গাজীপুরের কালীগঞ্জে কোরবানির পশুর চামড়া সুষ্ঠুভাবে সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাত করার লক্ষ্যে উপজেলার ১৮টি মাদ্রাসা ও এতিমখানার মধ্যে ১৫ টন লবণ বিতরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেলে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে লবণ বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ নিজ হাতে মাদ্রাসা ও এতিমখানাগুলোর প্রধানদের মাঝে বিভিন্ন পরিমাণে লবণ হস্তান্তর করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হুমায়ুন কবির মাস্টার, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা।

আরো পড়ুন:

জাপানিজদের স্বাস্থ্য ভালো থাকার দুই কারণ

প্রতিটি মাদ্রাসা ও এতিমখানাকে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী লবণ বরাদ্দ দেয়া হয়। সরকারি এই সহায়তায় ঈদুল আজহার সময় চামড়া সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা অনেকটাই কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন স্থানীয়রা।

ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, ‘‘পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে কোরবানির চামড়া যাতে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা যায়, সেই লক্ষ্যেই এই লবণ বিতরণ করা হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো যেন সময়মতো চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে পারে, সেই জন্য আমাদের এই উদ্যোগ।’’

ঢাকা/রফিক/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর লবণ ক রব ন র হ ট উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

‘লাল পরি’ হয়ে ঘরে ফিরল হারিয়ে যাওয়া শিশুটি

ঠিকমতো চোখে দেখে না আট বছরের শিশু মরিয়ম। মাদ্রাসা থেকে ঘরে ফেরার পথে নিখোঁজ হয় সে। নানা ঘটনাচক্রে একসময় পৌঁছায় কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার ( ইউএনও) কার্যালয়ে। পরে ইউএনওর সহায়তায় ঘরে ফিরেছে শিশুটি। ঘরে ফেরার আগে তার ‘লাল পরি’ সাজার ইচ্ছাপূরণও হয়েছে।

শিশু মরিয়মের বাড়ি কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় পূর্ব পোকখালী চরপাড়া গ্রামে তার বাড়ি। সেখানেই একটি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। গত বুধবার মাদ্রাসা ছুটির পর মায়ের জন্য অপেক্ষায় ছিল সে। তবে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে এক ব্যক্তি তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় কক্সবাজার সদরে।

ইউএনও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মরিয়ম কক্সবাজার পৌরসভার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় চোখেমুখে ভয় আর আতঙ্কের ছাপ নিয়ে হাঁটাহাঁটি করছিল। কৌতূহলী এক পথচারী কথা বলে তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। ওই পথচারী মরিয়মকে নিয়ে যান তিন কিলোমিটার দূরে উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ে। সেখান থেকে এক আনসার সদস্য মরিয়মকে ইউএনও কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।

ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী এ সময় শিশু মরিয়মের সঙ্গে কথা বলে তার বিস্তারিত ঠিকানা জানার চেষ্টা করেন। শিশুটি কেবল তার বাড়ি ঈদগাঁওয়ের পোকখালী এতটুকুই বলতে পারছিল। পরে ঈদগাঁওয়ের ইউএনওর মাধ্যমে শিশুটির বাড়ির ঠিকানা নিশ্চিত হওয়া যায়।

কাপড় কিনে দেওয়ার সময় মরিয়ম বলল, সে লাল পরি সেজে বাড়ি ফিরবে। তাকে লাল জামা, লাল চুড়ি, লাল লিপস্টিক ও লাল ওড়না দিয়ে লাল পরি সাজানো হয়। নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী, ইউএনও, কক্সবাজার সদর উপজেলা

শিশুটি প্রথমে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছিল বলে সন্দেহ ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিনের। তিনি বলেন, আলাপে শিশুটি জানায়, সে তার তিন-চার বছর বয়স পর্যন্ত ভালোভাবেই চোখে দেখত। এরপর থেকে ক্রমে তাঁর চোখের আলো ঝাপসা হতে শুরু করে। এখন সে তেমন দেখতে পায় না। তার বাবা মারা গেছেন। মা ও বড় ভাই অন্ধ। পরিবারে অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া একটি বোন আছে, সে–ই কেবল চোখে দেখতে পায়। ঘরের কাজ সব বোনই সামলায়। তাদের পরিবার থাকে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে।

শিশুটির কাছ থেকে চোখের বিষয়টি জেনে তাকে কক্সবাজার শহরের পানবাজার এলাকার কমিউনিটি চক্ষু হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে জানান ইউএনও। তিনি বলেন, ‘শিশুটির সঙ্গে কথা বলে মনে হলো তার চোখের সমস্যা এত জটিল না। হাসপাতালে নেওয়ার পর চক্ষুবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিমল চৌধুরী তার চোখের পরীক্ষা করেন। এরপর বিনা মূল্যে শিশু মরিয়মকে চশমা ও এক মাসের ওষুধ কিনে দেওয়া হয়। চশমা চোখে দিয়ে সে জানিয়েছে, আগের চেয়ে অনেক ভালো দেখতে পাচ্ছে।’

শিশুটিকে মায়ের হাতে তুলে দেন কক্সবাজার সদরের ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘লাল পরি’ হয়ে ঘরে ফিরল হারিয়ে যাওয়া শিশুটি