে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে হবে। তবে আইন প্রয়োগ সবার জন্য সমান হতে হবে।

তারা আরও বলেন, ব্যবসায়ি ও ক্রেতাদের ভোক্তা অধিকার আইন সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। মাঝে মধ্যে ব্যবসায়িদের নিয়ে মতবিনিয় সভা করতে হবে। কারণ ব্যবসায়িদেরও নানা সমস্যা ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কর্পোরেট ব্যবসায়িদের কাছে মাঠ পর্যায়ের ব্যবসায়িরা নানাভাবে হয়রানীর শিকার হয়।

উদাহরণ দিয়ে তারা বলেন, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের মিল থেকে এক দামে পন্য দেয়, আর রশিদ দেয় আরেক দাম উল্লেখ করে। যেমন সরকারের কাছ থেকে তারা নিরাপদ থাকার জন্য এক রেট দেয়। আর আমাদের কাছ থেকে আরেক রেট (বেশি দাম) নেয়। 

ভোক্তা অধিকার ও ক্যাব তাদের বক্তব্যে বলেন, দোকানীদের দৃশ্যমান জায়গায় পণ্যের মূল্য তালিকা প্রদর্শন, ক্রয়-বিক্রয়ের রশিদ সংরক্ষণ এবং ব্যবসার বৈধ কাগজপত্র সংরক্ষণ করতে হবে। ভোক্তার টিম দেখে দোকান-পাট বন্ধ করে চলে যাওয়া কোন সমাধান নয়। কোন ত্রুটি থাকলে আলোচনার মাধ্যমে তা সংশোধন করা যেতে পারে।

ভোক্তা অধিকার শুধু ব্যবসায়িদের জরিমানা আর হয়রানী করার জন্য অভিযান পরিচালনা করে না। ব্যবসায়িদের সঠিক উপায়ে ব্যবসা করার পথ দেখাতে যায়। সচেতন করে, সতর্ক করে। যারা সঠিক উপায়ে ব্যবসায়িক নিয়ম-নীতি মেনে ব্যবসা করবে তাদের কোন সমস্যা নাই।

যারা নকল, ভেজাল, ওজনে কম, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রি, পঁচা বাসি খাবার সরবরাহ করবে তারা তো জেল জরিমানায় পড়বে। এটাই স্বাভাবিক। আমরা চাই ভোক্তা ন্যায্য মূল্যে কোন প্রকার প্রতারিত না হয়ে পণ্যে ক্রয় করবে।

ভোক্তা অধিকার আইন সম্পর্কে ব্যবসায়িদের সচেতন করতে ক্যাব তাদের ক্যাম্পেই আরও জোরদার করবে বলে সেমিনারে জানানো হয়। 

সেমিনারে ভোক্তার অধিকার ও আইন সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন করার পাশাপাশি পাঠ্য পুস্তকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন সংযোজন করার প্রস্তাব করা হয়।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হবে: ড. আনিসুজ্জামান
  • ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ অবহিতকরণ ও বাজার পরিস্থিতি নিয়ে ক্যাবের সেমিনার