এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে আজ সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল মুখোমুখি হচ্ছে সিঙ্গাপুরের। ম্যাচ শুরুর আগেই উত্তেজনার পারদ চড়েছে ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামের চারপাশে। দুপুর দুইটার আগেই স্টেডিয়াম এলাকায় ভক্তদের উপচে পড়া ভিড়ে রীতিমতো উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

ম্যাচটি ঘিরে বিপুল আগ্রহে অনলাইনে টিকিট সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়েছেন হাজারো সমর্থক। বাফুফে ছেড়েছিল ১৮,৩০০ টিকিট, যা দ্রুতই 'সোল্ড আউট' হয়ে যায়। অনেকে দীর্ঘক্ষণ অনলাইনে অপেক্ষা করেও টিকিট পাননি। তাই যারা গ্যালারিতে জায়গা পেয়েছেন, তাদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। সকাল থেকেই জাতীয় পতাকা হাতে, দলের জার্সি গায়ে, নানা প্ল্যাকার্ড-ব্যানারে সজ্জিত হয়ে ভক্তরা ভিড় করতে থাকেন গুলিস্তান মোড় ও স্টেডিয়াম চত্বরে।

বেলা দুইটায় গেট খোলার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের বেশ কিছু পর সীমিতভাবে চালু হয়। তবে অনেক আগেই জমে ওঠে গ্যালারির বাইরের পরিবেশ। স্টেডিয়ামের ৩৬ হাজার আসনের চারপাশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে সমর্থকদের ঢল।

এক তরুণ ভক্ত হামজা চৌধুরীর স্টাইল অনুকরণ করে মাথার চুল কেটে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। কেউ আবার হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে এসেছেন, যাতে লেখা, ‘হামজা-শমিত-ফাহমিদুলের ঠিকানা; পদ্মা মেঘনা যমুনা।’ আরেকটি প্ল্যাকার্ডে ফুটে উঠেছে আকুল আকাঙ্ক্ষা: ‘কোটি মানুষের প্রাণের সুর; বাংলার ফুটবল ফিরে আসুক।’

খেলার অনেক আগে থেকেই গেট খুললেও সন্ধ্যা ৫টার পর আর কাউকে স্টেডিয়ামে ঢুকতে দেওয়া হবে না নিরাপত্তা ও আয়োজনে শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে। তাই আগেভাগেই প্রবেশের জন্য প্রতিটি গেটে লম্বা সারিতে অপেক্ষা করছেন ফুটবলপ্রেমীরা।

যারা মাঠে খেলা দেখতে পারছেন না, তাদের জন্য থাকছে বড় পর্দায় খেলা উপভোগের সুযোগ। টি স্পোর্টস জানিয়েছে, ঢাকার রবীন্দ্র সরোবর, চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম, ময়মনসিংহ ও রংপুর জেলা পরিষদ চত্বর, রাজশাহীর নানকিং বাজার, সিলেটের জিরো পয়েন্ট, খুলনার শিববাড়ি মোড় ও বরিশালের বেল’স পার্কে বড় পর্দায় ম্যাচ দেখানো হবে।

এছাড়া রূপনগর-পল্লবী এলাকার ১২টি স্থানে বড় পর্দায় খেলা দেখার উদ্যোগ নিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক। এসব স্থানের মধ্যে রয়েছে ঘরোয়া মোড়, দোরেন মোড়, শহীদ আসিফ চত্বর, মুসলিম বাজার ঈদগাহ মাঠ, শহীদ জিয়া মহিলা কলেজ মোড়সহ আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা।

সৌদি আরবে ২০২৭ সালে বসবে এশিয়ান কাপের ১৯তম আসর। ২৪ দল নিয়ে আয়োজিত সেই প্রতিযোগিতায় জায়গা করে নিতে আজকের ম্যাচ বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জয় দিয়ে বাছাইপর্ব শুরু করার স্বপ্ন দেখছে পুরো দেশ।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি

‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে ‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।

এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আরো পড়ুন:

‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’

‎বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন

‎জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।

‎তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।

‎কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।

‎পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”

‎গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”

‎অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, ‎যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”

ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ