মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা উপলক্ষে আগামী বৃহস্পতিবার (৫ জুন) থেকে ১০ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে দেশ। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে কয়েক দিন থেকেই ঘরমুখো মানুষ। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমলেও সারা দেশেই কম-বেশি মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত চলছে এখনো। ফলে, এ সময়ে ঈদযাত্রা কতটা স্বস্তির বা ভোগান্তির হবে, তা নিয়ে অনেকের মনেই রয়েছে সংশয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় ও উত্তর বঙ্গোপসাগরে তা মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ জুন) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়; রংপুর, ঢাকা, চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু’-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী এবং সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের আশঙ্কা আছে।
বুধবার (৪ জুন) দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলেই বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। এর মধ্যে সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়; রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের দু’-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
পরের তিন দিন (বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার ঈদের দিন) এ ধারা অব্যাহত থাকলেও বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ সময়ে দেশের দু’-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
ফলে, বৃষ্টির কারণে ঈদযাত্রার শুরুর দিকে ভোগান্তি থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা ধীরে ধীরে কমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকায় আজ (মঙ্গলবার) সকাল ৬টায় তাপমাত্রা ২৪.
বৃষ্টিপাতের মধ্যেও খুলনা বিভাগের জেলাগুলোতে আগামী ২৪ ঘণ্টায় তাপমাত্রা বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
তবে, বৃষ্টিপাতের কারণে পরের দুই দিন সারা দেশে গরম কিছুটা কমতে পারে। আবার তার পর থেকে বৃষ্টি কমার সঙ্গে সঙ্গে ফের বাড়তে থাকবে তাপমাত্রা।
ঈদের পর থেকে তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ঢাকা/হাসান/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দুই জেলার সীমান্ত দিয়ে ৩০ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
ময়মনসিংহের ধোবাউড়া ও হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে ২২ জন এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট সীমান্ত দিয়ে আটজনকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল সোমবার গভীর রাত ও আজ মঙ্গলবার ভোরে তাঁদের বাংলাদেশে পাঠানো হয়। পরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাঁদের আটক করে হেফাজতে নেয়।
বিজিবি জানিয়েছে, নেত্রকোনার অধীন ৩১ বিজিবির আওতাধীন ধোবাউড়ার মুন্সিপাড়া সীমান্ত দিয়ে দিবাগত রাত তিনটার দিকে ভারতের রসনাই গিরি বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা ১২ জনকে ঠেলে পাঠান। পরে বিজিবি তাঁদের আটক করে মুন্সিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে যায়।
আটক করা ব্যক্তিদের মধ্যে একজন শিশু, তিনজন নারী ও আটজন পুরুষ। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁরা খুলনা বিভাগের বাসিন্দা। ২০০৪ সালে অবৈধভাবে ভারতের গুজরাট রাজ্যে গিয়ে বসবাস শুরু করেন তাঁরা।
আটক ব্যক্তিদের মধ্যে শরিফুল উল্লাহ নামের একজন বলেন, ২০০৪ সালে কাজের সন্ধানে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান। গুজরাটে পরিবার নিয়ে বসবাস করছিলেন এবং সেখানে একটি মুরগির দোকানে কাজ করতেন। গত ২৪ মে ভারতের পুলিশ তাঁদের আটক করে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে। পরে বিএসএফ তাঁদের সঙ্গে থাকা টাকা, মুঠোফোনসহ অন্যান্য জিনিস রেখে সীমান্তে এনে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায়।
বিজিবির মুন্সিপাড়া ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার খাইরুল ইসলাম বলেন, রাতে বিএসএফ ১২ জনকে পুশইন করে। তাঁরা সবাই খুলনা বিভাগের নাগরিক। ২০০৪ সালে তাঁরা ভারতে গিয়েছিলেন। বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে বিএসএফ তাঁদের পুশইন করেছে। বর্তমানে তাঁদের পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
অন্যদিকে হালুয়াঘাট উপজেলার সূর্যপুর সীমান্ত দিয়ে গতকাল রাত তিনটার দিকে ৯ নারী ও ১ শিশুকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ। ময়মনসিংহ ৩৯ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ সানবীর হাসান মজুমদার বলেন, আটক হওয়া ১০ জনই বাংলাদেশি। তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে তাঁরা বিভিন্ন সময়ে ভারতে গিয়েছিলেন। তাঁদেরও পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার চাঁনশিকারী সীমান্ত দিয়ে আটজনকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। আজ ভোরে তাঁদের আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বিজিবি ৫৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, আজ ভোর সাড়ে চারটার দিকে বিএসএফ আটজনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায়। এর মধ্যে চারজন নারী ও চারজন পুরুষ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহীসহ বিভিন্ন জেলায়।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া জানান, আটক ব্যক্তিরা বিজিবির চাঁনশিকারী সীমান্ত ফাঁড়িতে আছেন। তাঁদের ভোলাহাট থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। এ বিষয়ে পরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে।