Samakal:
2025-08-01@20:12:21 GMT

তবুও আসে জন্মদিন...

Published: 1st, June 2025 GMT

তবুও আসে জন্মদিন...

২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে কানাডায় ভয়াবহ এক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন কুমার নিবিড়। সেই থেকে এখনও সেখানকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন নন্দিত কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের আত্মজ। যাকে নিয়ে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায় কাটছে শিল্পীর একেকটি দিন। একমাত্র সন্তানের সুস্থতা কামনায় প্রহর গুনে চলেছেন তিনি। এর মাঝেই একে একে কেটে যাচ্ছে দিন, মাস, বছর। জীবন তবু থেমে থাকার নয়। সময়ের পরিক্রমায় উল্টে যাচ্ছে ক্যালেন্ডারের পাতা। এভাবেই বছর ঘুরে চলে এসেছে ১ জুন। ১৯৬৩ সালের যে দিনটিতে পৃথিবীতে এসেছিলেন কুমার বিশ্বজিৎ। শিল্পীর জন্য আরেকটি কষ্টের অভিজ্ঞতা হলো, যে মায়ের গর্ভে তাঁর জন্ম, স্নেহ ছায়াতলে বেড়ে ওঠা, প্রাণপ্রিয় সেই মাকেও হারিয়েছেন। যার উৎসাহ, প্রেরণায় গানের ভুবনে সমস্ত চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এসেছেন, হয়ে উঠেছেন দেশের তুমুল জনপ্রিয় এক কণ্ঠশিল্পী, সেই মাকে ছাড়াই পাড়ি দিতে হচ্ছে জীবনের বাকিটা পথ। 

অনিন্দ্য গায়কী আর অনবদ্য সৃষ্টির কারণে কুমার বিশ্বজিৎ হয়ে উঠেছেন অগণিত সংগীতপ্রেমীর প্রিয় শিল্পী। যে কারণে তাঁর জন্মদিনকে ঘিরে কৌতূহল থাকে অনেকের। শুভেচ্ছা, ভালোবাসায় সিক্ত করার পাশাপাশি জন্মদিন কীভাবে কাটাবেন, কোথায় যাবেন, কী করবেন– তা নিয়ে থাকে অনুরাগীদের নানা প্রশ্ন। অতীতে এসব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সহজ ছিল, এখন ভাবতে হয়, কী উত্তর দেবেন ভক্ত-অনুরাগীদের। কারণ নিজেই জানেন না, জন্মদিনটা কীভাবে কাটবে। তারপরও অনুরোধ উপেক্ষা করতে পারেননি বলেই মুখ খুলেছেন এই শিল্পী। জন্মদিন নিয়ে কোনো উচ্ছ্বাস না থাকলেও তিনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন নিবিড়ের জন্য, তাঁর পরিবারের জন্য। 

বলেছেন, ‘‘জন্মদিন এলেই মায়ের কথা খুব মনে পড়ে। কয়েক বছর আগে আমি আমার মাকে হারিয়েছি। শেষ সময়টাতে এসে মাকে নিয়ে কোথাও বের হতে পারতাম না। কিন্তু মারা যাবার এক বছর বা দু’বছর আগে তাঁকে নিয়ে বের হয়েছিলাম ‘গরবিনী মা’ সম্মাননা অনুষ্ঠানে। ডা.

আশীষ আমার অত্যন্ত স্নেহভাজন। তারই আয়োজনে এই অনুষ্ঠানে আমি মাকে নিয়ে অংশগ্রহণ করেছিলাম। মা ‘গরবিনী মা’ সম্মাননায় ভূষিত হয়েছিলেন। মায়ের মুখে ওইদিন যে হাসি দেখেছি তা এখনও আমার চোখে ভাসে। জন্মদিন এলেই আসলে মায়ের কথাই মনে পড়ে বেশি। জন্মদিন এলে আরও মনে হয়, হয়তো মায়ের কাছে যাবার সময় ঘনিয়ে আসছে। আমার কাছে সবসময়ই মনে হয় মানুষ বিশেষ ভ্রমণের জন্য পৃথিবীতে আসেন। কেউ কেউ সফল হন, কেউ কেউ হন না। আমি সফল কিনা জানি না। তবে আমার গান যদি আমি মরে যাবার পরেও শ্রোতা-দর্শকের মাঝে বেঁচে থাকে সেটিই হবে আমার প্রাপ্তি। কী এক অদ্ভুত ভাবনা মানুষের, মরার পরেও বেঁচে থাকার বাসনা। হয়তো আমিও এমন করেই বেঁচে থাকব আমার গান দিয়ে, পৃথিবীতে ভ্রমণের সার্থকতা আমার হয়তো সেখানেই।’’

 এ কথার পাশাপাশি একটি স্বস্তির খবরও এসেছে কুমার বিশ্বজিতের কাছ থেকে। তিনি জানিয়েছেন, কুমার নিবিড় এখন কিছুটা শঙ্কামুক্ত। তাই স্টেজ শোতে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কানাডার টরন্টো থেকে তাঁর স্টেজ শো পর্ব শুরু হতে যাচ্ছে। এরপর ফ্রান্সের প্যারিস, নিউজিল্যান্ড, কাতার এবং অস্ট্রেলিয়ার বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে ধারাবাহিক শো করবেন তিনি।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও

রংপুরের গংগাচড়ায় ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ঘিরে সহিংসতার শিকার হিন্দু পরিবারের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। তবে ঘটনার তিন দিন পরেও এলাকায় ফেরেনি অনেক পরিবার। আতঙ্কে এখনো আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে অনেকে।

গত ২৭ জুলাই রাতে ওই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার আগে এলাকায় মাইকিং করে লোকজন জড়ো করা হয়।

পুলিশ, প্রশাসন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বলছেন, যারা হামলা করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকে ছিলেন ‘বহিরাগত’। পাশের নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা থেকে লোকজন এসে হামলা চালিয়ে চলে যায়। হামলার সময় ২২টি ঘরবাড়ি তছনছ ও লুটপাট করা হয়। 

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প বসানো হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে পুলিশ টহল। প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ঢেউটিন, কাঠ, চাল-ডাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছে এবং ঘরবাড়ি মেরামতের কাজও শুরু হয়েছে। তবু আতঙ্কিত পরিবারগুলো। 

ক্ষতিগ্রস্তদের একজন অশ্বিনী চন্দ্র মোহান্ত বলেন, “সেদিনের ঘটনা ছিল এক ভয়াবহ। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ম অবমাননাকারী কিশোরকে থানা হেফাজতে দিয়েছি। কিন্তু তারপরও ঘরবাড়ি রক্ষা হয়নি। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি এবং কিছু মুরুব্বি আমাদেরকে অভয় দিয়েছিলেন, কিন্তু রক্ষা হয়নি।” 

তিনি আরো বলেন, “আমরা নিজেরাই অভিযুক্ত কিশোরকে থানায় সোপর্দ করেছি। তারপরও মিছিল নিয়ে এসে দুই দফায় আমাদের ২০ থেকে ২৫টি ঘরবাড়ি তছনছ করে দিয়ে লুটপাট করেছে তারা। এদের মধ্যে অধিকাংশ লোকেই অপরিচিত।” 

আরেক ভুক্তভোগী দেবেন্দ্র চন্দ্র বর্মন জানান, “প্রথমে অল্পসংখ্যক কম বয়সী কিছু ছেলে আসে। পরে হাজারো লোকজন এসে আমাদের বাড়িঘরে তাণ্ডব চালায়। অনেকেই এখনো আত্মীয়দের বাড়িতে। আমরা চরম আতঙ্কে আছি।”

রবীন্দ্র চন্দ্রের স্ত্রী রুহিলা রানী বলেন, “ছোট ছেলেটা যদি ভুল করে থাকে, আমরা তাকে থানায় দিয়েছি। কিন্তু তারপরও এমন ধ্বংসযজ্ঞ কেন? আমাদের গরু, সোনা-টাকা সব লুটে নিয়েছে। শুধু চাল-ডাল আর টিনে কি জীবন চলে?”

গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকুসহ একটি প্রতিনিধি দল। তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

গংগাচড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল এমরান বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে কিশোরটিকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয় এবং পরে আদালতের মাধ্যমে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তারপরও পুলিশ প্রশাসন সর্বাত্মক নিরাপত্তায় নিয়োজিত।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহামুদ হাসান মৃধা বলেন, “অপরাধীদের ধরতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হচ্ছে সহায়তা। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পুরো এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে।” 

উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্যমতে, হামলায় ১৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাতে ২২টি পরিবার বসবাস করতেন। ঘর মেরামতের পর কিছু পরিবার ফিরলেও অভিযুক্ত কিশোর ও তার চাচার পরিবারের কেউ এখনো ফিরে আসেনি।

ঢাকা/আমিরুল/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের
  • মেসি বনাম ইয়ামাল: ফিনালিসিমার সময়-সূচি ঘোষণা
  • গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও