Samakal:
2025-06-02@21:06:44 GMT

তবুও আসে জন্মদিন...

Published: 1st, June 2025 GMT

তবুও আসে জন্মদিন...

২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে কানাডায় ভয়াবহ এক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন কুমার নিবিড়। সেই থেকে এখনও সেখানকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন নন্দিত কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের আত্মজ। যাকে নিয়ে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায় কাটছে শিল্পীর একেকটি দিন। একমাত্র সন্তানের সুস্থতা কামনায় প্রহর গুনে চলেছেন তিনি। এর মাঝেই একে একে কেটে যাচ্ছে দিন, মাস, বছর। জীবন তবু থেমে থাকার নয়। সময়ের পরিক্রমায় উল্টে যাচ্ছে ক্যালেন্ডারের পাতা। এভাবেই বছর ঘুরে চলে এসেছে ১ জুন। ১৯৬৩ সালের যে দিনটিতে পৃথিবীতে এসেছিলেন কুমার বিশ্বজিৎ। শিল্পীর জন্য আরেকটি কষ্টের অভিজ্ঞতা হলো, যে মায়ের গর্ভে তাঁর জন্ম, স্নেহ ছায়াতলে বেড়ে ওঠা, প্রাণপ্রিয় সেই মাকেও হারিয়েছেন। যার উৎসাহ, প্রেরণায় গানের ভুবনে সমস্ত চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এসেছেন, হয়ে উঠেছেন দেশের তুমুল জনপ্রিয় এক কণ্ঠশিল্পী, সেই মাকে ছাড়াই পাড়ি দিতে হচ্ছে জীবনের বাকিটা পথ। 

অনিন্দ্য গায়কী আর অনবদ্য সৃষ্টির কারণে কুমার বিশ্বজিৎ হয়ে উঠেছেন অগণিত সংগীতপ্রেমীর প্রিয় শিল্পী। যে কারণে তাঁর জন্মদিনকে ঘিরে কৌতূহল থাকে অনেকের। শুভেচ্ছা, ভালোবাসায় সিক্ত করার পাশাপাশি জন্মদিন কীভাবে কাটাবেন, কোথায় যাবেন, কী করবেন– তা নিয়ে থাকে অনুরাগীদের নানা প্রশ্ন। অতীতে এসব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সহজ ছিল, এখন ভাবতে হয়, কী উত্তর দেবেন ভক্ত-অনুরাগীদের। কারণ নিজেই জানেন না, জন্মদিনটা কীভাবে কাটবে। তারপরও অনুরোধ উপেক্ষা করতে পারেননি বলেই মুখ খুলেছেন এই শিল্পী। জন্মদিন নিয়ে কোনো উচ্ছ্বাস না থাকলেও তিনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন নিবিড়ের জন্য, তাঁর পরিবারের জন্য। 

বলেছেন, ‘‘জন্মদিন এলেই মায়ের কথা খুব মনে পড়ে। কয়েক বছর আগে আমি আমার মাকে হারিয়েছি। শেষ সময়টাতে এসে মাকে নিয়ে কোথাও বের হতে পারতাম না। কিন্তু মারা যাবার এক বছর বা দু’বছর আগে তাঁকে নিয়ে বের হয়েছিলাম ‘গরবিনী মা’ সম্মাননা অনুষ্ঠানে। ডা.

আশীষ আমার অত্যন্ত স্নেহভাজন। তারই আয়োজনে এই অনুষ্ঠানে আমি মাকে নিয়ে অংশগ্রহণ করেছিলাম। মা ‘গরবিনী মা’ সম্মাননায় ভূষিত হয়েছিলেন। মায়ের মুখে ওইদিন যে হাসি দেখেছি তা এখনও আমার চোখে ভাসে। জন্মদিন এলেই আসলে মায়ের কথাই মনে পড়ে বেশি। জন্মদিন এলে আরও মনে হয়, হয়তো মায়ের কাছে যাবার সময় ঘনিয়ে আসছে। আমার কাছে সবসময়ই মনে হয় মানুষ বিশেষ ভ্রমণের জন্য পৃথিবীতে আসেন। কেউ কেউ সফল হন, কেউ কেউ হন না। আমি সফল কিনা জানি না। তবে আমার গান যদি আমি মরে যাবার পরেও শ্রোতা-দর্শকের মাঝে বেঁচে থাকে সেটিই হবে আমার প্রাপ্তি। কী এক অদ্ভুত ভাবনা মানুষের, মরার পরেও বেঁচে থাকার বাসনা। হয়তো আমিও এমন করেই বেঁচে থাকব আমার গান দিয়ে, পৃথিবীতে ভ্রমণের সার্থকতা আমার হয়তো সেখানেই।’’

 এ কথার পাশাপাশি একটি স্বস্তির খবরও এসেছে কুমার বিশ্বজিতের কাছ থেকে। তিনি জানিয়েছেন, কুমার নিবিড় এখন কিছুটা শঙ্কামুক্ত। তাই স্টেজ শোতে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কানাডার টরন্টো থেকে তাঁর স্টেজ শো পর্ব শুরু হতে যাচ্ছে। এরপর ফ্রান্সের প্যারিস, নিউজিল্যান্ড, কাতার এবং অস্ট্রেলিয়ার বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে ধারাবাহিক শো করবেন তিনি।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

সাইকেলে নারীর আত্মবিশ্বাস

রাজধানীর সড়কে বেশির ভাগ মানুষের প্রধান ভরসা গণপরিবহন; কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। পাশাপাশি নারীরা প্রায়ই গণপরিবহনে হয়রানির শিকার হন। এই বাস্তবতায় নিজের স্বচ্ছন্দ ও সাশ্রয়ী পরিবহনের কথা ভেবেই সাইকেল চালানো শিখেছিলেন মার্জিয়া নীলা। তখন তিনি মোহাম্মদপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। তাঁর সাইকেলযাত্রার সূচনা ২০২১ সালে, লালমাটিয়া মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী তানহার হাত ধরে। তানহা সে সময় ঢাকা উদ্যান এলাকায় নারীদের সাইকেল প্রশিক্ষণ দিতেন।
মার্জিয়া জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুসন্ধান করে পরিচিত এক আপুর কাছ থেকে ধার করা সাইকেলেই তাঁর শেখা শুরু। পরে প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ করে নিজে একটি সাইকেল কেনেন, যা এখনও তাঁর বিশ্বস্ত সঙ্গী। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। প্রতিদিন সাইকেলে করেই ক্যাম্পাসে যান।
তাঁর ভাষায়, ‘সাইকেল আমাকে জ্যাম থেকে মুক্তি দিয়েছে, গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। এখন আমি নিজের ইচ্ছামতো চলাফেরা করতে পারি– সময় বাঁচে, শরীর ভালো থাকে, পরিবেশও সুরক্ষিত থাকে।’
মার্জিয়া আরও জানান, ‘আমার কাছ থেকে কয়েক বান্ধবী ও সিনিয়র আপু সাইকেল চালানো শিখেছেন। মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় আমার বাসা। ওখানকার কয়েক কর্মজীবী নারীও আমার কাছে শিখেছেন। তবে সময়ের অভাবে নিয়মিত শেখাতে পারি না, ছুটির দিনেই সুযোগ হয়। আমার কয়েক পরিচিত আপুও এ কাজে যুক্ত আছেন।’
শুক্রবার সকালে চন্দ্রিমা উদ্যানে কয়েক নারীকে সাইকেল চালানো শেখান লিজা আক্তার। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। প্রতি শুক্রবার নারীদের সাইকেল চালানো শেখানোই তাঁর স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ। লিজা বলেন, ‘শুধু যানজট এড়ানো বা দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানো নয়– সাইক্লিং শরীরকে ফিট রাখে আর আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। এটি নারীর জন্য এক নতুন অনুপ্রেরণার জায়গা।’
গত কয়েক বছরে সাইকেলের জনপ্রিয়তা বাড়লেও ঢাকার রাস্তায় তরুণীদের সাইকেল চালানোর দৃশ্য এখনও খুব কম। এর পেছনে পারিবারিক, ধর্মীয় ও সামাজিক নানা প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি নারীদের মানসিক প্রস্তুতির অভাবও দায়ী বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
লিজা বলেন, ‘সামাজিক বাধা এখনও প্রবলভাবে টের পাই। আমার পরিবার সেভাবে বাধা না দিলেও কেউ উৎসাহও দেয় না। নিরাপত্তার ভয়ে অনেকেই ভয় পান। রাস্তায় বের হলেই কটু মন্তব্য শুনতে হয়– কখনও পাশের বাইক থেকে, কখনও রিকশাওয়ালার মুখে। শুরুতে খারাপ লাগত, এখন অভ্যস্ত হয়ে গেছি। সমাজ এখনও নারীদের সাইকেলে দেখলে বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকে। বেশির ভাগ সময় কেউ প্রতিবাদ করে না। গত এক বছর ধরে মাঝে মাঝে ইতিবাচক মন্তব্যও শুনি।’
একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করে লিজা বলেন, ‘এক দিন সকালে অফিসে যাওয়ার সময় এক চাচা ডাক দিলেন। কাছে গিয়ে শুনি, তিনি অবসরপ্রাপ্ত। সকালে হাঁটতে বের হন। প্রতিদিন আমাকে সাইকেল চালিয়ে যেতে দেখেন, ভালো লাগে– এ কথা বলার জন্যই ডাক দিয়েছিলেন। আমাকে দোয়া করলেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সামর্থ্য ও সংস্কারের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা
  • রাজধানীর ২২ পশুর হাট ক্রেতার অপেক্ষায়
  • চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন হাজারো রোগী
  • ‘টি-টোয়েন্টি খেলতে এসেছি, প্রতি মিনিট হিসাব করে কাজ করব’
  • সিকিমে ভারী বর্ষণ ও ভূমিধসে আটকা ১৩০০ পর্যটক
  • সাইকেলে নারীর আত্মবিশ্বাস
  • সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে স্থানীয় উৎপাদনে চাহিদা পূরণ সম্ভব
  • বিবিএ পাস রিকশাচালক আমিরের কষ্টের কাহিনি
  • কুমিল্লায় বাড়ছে গোমতী নদীর পানি