নিজেদের শেষ পাঁচ ম্যাচে তিন হার—খুব একটা স্বস্তিতে থাকার কথা নয় সিঙ্গাপুরের। তারপরও বাংলাদেশ থেকে তিন পয়েন্ট নিয়ে দেশে ফেরার আশা দলটির। যদিও হামজা-শমিতদের বাংলাদেশকে সমীহ করছেন সিঙ্গাপুর কোচ সুতোমু ওগুরা।

আজ রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত ম্যাচ–পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে সিঙ্গাপুর কোচ সাংবাদিকদের ভিড় দেখেই অবাক। বিস্মিত কোচ বলেন, ‘এখানে (বাংলাদেশে) এত সাংবাদিক এসেছে, আমি অবাকই হয়েছি। এতে বোঝা যায়, ম্যাচটা নিয়ে সবাই কতটা আগ্রহী।’

এরপরই বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলেন সিঙ্গাপুর কোচ। হামজা-শমিতদের গড়া দলটা যে শক্তিশালী, সেটা একপ্রকার স্বীকার করে নিয়েছেন সুতোমু, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই বাংলাদেশের এই দলটা ভালো। সে জন্য আমাদের ভালো একটা প্রস্তুতি নিতে হয়েছে। আমার বিশ্বাস, ম্যাচটা উপভোগ্য হবে।’

আরও পড়ুনএই রাতে আলো ছিল, জয় ছিল, আর ছিল একজন হামজা চৌধুরী০৪ জুন ২০২৫

সংবাদ সম্মেলনে আসা সিঙ্গাপুর দলের ডিফেন্ডার আমিরুল আদলিও এই বাংলাদেশ নিয়ে সতর্ক। জয়ের নিশ্চয়তা দিতে না পারলেও ভালো ফুটবল খেলার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন তিনি, ‘বাংলাদেশ ভালো একটা দল। কাল আমরা তাদের বিপক্ষে খেলব। আশা করি ম্যাচটি উপভোগ্য হবে। চেষ্টা থাকবে ভালো ফুটবল খেলার।’

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন সিঙ্গাপুরের কোচ কোচ সুতোমু ওগুরা.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী

আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।

রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ